Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হাসিনা সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র? ইজরায়েলের গতিবিধি কিন্তু সন্দেহজনক

বাংলাদেশে নজর ইজরায়েলের। কাছে আসতে চাইছে। ব্যবধান টপকাতে সাঁকো খুঁজছে। কাজটা কঠিন শুধু নয়, অসম্ভব জেনে খড়কুটো পেলেও ছাড়ছে না। আঁকড়ে ধরছে। ধারণা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সবচেয়ে বড় বাধা।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ১৫:২৮
Share: Save:

বাংলাদেশে নজর ইজরায়েলের। কাছে আসতে চাইছে। ব্যবধান টপকাতে সাঁকো খুঁজছে। কাজটা কঠিন শুধু নয়, অসম্ভব জেনে খড়কুটো পেলেও ছাড়ছে না। আঁকড়ে ধরছে। ধারণা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সবচেয়ে বড় বাধা। তাঁকে সরালে রাস্তা খুলবে। ভাবনায় ভুল। হাসিনার দুরন্ত উন্নয়ন অভিযান খরস্রোতা নদীর মতো বইছে। সেখানে ইটপাটকেল পাথর ছুড়ে আটকানো যায় কখনও? হবে না। সব ডুববে। মাঝখান থেকে দূরত্ব বাড়বে। বাংলাদেশের বন্ধুত্ব পেতে নিজেদের বদলাতে হবে। ইজরায়েলের মানবতা বিরোধী কাজ হাসিনা সরকার কেন, কোনও রাজনৈতিক দলই সমর্থন করে না। দু’দেশের দূরত্ব সে কারণেই। কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। যাতায়াত স্থগিত।

ইজরায়েলের শাসক দল লিক্যুদ পার্টির সদস্য, সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান মেন্দি এন সাফাদি ভারতে দেখা করেছেন বিএনপির নতুন যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে। কথা বলেছেন। অভিযোগ, ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে দিয়ে হাসিনা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র। আসলাম, সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা স্বীকার করলেও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মানেননি। বিএনপির দাবি, এটা আসলামের ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার। এর সঙ্গে দলের যোগ নেই।

এটা পরিষ্কার, সাফাদি যে ভারত সফর করছেন আসলাম চৌধুরী তা জানতেন। তাঁর সঙ্গে আগে যোগাযোগ করে বৈঠকের ব্যবস্থা হয়। যাদের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক নেই তাদের প্রতি আসলামের কীসের এত টান যে ডাকলেই ছুটে যেতে হবে। আসলামকে গ্রেফতার করে, রাষ্ট্রদোহিতার চার্জ আনা হচ্ছে।

প্যালেস্তাইন উদ্বিগ্ন। ঢাকায় প্যালেস্তাইনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউসেফ এস ওয়াই রামাদানের দাবি, ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের কথা প্যালেস্তাইনের গোয়েন্দা সংস্থা জানত। বাংলাদেশের মানুষ প্যালেস্তাইনের পক্ষে, ইজরায়েলের বিপক্ষে। ইজরায়েলের সঙ্গে বৈঠক, বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বার্থে ইজরায়েলকে সুবিধে দেওয়ার আশ্বাসে প্যালেস্তাইন বিস্মিত। প্যালেস্তাইনের ধারণাটাও ভুল।

প্যালেস্তাইনের মুক্তিকামী মানুষের পাশে যে বাংলাদেশ, ইজরায়েল তা জানে। সেটা ভেঙে তারা মাথা গলাতে চাইছে। ১৯৪৮-এর ১৪ মে সরকারি ভাবে ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আরব-ইজরায়েল সংঘাতের শুরু। ইজরায়েলের সব থেকে বেশি আক্রমণ প্যালেস্তিনীয়দের ওপর। বিশেষ করে গাজা স্ট্রিপ, ওয়েস্টব্যাঙ্কে বোমা বর্ষণ করে যেভাবে প্যালেস্তাইনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা হয়েছে দেখলে শিউরে উঠতে হয়। নিশানায় নারী, শিশুও বাদ যায়নি। ২০১৩র জুলাইতে প্যালেস্তাইনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করে ইজরায়েল। ২০১৪তে ভেস্তে যায়। ইজরায়েল ফের বোমাবর্ষণ করে গাজায়। নতুন করে চলে মৃত্যুর মিছিল। এর আগে ২০০৩এ আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাষ্ট্রপুঞ্জ, রাশিয়া শান্তি স্থাপনের প্রয়াস চালিয়েও সফল হয়নি।

এ অবস্থায় সমর্থক দেশের সংখ্যা বাড়িয়ে ইজরায়েল নিজেদের কাজকে বৈধতা দিতে চাইছে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানোটাও লক্ষ্য। আসলাম চৌধুরীর মতো উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতাকে হাতে পেয়েই তারা কৃতার্থ। ভাবছে ছুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোবে। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে সামান্যতম ধারণা থাকলে ইজরায়েলের রাষ্ট্রপতি রেউভেন রিভালন, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানেয়াহু সতর্ক হতেন, এ সব খেলায় মাততেন না।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে পাকিস্তান?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE