Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bangladesh news

কৃষকদের বাঁচাতে জাপানি নৈপুণ্যে বিশাল শস্যাগার বাংলাদেশের বগুড়ায়

শস্যের স্বাস্থ্যই সম্পদ। ভাল হলে আহ্লাদ। নইলে বিলাপ। কৃষকের স্বপ্ন শেষ মাঠেই। সার, সেচ, কীটনাশক, পরিশ্রমে ফসলের মাথা তোলা। তাও যদি কাজে না লাগে তাহলে। বাজারে কদর কোথায়। খদ্দের মুখ ফেরায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ১৩:৩৫
Share: Save:

শস্যের স্বাস্থ্যই সম্পদ। ভাল হলে আহ্লাদ। নইলে বিলাপ। কৃষকের স্বপ্ন শেষ মাঠেই। সার, সেচ, কীটনাশক, পরিশ্রমে ফসলের মাথা তোলা। তাও যদি কাজে না লাগে তাহলে। বাজারে কদর কোথায়। খদ্দের মুখ ফেরায়। লাভের আশা শূন্যে মেলায়। আবার ভাল ফলনের পরও যদি লোকসানের কড়ি গুনতে হয় তখন। অভাবী বিক্রির চক্রে কৃষকই নাকাল। দোরে দোরে ঘুরেও দাম নেই। চাষের খরচই ওঠে না। দেনার দায়ে মৃত্যু বরণ। বারণ করলে শুনছে কে। বেঁচে কী লাভ। ফসল শুকিয়ে পচে ক্ষেতেই মিশুক। তাতে ঘরে তোলার খরচটা তো বাঁচবে। চাষের টাকা ব্যাঙ্কের হলে কিছুটা স্বস্তি। মহাজনের খপ্পরে পড়লে নিস্তার নেই। এ হেন সমস্যা পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের নানা প্রদেশে যেমন আছে, তেমনি আছে বাংলাদেশেও। কৃষকদের বাঁচাতে সরকার ফসল কেনে। সে আর কতটুকু। সমুদ্রের জায়গায় ক্ষুদ্র পুষ্করিণী। কৃষকের ঋণের কাঁটা উপড়োবে কে।

আলু চাষে এ বার ছিন্নভিন্ন পশ্চিমবঙ্গ। দু'টাকা কিলো আলুও বেচতে নাভিশ্বাস। বাংলাদেশে তেমন কিছু না হলেও হতে কতক্ষণ। অনিশ্চয়তার খাঁড়া মাথায়। আয়-ব্যয়ের হিসেব মিলতেই চায় না। সংরক্ষণই একমাত্র সমাধান। ক্ষেত থেকে তুলেই বিক্রি নয়। ধরে রাখতে হবে। দাম চড়লে তবে বিক্রি। তার আগে নয়। সেখানেও প্রশ্ন ফসল তুলে রাখবে কোথায়। যত্রতত্র ফেলে রাখলে নষ্ট। ধান-চাল তবু কিছু দিন থাকে। শাক-সব্জি তাজা রাখা অসম্ভব। সবুজ থেকে হলদে হতে হতে পচে কালো। চাল-ডাল থেকে সবুজ সব্জি বাঁচানোর ব্যবস্থা। এবার সুলুক সন্ধান দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন: তিস্তা নয়, জল দেব তোর্সার, প্রস্তাব মমতার

বগুড়ার সান্তাহারের তিন কিলোমিটার দক্ষিণে সাইলো ক্যাম্পাসে মাথা তুলেছে বিশাল এয়ারকন্ডিশনড শস্যাগার। যেখানে রাখা যাবে ২৫ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য শস্য। মাসের পর মাস ফেলে রাখলেও নষ্ট হবে না। যারা রাখবে তারা বাজার বুঝে পণ্য বাজারে ছাড়তে পারবে। এখানে সব ধরনের খাদ্যশস্য রাখা যাবে। প্রথম দিকে শুধু চাল মজুত করা হবে। ধীরে ধীরে অন্য পণ্যও ঢুকবে। যত দিন খুশি রাখতে অসুবিধে নেই। একটুও খারাপ হবে না। পুরোন চাল ভাতে বাড়ে। নতুন চালে সেটা হয় না। তাতে মাড় বেশি। একটু ফোটালেই গলে যায়। স্বাদে গন্ধে পিছিয়ে বলে দাম কম। আপাতত শস্যাগারটি তিনতলা। দরকারে আরও উঁচু হতে পারে। যেটুকু হয়েছে সেটা দেখেই চাষিরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। যেটুকু হয়েছে তার খরচ পড়েছে ৩০০ কোটি টাকা। নির্মাণে সাহায্য করেছে জাপান ইন্টারন্যাশানাল কো-অপারেশন বা জাইকো। এটা চলবে সৌরবিদ্যুতে। এর ছাদে শতাধিক সোলার প্যানেল বসান হয়েছে। যা থেকে ৩৬০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তাতেই চলে যাবে। অন্য বিদ্যুৎ লাগবে না। এটা বড় রকমের বৈদ্যুতিক সাশ্রয়।

এমন শস্যাগার আরও হবে। চাষিদের কষ্টের ফসল যাতে জলের দরে বেচে দিতে না হয় সে ব্যাপারে হাসিনা সতর্ক। সরকারের নজর আন্তর্জাতিক কৃষিপণ্য রফতানি বাড়ানোর উপর।

অন্য বিষয়গুলি:

Cold Storage Agriculture Market Price
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE