উত্তর কলকাতার বাগবাজার অঞ্চলে বেড়ে ওঠা অভিনেতা শুভ্রজিৎ দত্তের। বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোই তাঁর নিজের জায়গা। সেই পুজো ছেড়ে আজও অন্যত্র মন টেকে না তাঁর। ছোট থেকেই কোনও দিনই খুব একটা ঠাকুর দেখতে যাওয়ার রেওয়াজ ছিল না বাড়িতে। বাগবাজারের পুজোর উন্মাদনাই মাতিয়ে রাখত তাঁকে।
উত্তর কলকাতার সেই পুজোর সুখস্মৃতি আর আমেজ অভিনেতাকে আবিষ্ট করে আজও। স্কুলের শেষে পঞ্চমীর দিন একছুটে পাড়ার বন্ধুরা সোজা খেলার মাঠে। চলত শেষ বারের মতো ফুটবল খেলার হিড়িক। কারণ পুজোর পরেই মাঠের দখলদারি শুধু ক্রিকেটের। তাই শরতের গন্ধ গায়ে মেখে, ঘাসের কোমলতায় পা ডুবিয়ে ফুটবল খেলার সেই আনন্দ কিংবা ঢাকের আওয়াজে ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠার মুগ্ধতা আজও পিছনে ফেলে দেয় তাঁর বড়বেলার যত ভাল স্মৃতিকে। হয়ে ওঠে অদ্বিতীয়। যে টুকু ঠাকুর দেখা হত, তা ছিল মূলত সকালবেলায়। উত্তর কলকাতার এদিক সেদিক হেঁটে হেঁটে প্যান্ডেল থেকে প্যান্ডেলে।
এখনকার পুজোর পরিকল্পনায় কী কী থাকে? শুভ্রজিতের এ বছর বেশ অন্য রকম ভাবনা আছে পুজো নিয়ে। মহালয়ার সময়ে শান্তিনিকেতনের অনন্য পরিবেশ উপভোগ করার ইচ্ছে তাঁর বহু দিনের। তাই সব ঠিকঠাক থাকলে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে চান ইচ্ছেপূরণে। আবার চতুর্থীতে তাঁর পরিকল্পনা গাড়ি নিয়ে সপরিবার গ্রামের কোনও পুজোয় পাড়ি দেওয়া।
পুজোর দিনগুলোয় কাজে ব্যস্ত থাকা তাঁর একেবারেই না-পসন্দ। বহু বছর হল পুজো পরিক্রমা কিংবা শারদ-অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা জাতীয় কাজ বন্ধ রেখেছেন তিনি। বাগবাজার সর্বজনীনের সাবেক পুজো ও তার পরিবেশ তাঁর বরাবরের প্রিয়। যেন মনে হয়, সময় থমকে আছে।
পুজোয় কারও প্রতি বিশেষ ভাললাগার অনুভূতি তৈরি হওয়াটাও নতুন কিছু নয়, বলছেন শুভ্রজিৎ। নিজেই জানালেন, বহু প্রতিবেশিনীকেই নানা সময়ে বিশেষ ভাবে ভাল লাগত। এখন তাঁদের সকলের সঙ্গেই খুব সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় আছে তাঁর। অভিনেতার কথায়, “পুজোর সময়ে বাগবাজারের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই ছিল, কোনও কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ভাল লাগা বা আকর্ষণ তৈরি হতেই তাদের মধ্যে পাড়াতুতো ভাই-বোনের সম্পর্ক পাতিয়ে ফেলার চেষ্টা চালানো!’’ বান্ধবীদের সঙ্গে সে কারণেই তাঁর খুব ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ভবিষ্যতে। প্রেমের ভাললাগা পেরিয়ে চিনতে পেরেছেন নিটোল বন্ধুত্বের সমীকরণ।
মা দুর্গার কাছে তবে তিন বরে কী চাইবেন তিনি? শুভ্রজিতের দাবি, নিজের জন্য কেউ কিছু চাইতে বললে তিনি দ্বিধায় পড়ে যান রীতিমতো। তাই হয়তো দেবীকেই বলে বসবেন, “আপনি যা ভাল মনে করেন, দেবেন!” তবে একটি জিনিস সব সময়েই চাইবেন অভিনেতা। সবাই যেন ভাল থাকেন তাঁর চারপাশে। আর চাইবেন, ছোটবেলার স্মৃতি- পাড়ায় থিয়েটার করা, ছবি আঁকার সেই দিনগুলি যেন তাঁর মনে বেঁচে থাকে সব সময়ে। “এ সব চাইতে গিয়ে হয়তো ঠাকুর আমায় ভাল রাখো, অর্থ দাও, সুখ দাও- এ সব চাইতেই ভুলে যাব!” সকৌতুকে বললেন শুভ্রজিৎ।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy