প্রতীকী ছবি।
দিন আটেক আগেই আশঙ্কার কথাটি পেড়েছিলেন কেভিন হ্যাসেট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর্থিক উপদেষ্টা। বলেছিলেন, করোনার জেরে মার্কিন মুলুকে বেকারত্বের হার পাল্লা দেবে গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকের মহামন্দার (গ্রেট ডিপ্রেশন) সময়ের সঙ্গে। সেই ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ প্রায় অক্ষরে-অক্ষরে ফলে গেল ভারতের ক্ষেত্রেও!
উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ২৭.১১%। আগের সপ্তাহে ছিল ২১.০৫%। লকডাউন শুরুর পরেও সর্বোচ্চ। পুরো মাস দেশের ঘরবন্দি দশার খেসারত গুনে এপ্রিলে বেকারত্ব পৌঁছেছে ২৩.৫২ শতাংশে। ফেব্রুয়ারি তো বটেই, মার্চেরও প্রায় তিন গুণ।
মহামন্দার সময়ে ১৯৩৩ সাল নাগাদ আমেরিকায় বেকারত্ব ছিল প্রায় ২৫%। অর্থাৎ, প্রতি চার জনে এক জন কর্মহীন। সিএমআইই-র তথ্য বলছে, ভারতের ছবিও প্রায় এক।
যে দেশে প্রায় ৯০% কর্মী অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত, সেখানে দেড় মাস আর্থিক কর্মকাণ্ড কার্যত বন্ধ থাকলে, কাজ হারানো মানুষের সংখ্যা বাড়াই স্বাভাবিক। লকডাউনে যে ভাবে কাজ খুইয়ে পরিযায়ী শ্রমিকেরা পথে নেমেছিলেন বা রোজগার গিয়েছে ঠিকা কর্মীদের, তাতে বেহাল দশার আঁচ মিলছিল। তবু এই পরিসংখ্যানে আশঙ্কা বাড়ছে বেশ কিছু কারণে।
প্রথমত, ২৬ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে বেকারত্বের হার আগের সপ্তাহের (২৬.১৯%) থেকে কমে হয়েছিল ২১.০৫%। ২০ এপ্রিলের পর থেকে ‘করোনামুক্ত’ অঞ্চলে ধাপে ধাপে আর্থিক কর্মকাণ্ড চালুর লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছিল কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞেরা তখনই বলেছিলেন, “(২২ মার্চ-১৯ এপ্রিল) প্রায় সব কারখানা বন্ধ থাকায় যাঁরা কাজ নেই বলছিলেন, এ বার তা খোলার আশায় কাজ ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় অনেকে। এঁদের অনেকেই তাই নিজেকে কর্মহীন ভাবছেন না। কিন্তু সেই কাজ তাঁরা ফিরে না-পেলে, পরিসংখ্যান ফের খারাপ হতে পারে।” ফলে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি অধিকাংশই তা ফিরে পেলেন না? নাকি খোলেনি কারখানাই? ফসল কাটার মতো কাজই বা দেওয়া গেল কতটুকু?
দ্বিতীয়ত, ২২ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে কর্মক্ষমদের মধ্যে কাজ করছিলেন বা খুঁজছিলেন ৪২.৬%। ২৬ এপ্রিল সপ্তাহে তা হয় ৩৫.৪%। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ছিল, লকডাউনে কাজ খোঁজা থেকে অনেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ায় ওই সময়ে কমেছিল বেকারত্ব। ৩ মে সপ্তাহে সেই সংখ্যা (কর্মী ও কাজের খোঁজ মিলিয়ে ৩৬.২%) মুখ তুলতেই তা বেড়েছে।
তৃতীয়ত, লকডাউনের আগে দেশে বেকারত্ব ছিল ৮.৪১%। দেড় মাসে তা পৌঁছেছে ২৭.১১ শতাংশে। অনেকের আশঙ্কা, কাজ হারানোর আসল ধাক্কা টের পাওয়া যাবে কারখানা খুললে। তখন অসংগঠিতের পাশাপাশি ছাঁটাই হতে পারে সংগঠিত ক্ষেত্রেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy