যুগ যুগ ধরে বলা হয়ে থাকে, বিশ্বের সব শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্মের রূপকার স্বর্গের দেবতাদের মধ্যে সেরার সেরা প্রকৌশলী বিশ্বকর্মা ঠাকুর।
দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা বৈদিক শিল্পী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন সেই পৌরাণিক কাল থেকে। পুরাণ আর ঋক বেদ, দুই জায়গাতেই বিশ্বকর্মার জন্ম রহস্য থেকে শুরু করে তাঁর বিশাল শিল্পযজ্ঞের উল্লেখ পাওয়া যায়।
পুরাণে কথিত আছে, দেবগুরু বৃহস্পতির একমাত্র বোন যোগসিদ্ধার পুত্র বিশ্বকর্মা এবং তাঁর বাবা অষ্টম বসুর শ্রেষ্ঠ বসু প্রভাস। আবার ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে বলা আছে, প্রজাপতি ব্রহ্মার নাভিকোষ থেকে বিশ্বকর্মার উৎপত্তি। আরেক মতে, বিশ্বকর্মা ও তাঁর স্ত্রী ঘৃতাচী, দুজনেই শাপভ্রষ্ট হয়ে পৃথিবীতে জন্ম নেন। বিশ্বকর্মা বাস্তুশিল্পীর রূপ পান।
বিশ্বকর্মা ঠাকুর চতুর্ভুজ। গজারুঢ়, অর্থাৎ, তাঁর বাহন হাতি। পুরাণ মতে, বিশ্বকর্মা মহাবীর এবং একইসঙ্গে বিশাল ক্ষমতাশালী ও শক্তিশালী। সেই কারণে তাঁর বাহনকেও অর্থাৎ যে বিশ্বকর্মাকে বহন করবে, তাকেও তেমনই বিরাট ক্ষমতাশালী ও শক্তিশালী হওয়া আবশ্যক। আর পৃথিবীতে হাতির চেয়ে বেশি শক্তিশালী ও ক্ষমতাশালী প্রাণী আর কে আছে? যে জন্য প্রাচীনকালে রাজারা যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করতেন হাতির পিঠে চেপে।
হাতির আবার হাত নেই। শুধু একটি শুঁড়। যেটা দিয়ে হাতি তার জীবন নির্বাহের যাবতীয় কর্ম সম্পাদন করে। শুঁড়ের আরেক নাম, কর। যার জন্য হাতির অন্য নাম, করী। করী-র 'ক' এসেছে 'কৃ' ধাতু থেকে। ধাতু শিল্পকর্মের অন্য তম একটি কাঁচা মাল হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার হাতি শক্তিশালী দেহের পাশাপাশি খুব শান্ত মস্তিষ্কের অধিকারী। যে দুটো গুণ শিল্পকর্মে ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়। শিল্পের রূপকারকে একইসঙ্গে দেহে বলশালী ও মগজে শান্ত হতে হবে। তবেই সে বড় বড় শিল্পকর্ম গড়ে তুলতে পারে।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা এবং তাঁর বাহন হাতি, দুজনের মধ্যেই শিল্পকর্মের দুটো অত্যন্ত আবশ্যক গুণাবলী আছে। তাই বিশ্বকর্মার বাহন হাতি।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy