জীবনের পরিপূর্ণ দিক নির্দেশনা পেতে হলে চক্রের ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক
আমাদের সূক্ষ্ম শরীরে মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান-সহ বিভিন্ন চক্রগুলি হল আত্মার ‘অ্যানাটমি’। গত পর্বে আপনাদের জানিয়েছিলাম, মানবদেহে বিভিন্ন শিরা উপশিরা ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলির মধ্যে সমন্নয় রক্ষা করে এমন ১১৪টি স্নায়ুসন্ধিতে ১১৪টি শক্তি কেন্দ্র বা চক্র রয়েছে যার মাধ্যমে জগতের শক্তি মানব দেহে সঞ্চালিত হয়। এই ১১৪টি চক্রের মধ্যে আবার মূল চক্র ৭টি। জীবনের পরিপূর্ণ দিক নির্দেশনা পেতে হলে এই চক্রগুলির ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক। আমাদের প্রত্যেকের শরীরের সব চক্রগুলি একই ভাবে খোলা থাকে না। কারও কোনও চক্র খোলা থাকে, আবার অনেকেরই কোনও একটি বা একাধিক চক্র ব্লক থাকে। এই ৭টি চক্র আমাদের জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে সেই আলোচনা প্রসঙ্গে মূলাধার চক্র, স্বাধিষ্ঠান চক্র এবং মণিপুর চক্র সম্পর্কে গত পর্বে আপনাদের জানিয়েছিলাম। বাকি ৪টি চক্র সম্বন্ধে আজকের পর্বে আপনাদের জানাবো।
শক্তি চক্র-গ্রহ-বাস্তু ও তার প্রভাব:
হার্ট চক্র: চার নম্বর চক্র অনাহত চক্র বা হার্ট চক্র চন্দ্র গ্রহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ঠিক বুকের মধ্যদেশে অবস্থিত এই চক্রটি বাড়ির উত্তর-পশ্চিম দিককে নিয়ন্ত্রণ করে। কোনও ব্যক্তির জন্ম রাশিচক্রে চন্দ্র নেতিবাচক হলে বা বাড়ির উত্তর-পশ্চিম অংশ ত্রুটিযুক্ত হলে হার্ট চক্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি অসহিষ্ণু, পরনির্ভরশীল, হিংসুটে প্রকৃতির হয়ে ওঠে। অপরকে বিশ্বাস করতে ভয় পায়, কখনও কখনও অতিমাত্রায় আত্মত্যাগী হয়ে ওঠে। নিজেকে বিলিয়ে দিতেও পিছপা হয় না। অধিকাংশ বাড়িতেই এখন নানান মানসিক অশান্তি। স্বামী-স্ত্রী, শাশুড়ি-বৌমা, অভিভাবক-সন্তান অথবা ভাই-বোন যে কোনও সম্পর্কে যখন অশান্তি, মানসিক দূষণ ছায়া ফেলে বুঝতে হবে কোনও না কোনওভাবে হার্ট চক্র বা অনাহত চক্র ব্লক হয়েছে। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি, বাইরে থেকে দুঃখের বা দুর্ভাগ্যের যত ব্লক আসে তার থেকে অনেকগুণ বেশী ব্লক আমরা নিজেরা আমাদের শরীরের মধ্যেই তৈরি করে ফেলি। সবার আগে এই ব্লক তৈরি হয় আমাদের হার্ট চক্র বা অনাহত চক্রে। (চক্রের রং: সবুজ)
থ্রোট চক্র: কণ্ঠে অবস্থিত থ্রোট চক্র বা বিশুদ্ধ চক্র নিয়ন্ত্রণ করে বুধ এবং বাড়ির উত্তর দিক। এই চক্র অবরুদ্ধ হলে সেই ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশ করতে পারে না, কথা শোনার ধৈর্য্য থাকে না, পরনিন্দা-পরচর্চা করতে পছন্দ করে, ভুল বোঝে, চিৎকার করে, অপশব্দ প্রয়োগ করে। জন্মছকে বুধ গ্রহ নেতিবাচক হলে বা বাড়ির উত্তর দিকে বাস্তুদোষ তৈরি হলে থ্রোট চক্র অবরুদ্ধ হয়। যে মেন্টাল ব্লকেজের কথা উল্লেখ করেছি (অনাহত চক্রে তৈরি হওয়া ব্লক) সেই মেন্টাল ব্লকেজ পরিশুদ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে থ্রোট চক্র বা বিশুদ্ধ চক্রের। আমাদের মন খারাপ হলে, আমরা বিভিন্ন খাদ্য বা পানীয়ে (চকোলেট-জাঙ্ক ফুড-নরম পানীয় ইত্যাদি) মন ভালো করার চেষ্টা করি। পছন্দের খাদ্যগুলি যখন জিহ্বা দিয়ে গলা হয়ে উদরে প্রবেশ করে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনটা ভালো হয়ে যায়। কিন্তু এই বিশুদ্ধ চক্রেও পূর্বস্মৃতি আটকে থেকে ব্লকেজ তৈরি হয়। কমপক্ষে শেষ ১০-১২ বছরের স্মৃতির এনার্জি আটকে থাকে বিশুদ্ধ চক্রে। যে কারণে মানুষ যখন টেনশনে থাকে-ভয় পায়, তখন গলা শুকিয়ে যায়। বেশি বেশি করে ব্লকেজ তৈরি হয়। গুডলাক থেকে ব্যাডলাক আসে। (চক্রের রং : আকাশী)
থার্ড আই চক্র: দু’টি ভ্রু-এর মধ্যে অবস্থিত ছয় নম্বর চক্রটি হল থার্ড আই চক্র বা আজ্ঞা চক্র। বাস্তু মতে এই চক্রের দিক হল বাড়ির পশ্চিম দিক, নিয়ন্ত্রণকারী গ্রহ শনি। আজ্ঞা চক্র অবরুদ্ধ হলে ব্যক্তির দূরদর্শিতা চলে যায়, মনোসংযোগ করতে পারে না, দুঃস্বপ্ন দেখে, দৃষ্টিভ্রম তৈরি হয়। বিচারক্ষমতা লোপ পায়। আমাদের মস্তিষ্ক যা চিন্তা করে, জিহ্বার দ্বারা তা প্রকাশ পায়। ব্রেন টু মাউথ এই ভাবেই মানসিক দূষণও প্রবাহিত হয়। দেহের অভ্যন্তরে তৈরি হওয়া ব্লকেজ বা স্মৃতির ভার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আজ্ঞাচক্র। এই চক্রটি ভারসাম্য হারালে, বিশুদ্ধ চক্রও প্রভাবিত হয় এবং সেই প্রভাব কোনও না কোনওভাবে অনাহত চক্রেও পড়ে। (চক্রের রং: নীল)
ক্রাউন চক্র: সাত নম্বর চক্র ক্রাউন বা সহস্রার চক্র। বৃহস্পতি গ্রহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই চক্রের অবস্থান মাথার উপর। বাস্তু মতে উত্তর-পূর্ব দিক এবং বাড়ির মধ্যস্থান ক্রাউন চক্রকে প্রভাবিত করে। ক্রাউন চক্র অবরুদ্ধ হলে মানুষ অবসাদের শিকার হয়, আসক্তি তৈরি হয়, ছটফট করতে থাকে, অতিমাত্রায় ধর্মভীরু এবং গোঁড়া হয়। অধিক মাত্রায় বিচারপ্রবণতা বা নাস্তিকতা তৈরি হয়। এঁরা যাদেরকে বিশ্বাস করে, তারাই এদের ক্ষতি করে। ক্রাউন চক্র বা সহস্রার চক্রে ঈশ্বরের বসবাস। মানুষের জীবনে যখন বড় কোনও বিপর্যয় আসে, চাকরি চলে যায়, প্রমোশন হয় না, বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়, প্রিয়জন কেউ পাস থেকে সরে যান, মৃত্যু কাউকে ছিনিয়ে নেয়..... প্রচণ্ড কষ্টের সেই সময়গুলোতে, বিধ্বংসী ঝড়ের সেই রাতগুলিতে সাহারা দেন একমাত্র ঈশ্বর। এমনটা বলছি না যে আমাদের কষ্টের সময়ে অন্য কেউ আমাদের পাশে থাকেন না, তবে অধিকাংশ সময়েই পাশে থাকাটা হয় ছদ্ম-পাশে থাকা। প্রকৃতপক্ষে সাহারা দেন একমাত্র পরমেশ্বর। ঈশ্বরের অনুকম্পা লাভ করলে কোনও ব্লকেজ আমাদের স্পর্শ করতে পারে না। কিন্তু সহস্রার চক্র ভারসাম্য হারালে বা অবরুদ্ধ হলে আমরা ঈশ্বরের অনুকম্পা লাভে বঞ্চিত হই। (চক্রের রং : বেগুনি )
এভাবেই এক বা একাধিক চক্রের ভারসাম্য নষ্ট হলে মানব জীবনে তার কু-প্রভাব পড়ে। ৭টি চক্রের সঙ্গে যেমন বাস্তু এবং গ্রহের সংযোগ রয়েছে, তেমনই আমাদের ইংরেজি সম্পূর্ণ জন্মতারিখ অনুসারে বিভিন্ন সংখ্যার অনুপস্থিতি বা আধিক্যও শক্তি চক্রকে প্রভাবিত করে।
এ বিষয়ে আরও তথ্য পেতে আপনারা ফেসবুকে SRI MONI BHASKAR পেজ এবং ইউটউবে DREAM DESTINY চ্যানেলটি ফলো করতে পারেন। পাশাপাশি এই সমস্যায় প্রয়োজনে জ্যোতিষীয় এবং বাস্তুগত পরামর্শও নিতে পারেন। অনেক সময় Symbol Meditation-ও (প্রয়োজনে নির্দিষ্ট মুদ্রা সহযোগে) আপনাদের সহায়ক হতে পারে।
Guided Symbol Meditation এবং বাস্তু বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545 / 98306 83986 (Payable & Non-Refundable).
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy