Advertisement
E-Paper

ফের আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগ রাজ্যে, সচেতন থাকতে কী করবেন?

এমনই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা তথা এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রবীণ মহিলা গ্রাহক ও তাঁর ছেলে। সোমবার ওই ব্যক্তি অ্যাকাউন্টের তথ্য দেখতে গিয়ে তাজ্জব বনে যান।

An image of Finger Print

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৭
Share
Save

প্রায় প্রত্যেক দিন আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য (এ ক্ষেত্রে মূলত আঙুলের ছাপ) হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে রাজ্যে। বিশেষ করে এমন সব প্রবীণ মানুষের আঙুলের ছাপ জাল করে প্রতারকেরা তাঁদের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করে নিচ্ছে, যাঁরা কার্যত বাড়ির বাইরেই বেরোন না। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের পরামর্শ, আধার গ্রাহকেরা তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য আপাতত বন্ধ (লক) করে রাখুন।

সম্প্রতি এমনই ভয়ানক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা তথা এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রবীণ মহিলা গ্রাহক ও তাঁর ছেলে। ওই ব্যাঙ্কে তাঁদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তি নেট ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় অ্যাকাউন্টের তথ্য দেখতে গিয়ে তাজ্জব বনে যান। দেখেন, মাত্র কয়েক’শ টাকা সেখানে পড়ে রয়েছে। আর গত ১ সেপ্টেম্বর সেখান থেকে ‘আধার এনেব্লবড পেমেন্ট সার্ভিস’ (এইপিএস) পদ্ধতিতে ১০,০০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল ফোনে কোনও এসএমএস আসেনি। তাঁর দাবি, তাঁর মা পারতপক্ষে বাড়ির বাইরে বেরোন না। গত বছরে একবার সম্পত্তির ‘রেজিস্ট্রেশনে’র জন্য কলকাতায় সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারি দফতরে এসেছিলেন। তখন তাঁর আঙুলের ছাপ দিতে হয়েছিল। এ ছাড়া, রেশন নেওয়ার সময়ও তার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু কোনও দিন এইপিএস পরিষেবার সুবিধা নেননি।

তা হলে কী ভাবে খোয়া যাচ্ছে টাকা? জবাব মিলছে না আধার কর্তৃপক্ষ, ব্যাঙ্ক বা প্রশাসন, কোনও পক্ষের কাছ থেকেই। আর্থিক পরিষেবা প্রান্তিক মানুষের কাছে আরও সহজে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এইপিএস ব্যবস্থা চালু করেছিল ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশনের (এনপিসিআই)। সেটির ভিত্তিতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, পেমেন্টস ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বহু গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র এই পরিষেবা দেয়। এতে টাকা জমা-তোলা, এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানো কিংবা অ্যাকাউন্টে জমা টাকার খোঁজও করা যায়।

অতিমারির সময়ে ডাক বিভাগ ও ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্ক (আইপিপিবি) বিশেষ করে প্রান্তিক এলাকায় ডাকঘরের কর্মীদের মাধ্যমে বহু মানুষের কাছে এই পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে। আইপিপিবি সূত্রের দাবি, তাদের এইপিএস পরিষেবায় এখনও এমন অভিযোগ ওঠেনি। বরং কাঁথি, ঝাড়গ্রামের মতো জায়গায় এই পরিষেবা যথেষ্ট জনপ্রিয়। ডাকঘরে এই সুবিধা নিতে হলে গ্রাহক নিজে এসে বায়োমেট্রিক তথ্য না দিলে লেনদেনই হবে না।

পাশাপাশি ডাক কর্মীরা বাড়িতে গিয়েও এই পরিষেবা দেন। সে ক্ষেত্রে তিনটি সুরক্ষা কবচ রয়েছে। ডাক কর্মীদের যে মোবাইল ফোন (স্মার্টফোন) দেওয়া হয়, তাতে নির্দিষ্ট সিম ভরে দেওয়া হয়। সেটি ছাড়া অন্য কোনও সিম সেটায় চলে না। ডাক পরিষেবার অ্যাপ-ও ভরা থাকে। অন্য কোনও অ্যাপ গুগ্‌ল প্লে স্টোর থেকে নামানো যায় না। প্রতি দিন কাজ শুরুর আগে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ডাক কর্মীকে মোবাইলে তাঁর বায়োমেট্রিক তথ্য ভরে যাচাই করতে হয়। তারপরে তিনি অন্য কোনও গ্রাহকের লেনদেন শুরু করতে পারেন। এরপর যে গ্রাহক লেনদেন করবেন, তাঁকে সেই ফোনেই তাঁর বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হয়।

আইপিপিবি সূত্রের দাবি, অর্থাৎ, ওই ফোনের মাধ্যমে এই প্রতারণা ঘটলে তা চিহ্নিত করা সম্ভব। তাদের পরামর্শ, অন্য ব্যাঙ্কের কোনও গ্রাহকের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলে তাঁকে ব্যাঙ্কে আগে অভিযোগ জানাতে হবে। তাঁর ব্যাঙ্ক আইপিপিবি বা ডাক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Biometric Aadhaar Cards

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}