ফাইল চিত্র।
চাহিদা ঝিমিয়ে থাকায় দেশে নাগাড়ে কমছে গাড়ি বিক্রি। পরিস্থিতি এমনই চলতে থাকলে আগামী দিনে ১০ লক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা করছে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থাগুলি। উদ্বেগ বুকে নিয়ে এখন তাদের চোখ গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম জুলাইয়ে বিক্রির কী হিসেব দেয়, সে দিকে। যা প্রকাশিত হবে আগামী কাল। বিভিন্ন সংস্থা অবশ্য আলাদা আলাদা ভাবে ওই মাসে বিক্রিবাটা নিয়ে হতাশার ছবিই দেখিয়েছে। তবু সিয়ামের বার্তায় শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায় কিনা, চাতক পাখির মতো এখন সেই অপেক্ষাতেই প্রহর গুনছে গাড়ির যন্ত্রাংশ শিল্প। বিশেষত রবিবার যেখানে সংবাদ মাধ্যমের একাংশের খবর, ঝাড়খণ্ডে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানার এক কর্মী সম্প্রতি গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
খবর অনুযায়ী, ওই সংস্থাটি টাটা মোটরসকে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে। যেটুকু জানা গিয়েছে তাতে প্রকাশ, প্রভাত নাথ নামের ২০ বছরের ওই যুবক ছিলেন সংস্থাটির অটো রিকশ চালক। কিন্তু মাস খানেক আগে ছাঁটাই হন কাজ থেকে। জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই নানা পারিবারিক সমস্যা চলছিল তাঁর। ভুগছিলেন অবসাদে। প্রভাতের আত্মীয়দের দাবি, আগেও দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে তাঁদের অনেকের অভিযোগ, কফিনে শেষ পেরেক গেঁথে দেয় যন্ত্রাংশ সংস্থাটি থেকে কাজ হারানো। যা গাড়ি বিক্রি তলানিতে ঠেকার পরে ধাক্কা খাওয়া যন্ত্রাংশ শিল্পে চাকরি ছাঁটাইয়ের অঙ্গ। সংবাদ মাধ্যমের খবর, ওই সংস্থাটি এ বছর তিন দফায় কারখানা বন্ধ রেখেছিল। প্রভাত-সহ অনেককে ছাঁটাই করে তারা। আত্মীয়দের একাংশ অবশ্য বলছেন, কাজ হারানো তাঁর আত্মহত্যার একমাত্র কারণ নয়।
গাড়ির যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলির সংগঠন অ্যাকমার দাবি, গাড়ি শিল্পের উপর ভর করে বেড়ে ওঠে তারা। বিভিন্ন গাড়ি সংস্থা ১৫-২০ শতাংশ উৎপাদন কমানোয় তাই এই বিপদ। বেশ কিছু গাড়ি সংস্থা উৎপাদন সাময়িক বন্ধ রাখছে। একই পথে হাঁটছে বশের মতো সহযোগী যন্ত্রাংশ সংস্থাও। অ্যাকমার প্রেসিডেন্ট রাম বেঙ্কটরামানির আশঙ্কা, এই পরিস্থিতি চললে কাজ হারাতে পারেন ১০ লক্ষ মানুষ। হিসেব বলছে, এই মুহূর্তে শুধু গাড়ির যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলিতেই কাজ করেন প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মী।
বেঙ্কটরামানি বলেন, ‘‘বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ নির্মাতাই সঙ্কট জুঝতে কাজের দিন কমাচ্ছে। চাকরিও গিয়েছে অনেকের। তবে সেটা যতটা সম্ভব কম করার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, একবার হারালে ফের দক্ষ কর্মীদের ফিরে পাওয়া মুশকিল।’’
বেহাল
• প্রতি মাসেই কমছে গাড়ি বিক্রি।
• যাত্রী গাড়ি বিক্রি পড়ছে টানা প্রায় এক বছর।
• চাহিদার অভাবে উৎপাদন কমাচ্ছে সংস্থাগুলি।
• মাঝে মধ্যেই কারখানা বন্ধও রাখছে।
কাজে কোপ
• ৩.৫ লক্ষের বেশি মানুষ কাজ খুইয়েছেন।
• ২.৫ লক্ষ ডিলারদের কর্মী। যন্ত্রাংশ শিল্পে ১ লক্ষ। গাড়ি সংস্থাগুলিতে অন্তত ১৫ হাজার।
কাজ হারানো রুখতে এর আগেই পুরো গাড়ি শিল্পের জন্য জিএসটি কমিয়ে ১৮ শতাংশে বাঁধার আর্জি জানিয়েছে অ্যাকমা। দাবি করেছে, কর কমলে চাহিদাও বাড়বে। ঘুরে দাঁড়াবে শিল্প। চাকরি বাঁচবে বহু মানুষের। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৈঠকেও তারা এই দাবি তুলেছে। আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প চেয়ে সওয়াল করেছে গাড়ি শিল্পের তিন সংগঠনই— সিয়াম, অ্যাকমা ও ফাডা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy