নিরাপদে নববর্ষ কেটে যাওয়ার পরেও বাংলাদেশে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া দু’টি সিদ্ধান্ত। সরকারের ভেতরে-বাইরে এই দুই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তৈরি হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের চত্বরে গ্রিক ভাস্কর্য ‘থেমিস’-এর অনুকরণে একটি ভাস্কর্য বসানোর পর থেকেই মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামি তা সরানোর দাবি জানাচ্ছে। তাদের দাবি, এই ‘মূর্তি’ ইসলাম-বিরোধী। ঢাকায় মিছিল করে হেফাজতিরা হুমকি দিয়েছে, সরকার দাবি না-মানলে তারাই এটা ভেঙে দেবে। এর আগে বিমানবন্দরের সামনে বাউলের একটি ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দিয়েছে এই মৌলবাদীরা।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এর আগে বলেন, ‘‘মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। হেফাজতের দাবি এতটুকু গুরুত্ব পেলে, দেশের সব ভাস্কর্য ভাঙার দাবি উঠবে।’’ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর বলেছিলেন, ‘‘এটা ইসলামি রিপাবলিক নয়!’’
কিন্তু মঙ্গলবার রাতে বাসভবনে আলেমদের ডেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন, ‘‘আমিও মনে করি মূর্তিটি রাখা অনুচিত।’’ হেফাজতের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘এটা সরাতে যা করার করব। আমার ওপর ভরসা রাখুন।’’
সেই দিনই হাসিনা ঘোষণা করেন, বিতর্কিত কওমি মাদ্রাসাগুলির দেওয়া শংসাপত্র এ বার থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির মর্যাদা পাবে। রবিবার তার গেজেট নোটিফিকেশনও প্রকাশিত হয়েছে। হাসিনার এই সিদ্ধান্তের বিরোধীরা বলছেন, মৌলবাদী ও জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর এই মাদ্রাসাগুলিতে জাতীয় পতাকা তোলা হয় না। পাঠ্যসূচিও বিতর্কিত। তাদের সংশাপত্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ— তাদের ছাত্ররা প্রশাসনে ঢুকে পড়বে। দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে যা ভয়ানক।
শাসক দলের একাংশের দাবি, বিএনপি জোট থেকে হেফাজতকে আলাদা করার জন্য হাসিনা এই চাল চেলেছেন। কিন্তু শরিক দলের মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলছেন, ‘‘তোষণ করলেও মৌলবাদীরা হাসিনাকে ভোট দেবে না। বরং অসাম্প্রদায়িক ভোটাররাই সরে যেতে পারেন।’’ আর এক শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বলেছে, ‘কেউটের লেজ দিয়ে কান চুলকোনোর পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে।’ কলাম লেখক মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন— ‘‘দলের অসাম্প্রদায়িক সমর্থকদের কী হবে?’’ সরব হয়েছেন লেখক ও মুক্তমনা বিশিষ্ট জনেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy