Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

History Of Chinmoyee Kali

শোক ভুলে রানিমা নিয়ে এলেন তাঁকে, মা নাকি মেয়ে- কে এই চিন্ময়ী?

রাজা-রানির নয়নমণি দ্বাদশী চিন্ময়ী। তাঁদের একমাত্র কন্যা। পদ্মকুঁড়ির মতো টলটলে মুখ, চাঁপাফুলের মতো সুগন্ধ তার দস্যিপনায়।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

তমোঘ্ন নস্কর
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৪৩
Share: Save:

“কাঁদিসনে মা! এই দ্যাখ না, আমি তোর কোলের কাছটিতেই আছি। তোরা খালি ‘মা যশ দে, অর্থ দে, সুখ দে’ বলে চেয়ে গেলি। শক্ত শক্ত মন্তর, স্তোত্তর পড়ে গেলি! ছেলেমানুষ আমি দেব কী? তাই তো আমি আসিনি। কই, দিতে তো চাসনি কিছু? দে দেখিনি মা, বাগড়াটা দে... ল্যাংড়া আমের বাগড়া বড় মিঠে। এ বছর কাশীতে ল্যাংড়ার ফলন ভাল নয়। তোর গাছগুলোয় কিন্তু ভাল ফলেছে।”

ধড়মড় করে উঠে বসলেন রানিমা। সারা গা জুড়ে আমের মনোহারি গন্ধ। যেন এখনই হাত জাবড়া করে আম খেয়েছে কেউ। হইহই পড়ে গেল অন্দরে। সাত দিন পর উঠে বসেছেন রানিমা! কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের উত্তরপুরুষ হরনাথের বংশ তখন সুখসাগরে জমিদারি করছে।

সত্যিই সে সুখসাগর। রাজা-রানির নয়নমণি দ্বাদশী চিন্ময়ী। তাঁদের একমাত্র কন্যা। পদ্মকুঁড়ির মতো টলটলে মুখ, চাঁপাফুলের মতো সুগন্ধ তার দস্যিপনায়।

আচমকাই বজ্রনির্ঘোষ। কয়েক দিনের অসুস্থতায় চিন্ময়ী পৃথিবীর মায়া কাটাল৷ রাজা আছড়ে পড়েন কাটা বেতলতার মতো। বাপের বুক ফাটে, তবুও মুখ ফোটে না। কিন্তু মা কি আর স্থির থাকতে পারেন!

মেয়ে বাড়ির বাইরে গেল আর বিছানা নিলেন রানিমা। নাওয়া নেই, খাওয়া নেই। চড়াই-উতরাই বেয়ে গড়িয়ে নামে নোনা ধারা। অমন সোনাঝুরি রং তনু কালো হয়ে মিশে গিয়েছে বিছানায়। ছয় দিন হল মা আর ওঠেন না। নাড়ি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর। কেবল বুকটুকু মৃদু ওঠানামা করে। কর্তা মাথায় হাত ধরেন। মেয়ে মা-কেও নিয়ে গেল বুঝি। তিনিই রইলেন একা।

কিন্তু রানিমা উঠলেন হঠাৎ! এ যেন সেই শোকবিহ্বল মা নয়! সদ্য গর্ভাধানের নাড়ে লাজুক, সতর্ক মা। কেবল বলেন, তাঁর মেয়ে ফিরছে। অশৌচের বাধা ঝেড়ে প্রায়শ্চিত্ত করে ছুটলেন কাশী। খুঁজে খুঁজে দেখা পেলেন তার, গঙ্গাতীরে ভাস্করের কারখানায় বসে আছে তার মেয়ে। কষ্টি কোঁদা মূর্তিটা ভাস্কর রেখেছে গাছতলায়, বৃষ্টিধারায় মুছে যাচ্ছে ছেনির ধুলো। ঝড়ের তালে ঝুপঝাপ পড়ে বিছিয়ে যাচ্ছে আম।

রানিমা নিয়ে এলেন কষ্টি পাথরের দক্ষিণা মা-কে। মেয়ের সকল শাড়ি, গয়না পরিয়ে তাঁর চিন্ময়ীকে কোলে তুলে নিলেন। মা নিজেই এ বারে মা পেলেন। ছোট্ট চিন্ময়ী মা হলেন ঘরের মেয়ে। বহুকাল পেরিয়েছে। চূর্ণি দিয়ে গড়িয়েছে বহু জল। মা আজও পুজো পান নিত্যকার নিয়মে, বড় মা সিদ্ধেশ্বরীর সঙ্গে। বর্তমানে এই মা নদীয়ার রানাঘাটে কৃষ্ণচন্দ্রের উত্তর পুরুষদের দ্বারা পূজিতা হচ্ছেন।

তথ্য ঋণ- অংশুলা বন্দোপাধ্যায়

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy