প্রতীকী চিত্র
চন্দ্রচূড় তর্করত্ন অন্ধ হয়ে গেলেন যেন সে ভীষণ প্রভায়। আঁধারের মধ্যে দৃষ্টি কেবল সদ্যোত্থিত সূর্যরং-এর দেবী! দেবী তাকে আদেশ দিলেন।
সে প্রায় তিনশত বছরের কথা। নদিয়ার শান্তিপুর ব্রহ্মশাসন ভাগীরথীর তীরে নিরিবিলি এক গঞ্জ এবং এটিই অন্তিম স্থল।
নদীকে কেন্দ্র করে ডিহি হরিপুর ছাড়িয়ে ব্রহ্মশাসনে শত ঘর ব্রাহ্মণ ও ঘোষ সম্প্রদায়ের বসবাস। নদিয়ার রাজা, কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পিতা রঘু রায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে এই জনপদ।
ব্রহ্মশাসন মতান্তরে ব্রহ্মশাসনের ব্রাহ্মণ পণ্ডিত চন্দ্রচূড় তর্করত্ন পঞ্চানন মাকে আকুল হয়ে ডাকেন। মায়ের আশীষেই এই শাস্ত্রভূম নদীয়ায় আজ তিনি তর্করত্ন হতে পেরেছেন। এত দিন সাধনা করে চলেছেন কিন্তু তার দর্শন কি পাবেন না?
এক গভীর কালিমালিপ্ত রাতে, গাঢ় সুষুপ্তিতে পন্ডিত শ্রেষ্ঠ চন্দ্রচূড় মায়ের স্বপ্নাদেশ পেলেন। দেবী বললেন, “বেশ, আমার পুজো কর। নিদ্রা ভেঙেই গৃহের দেওয়ালে রবির যে প্রভা প্রতিফলিত হবে, ঐটিই হবে আমার রঙ। সিংহবাহিনী জগদ্ধাত্রী রূপে কল্পনা করিস।”
স্বপ্নাদেশ পালন করে চন্দ্রচূড়, ব্রহ্মশাসনে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করলেন। তারপর থেকেই স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত রূপকল্পে জগদ্ধাত্রী মূর্তি স্থাপন অথবা তন্ত্র যন্ত্রে পুজোর সূচনা হয়। এই বিষয়টি আজও খানিক ধোঁয়াশা। কারণ আরেকটি মতামত পাওয়া যায়, ১৮০২ খ্রিষ্টাব্দে কৃষ্ণচন্দ্রের পুত্র গিরিশচন্দ্র নদিয়ার রাজা হলেন। তখনও অবধি নদীয়ায় ঘটকল্পেই পুজো চলছে। রাজাই ব্রাহ্মণ পণ্ডিতকে মায়ের সাকার রূপের কল্পনা করতে বলেন। ব্রাহ্মণ ব্রহ্মশাসন স্থিত অশ্বত্থ তলে পঞ্চমুণ্ডির আসনে ধ্যানে বসে মায়ের রূপ আজ্ঞা পান।
তবে, এরপরের ভাষ্যটি সর্বত্র এক। চন্দ্রচূড় তর্করত্ন পঞ্চানন রাজসভায় দেবীর পুজোর মন্ত্র পদ্ধতি দেবীর আদেশমতো ব্যক্ত ও বর্ণনা করেন। কথিত, সেই নিয়ম মেনেই রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আজও মা জগদ্ধাত্রী পূজিত হয়ে আসছেন।
ব্রহ্মশাসনের সেই অশ্বত্থ তলে আজও গ্রামবাসী নিজ আয়োজনে মায়ের পুজো করেন। মাঝে কয়দিন বন্ধ হলেও সে পুজো আজও বর্তমান।
সূত্র- বিবিধ আর্টকেল ও লোককথা
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy