Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Sudip Sakar Jagaddgatri Puja

বন্ধুরা মিলে শোভাযাত্রায় যেতাম, তবে প্রেমিকাকে নিয়ে ভয় লাগত! জগদ্ধাত্রী পুজোয় লিখলেন সুদীপ

কর্মসূত্রে কলকাতায় এসে পসার জমালেও আজও নাড়ির টান কিন্তু চুঁচুড়াকে ঘিরেই।

সুদীপ সরকার
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪১
Share: Save:

কর্মসূত্রে কলকাতায় এসে পসার জমালেও আজও নাড়ির টান কিন্তু চুঁচুড়াকে ঘিরেই। আগে সেখানেই আমার বাড়ি ছিল। পরে বাবার অবসর এবং আমার কলেজে ভর্তি হওয়ার পর আমাদের ঠিকানা বদলে হয়ে যায় উত্তর চন্দননগরের একদম সীমান্তবর্তী এলাকা। অর্থাৎ চুঁচুড়া এবং চন্দননগরের মাঝামাঝি সীমানাঘেঁষাই।

আমার কলকাতায় চলে আসা বহু আগেই। যত দূর মনে পড়ে, ২০১৬ সালে মা-বাবাও চলে আসেন এখানে। ওই বাড়িটাও আর আমাদের নেই। জগদ্ধাত্রী পুজোর স্মৃতি তত দিনই রঙিন ছিল যত দিন আমি চুঁচুড়াতে ছিলাম। কলকাতায় আসার পর আলাদাভাবে উদযাপন করা হয়ে ওঠেনি, বহুদিন হয়ে গেল। লেখার জন্য সেই স্মৃতিটুকুই সম্বল।

চুঁচুড়া-চন্দননগরে আমার জগদ্ধাত্রীপুজোটা কাটত খুব মজা করে। কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরোনো, আড্ডা দেওয়া– প্রতিটা মুহূর্তই ছিল দারুণ। পুজোর কয়েকটা দিন চন্দননগরের সাজসজ্জা নিয়ে না হয় না-ই বা বললাম। আমাদের ওখানে জগদ্ধাত্রী ভাসানের সময় গোটা রাস্তা (জিটি রোড) বন্ধ করে রেখে শোভাযাত্রা চলত। যদিও এখনও তা হয়। সেই সময়ে আমরাও ওই শোভাযাত্রার সঙ্গে সঙ্গেই পা মেলাতাম এবং একদম চলে যেতাম গঙ্গার ধার পর্যন্ত। সঙ্গে চেনা-অচেনা, সকলের সঙ্গেই জমিয়ে নাচ-গান– সে এক আলাদাই আনন্দ!

মিথ্যে বলব না, লুকিয়ে লুকিয়ে ধূমপানও চলেছে ভিড়ের মধ্যেই। প্রেমের রং তখনও আমার জীবনে লাগেনি। বন্ধুরাই ছিল আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী। এমনিতেও প্রেমিকাকে নিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর ভিড়ে মিশে যাওয়াটা একটু আতঙ্কের ছিল বৈকি, পাছে যদি কেউ চিনে ফেলে! আমাদের মফসসলের ছেলেমেয়েদের এই একটা ভয় আছে আর কি।

শোভাযাত্রাকে ঘিরেই আরও একটা মজার ঘটনা জানেন? ওই সময়ে ওই শোভাযাত্রাটাই কিছু মানুষের ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একটু খোলসা করেই লিখি বরং। যে রাস্তা জুড়ে শোভাযাত্রাটা হচ্ছে, আমার কিছু বন্ধুর বাড়ি ওই রাস্তার ধারে ছিল। অনেকে দর্শকদের বসার জন্য চেহার ভাড়া করতেন। অর্থাৎ আপনি যদি চান একেবারে সামনের সারিতে বসে ঠাকুর দেখবেন, বেশি কিছু নয়, সামান্য কিছু মূল্যের বিনিময়ে আপনাকে সেখানে বসার জায়গা করে দেবে সেই বাড়ির মানুষেরাই। মূল্যই নির্ধারন করত কোন সারিতে আপনার স্থান হবে! কখনও ১০০, কখনও ১৫০। আবার সেখানেও চলত দরদাম। ভাবতে পারছেন! তবে এর মধ্যেও অনেকে ছিলেন যাঁরা ভাল মনেই চেয়ার বসিয়ে রাখতেন বাড়ির সামনে। তবে আমার আর আমার বন্ধুদের আর বসার সময় কোথায়! আমরা চলে যেতাম একেবারে ঘাট পর্যন্ত।

কলকাতায় চলে আসার পর সবটাই এখন স্মৃতি। মাঝে দু’এক বার সেখানে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। তবে সেটা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বিচারক হিসেবে। এ ছাড়া আর ইচ্ছে থাকলেও কাজের ব্যস্ততার কারণে কোনও দিন যাওয়া হয়ে ওঠেনি। চন্দননগরের ঝাঁ-চকচকে আলোকসজ্জা, সাবান জলের বুদবুদ আর ভেঁপুর আওয়াজের মধ্যেই থেকে গিয়েছে আমার জগদ্ধাত্রী পুজো ও ছেলেবেলা।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE