খালেদা জিয়া। এএফপি-র ফাইল ছবি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া-সহ চার জনের সাত বছর কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ঢাকার আদালত। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা (বাংলাদেশি) জরিমানা এবং অনাদায়ে ছ’মাসের অতিরিক্ত কারাদণ্ডের সাজাও ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ট্রাস্টের নামে কেনা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্র্র বাজেয়াপ্ত করতে পারেও বলে নির্দেশে দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ আদালতের বিচারক আখতারুজ্জামান।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য তিন জন হলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন ব্যক্তিগত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ-র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ দিনের রায়ের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাচন ও রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এই শাস্তির প্রতিবাদে আগামিকাল মঙ্গলবার গোটা দেশে বিক্ষোভ কমসূচির কথা ঘোষণা করেছে বিএনপি।
অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতের বাইরে। ছবি: এএফপি
ঢাকার নয়াপল্টনের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ফখরুল বলেন, ‘‘ফরমায়েশি রায় প্রত্যাখান করছে বিএনপি।’’ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘আপনি তো মহিলা, ২০ নয় হাওড়া যেতে ১০০ টাকা লাগবে’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ‘অবৈধ উৎস থেকে’ অর্থ সংগ্রহ, সুরাইয়া খানম নামের এক জনের কাছে থেকে ৪২ কাঠা জমি কেনায় অনিয়ম এবং ট্রাস্টের নামে জমির নামজারি না করার অভিযোগ আনা হয়েছিল এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছিল, ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, ‘শহিদ জিয়াউর রহমান চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ নামে ওই সংগঠন তৈরি করেন। ওই সময়ে খালেদার সেনানিবাসের বাড়ির ঠিকানাই এই ট্রাস্টের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ট্রাস্টের প্রথম ট্রাস্টি খালেদা জিয়া নিজে ও ট্রাস্টের সদস্য তাঁর দুই ছেলে তারেক এবং আরাফাত রহমান।
আরও পড়ুন: ১৮৯ যাত্রী নিয়ে মাঝ সমুদ্রে ভেঙে পড়ল ইন্দোনেশিয়ার বিমান
অভিযোগে আরও বলা হয়েছিল, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহিদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির প্রকৃত দামের চেয়ে ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা বেশি দেওয়া হয়েছিল জমির মালিককে। সেই সংক্রান্ত কাগজপত্রও দেখানো হয় আদালতে। তবে, সেই টাকার কোনও বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
ওই ট্রাস্টের নামে ৯ জানুয়ারি ২০০৫, তেজগাঁওয়ে সোনালি ব্যাঙ্কের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শাখায় একটি সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট খোলেন খালেদা জিয়া। সেই অ্যাকাউন্ট খোলার পর সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা এবং প্রভাবকে ব্যবহার করে বিভিন্ন অবৈধ উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ ও জমা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন দফতরের কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিএনপির দলীয় তহবিলের টাকা ছাড়া ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়া বাকি টাকার কোনও বৈধ উৎস নেই। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে ওই অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্তরের বাছাই করা ঘটনাগুলো নিয়ে বাংলায় খবর জানতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy