সমগ্র ভারত জুড়ে রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন মন্দিরের নিদর্শন। কিছু মন্দির এতটাই পুরনো যে, তাদের প্রতিষ্ঠা কাল নিয়েও নানা মতবিরোধ আছে। এই মন্দিরগুলি যে শুধু ধর্মেরই প্রতিনিধিত্ব করে তা নয়, বরং তাদের সঙ্গে লতায়পাতায় জড়িয়ে অজস্র ইতিহাস। আপনি কি জানেন ভারতের সব থেকে পুরনো মন্দিরটি কোথায়? বেশিদূর যেতেও হবে না। প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের রামগড়েই আছে এ দেশের সবচেয়ে প্রাচীন মন্দিরটি। যার সঙ্গে জড়িয়ে বহু পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব। সামনেই কালীপুজো। ঘুরে আসতেই পারেন কিন্তু!
এই মন্দিরে এখনও পর্যন্ত শক্তির আরাধনা চলে। পূজিত হন দেবী মুণ্ডেশ্বরী। ঐতিহাসিকদের মতে, এই মন্দির আনুমানিক ১০৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এমনকি এই মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায় ৬৩৬ সালে, চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের লেখাতেও। বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার পাশাপাশি নানা অলৌকিক ঘটনার সঙ্গেও জুড়ে আছে তার নাম।
বিহারের শোন নদীর ধারে রামগড় গ্রামে কাইমুর মালভূমির মুণ্ডেশ্বরী পাহাড়ে এই মন্দির। বছরের প্রায় সময়েই দর্শনার্থীরা ভিড় জমান। অনেকেরই বিশ্বাস, মুণ্ডেশ্বরী দেবী খুব জাগ্রত। তিনি মানুষের সব প্রার্থনাই গ্রহণ করেন। এখানে দুর্গার এক তান্ত্রিক রূপ হিসাবে পূজিত হন দেবী। এ ছাড়াও মন্দিরে একটি পঞ্চমুখী শিবের মূর্তিও স্থাপন করা আছে।
মনে করা হয়, মুণ্ড নামে এক রাক্ষস তার অভিশাপ কাটাতে এই মন্দিরে শিব ও দেবী মুণ্ডেশ্বরীর পুজো করেছিল। সেই থেকেই বিশ্বাস, এখানে মানুষ পুজো দিলে তার পরেই তার খারাপ সময় কেটে যায়। এখানে হয় এক অনন্য পশুবলি। কারণ, এখানে ছাগল বলি দেওয়ার সময়ে কোনও অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। এমনকি হয় না কোনও রকম রক্তপাত। লোকে বলে, ছাগলটিকে মায়ের পায়ের কাছে শুইয়ে রাখা হয়। তার পরে অবিশ্বাস্য ভাবে সেই ছাগলটি জ্ঞান হারায়। আবার দেবীর কাছে থেকে ফুল নিয়ে গায়ে ঠেকালেই তার জ্ঞান ফিরে আসে। সকলের দর্শনার্থীর চোখের সামনেই নাকি এমন ঘটে। এখানে চালের ভোগ দেওয়া হয়। মনে করা হয়, এই প্রসাদ গ্রহণ করলে মানুষের সমস্ত বাধা বিপত্তি চলে যায়।
কী ভাবে পৌঁছবেন এই মন্দিরে?
বিহারের পটনা শহর থেকে মাত্র ২১০ কিমি দূরেই এই মন্দির। শোন নদীর ধারে রামগড় গ্রামে কাইমুর মালভূমির মুণ্ডেশ্বরী পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy