কোনও মানুষের শারীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়াগুলির নেপথ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হৃদযন্ত্র। হৃদযন্ত্রে বাঁম নিলয় ও মহাধমনীর পথে রয়েছে একমুখী অ্যাওর্টিক ভালভ। যেটি খুলে গিয়ে হৃদযন্ত্রের অ্যাওর্টায় রক্ত প্রবাহ সচল রাখে। যার মাধ্যমে সারা শরীরে রক্ত সরবারহ হয়। হৃদযন্ত্র প্রসারিত হলে এই অ্যাওর্টিক ভালভ বন্ধ হয়ে যায় এবং হৃদযন্ত্রের সংকোচনের সময় অ্যাওর্টিক ভালভ খুলে যায়। বয়স বাড়তে থাকলে হৃদযন্ত্রের এই ভালভে বেশ কয়েকটি জটিল সমস্যা দেখা দেয়। যেমন ক্যালসিয়াম জমে যাওয়া, ভালভ সংকোচন-প্রসারণে সমস্যা, ভালভ-এর পর্দা মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। ধীরে ধীরে অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
একটা সময় পর্যন্ত প্রথাগত সার্জারির মাধ্যমেই এই অস্ত্রোপচার করা হত। তবে সময় বদলেছে। প্রযুক্তির হাত ধরে বদলে গিয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করে তুলতে আবিষ্কার হয়েছে যুগান্তকারী ট্রান্সক্যাথেটার অ্যাওর্টিক ভালভ ইমপ্লান্টেশন বা ট্যাভি (টিএভিআই) পদ্ধতির। এই বিকল্প পদ্ধতিটি আসলে কী? হৃদযন্ত্রকে উন্মুক্ত না করেও কী ভাবে এই অস্ত্রোপচার করা হয়? অতিরিক্ত কী কী সুবিধা পান রোগীরা? এই সব প্রশ্ন নিয়ে আলোচনায় অ্যাপোলো হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বিকাশ মজুমদার।
চিকিৎসক বিকাশ মজুমদার জানাচ্ছেন, ‘সার্জিক্যাল অ্যাওর্টিক ভালভ ইমপ্লান্টেশনের বিকল্প এই পদ্ধতি ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার শিখর ছুঁয়েছে। কুঁচকির কাছে ছোট্ট ফুটো করে সেই পথে অ্যাওর্টিক ভালভটি ক্যাথেটারের সাহায্যে হার্টে বসিয়ে দেওয়া হয়।’
এই ধরনের পদ্ধতিতে কী কী সুবিধা রয়েছে? উত্তরে চিকিৎসক বিকাশ মজুমদার জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতির সুবিধা অনেক। এক্ষেত্রে রোগীর দেহে বড় কোনও শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। বুক কাটতে হয় না। অ্যানেস্থেশিয়া দিতে হয় না। খুব কম দিন হাসপাতালে থাকতে হয় রোগীকে।
বলা বাহুল্য, এই পদ্ধতিতে স্বল্প ঝুঁকি নিয়েই বহু বয়স্ক মানুষ ফের সহজভাবে জীবন কাটাতে সক্ষম হচ্ছেন। যার ফলে চিকিৎসা পদ্ধতির উপরে সিংহভাগ রোগী ভরসা রাখছেন। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, মূলত উচ্চ ঝুঁকির রোগীদের ক্ষেত্রে প্রথাগত সার্জারির তুলনায় ট্যাভির দিকে সবাই ঝুঁকছেন কারণ এর ফলাফল দারুণ ভাল। এমনকী মাঝারি ও কম ঝুঁকির রোগীদের ক্ষেত্রেও শল্য চিকিৎসা ও ট্যাভির তুল্যমূল্য বিচারে দেখা গেছে দু’টি ক্ষেত্রেই ফলাফল একই রকম। বরং ট্যাভির ক্ষেত্রে অনেকগুলি অতিরিক্ত সুবিধা তো রয়েছেই।
তবে এই ধরনের চিকিৎসার পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাধ্যতামূলক। সেক্ষেত্রে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালের হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকেরা সর্বদাই আপনাকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত।
এই প্রতিবেদনটি ‘অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy