Advertisement
E-Paper

কলকাতার পুজোর গন্ধ গায়ে মাখতে প্রাণ ছটফটিয়ে উঠছে

ঢাকা যদি হয় শেকড়, কলকাতায় আমি আমার ডালপালা মেলেছি। ওই যে আমার বাড়ির জানলা, তা তো যে কোনও বাড়ির চোখ।

জয়া এহসান

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৩০
Share
Save

পুজো আর মৃত্যুর কোলাহল পাশাপাশি এসে দাঁড়িয়েছে। কোভিড আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমাদের সংযমী হতে শিখিয়েছে। আমাদের অপচয় কম করতে শিখিয়েছে। পুজো মানেই তো আমাদের বাহুল্যের খরচ, জামাকাপড়ের ক্ষেত্রে বিশেষ করে। এখন থেকে না হয় আমরা সামঞ্জস্য রেখে সব করি। সে জীবনই হোক বা ফ্যাশন। এটাই না হয় হোক এ বার পুজোর নতুন ভাবনা!

আমফানের সময় খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কাছে যেতে পারছিলাম না। দূর থেকে ওই দৃশ্য দেখা… এখন তো শুনছি ভারতের অবস্থাও সঙ্গীন। যে মানুষগুলোর সঙ্গে রোজ কাজ করেছি, তাঁদের কী অবস্থা? খুব আকুল হয়ে আছি। সিনেমা হল খুলল। পুজোর আগে এটা সত্যি আনন্দের!

শেষ কিছু বছর ধরে আমার কাছে পুজোর আনন্দ মানে ছবি রিলিজ। সৃজিতের যে কটা ছবি আমি করেছি, সেগুলো পুজোতেই মুক্তি পেয়েছে। এ ছাড়া অন্য ছবিও তাই। বড় হওয়ার পরে এটাই আমার কাছে পুজোর মূল আকর্ষণ ছিল। এ বার পুজো কেমন কাটবে জানি না। আমার অক্টোবরে কলকাতায় আসার কথা। ভেবেছি ঢাকা থেকে প্রথম যে ফ্লাইট ভারতে আসবে, সেটাতে চড়েই সোজা আমার যোধপুর পার্কের বাড়িতে ফিরব। নিদেনপক্ষে পুজোর একটু আগেই চলে আসতে চাই, যাতে অন্তত আমেজটা বুঝতে পারি। কলকাতা ছাড়া পুজো ভাবতেই পারি না। ঢাকাতেও পুজো হবে। তবে ঠাকুর দেখতে যেতে পারব কি না জানিনা। আমাদের সবচেয়ে বড় পুজো হয় বনালীর মণ্ডপে। প্রচুর লোকজন আসেন সেখানে। তবে এ বার তা কতটা হবে জানিনা। হয়তো সোশ্যাল মিডিয়াতে ঠাকুর দেখতে হবে।

জানলার ওপারের দেবদারু গাছটার কথা মনে পড়ছে বার বার।

এই অতিমারি, লকডাউন নিয়ে ১৫ দিনে ছবি করে ফেললাম। এই সময়ের মানসিক অস্থিরতার দিনগুলোতে যখন বাসায় বসে ভয় আর আশঙ্কায় দিনগুলো কাটাচ্ছিলাম, সেই সময়েই পরিচালক ফোনে বললেন, ‘চলেন, ছোট করে একটা শর্ট ফিল্ম বানিয়ে ফেলি।’ ছবি অনেক সময়ে ছবি হয়ে ওঠে, বানাতে হয় না! তাঁর কথায়, আশায় থাকলাম কী করলাম সেটা দেখার জন্য! ১৫ দিনের শুটিংটা বেশ একটা পাগলামি ছিল! কিন্তু এত কম মানুষ নিয়ে একটা ছবি শুট করা যায়, সেটাও জানা হল। পিপলু ভাই আর নুসরত মাটি-র চিত্রনাট্যে আপাতত নাম আসেনি। নিজের প্রযোজনা সংস্থা ‘C তে cinema’-ও এই ছবির প্রযোজনার অংশ!

আরও পড়ুন: বাগডোগরার প্লেনের টিকিটটা শেষ মুহূর্তেও হয়ে যেতে পারে...


তবু কলকাতা ফিরে ফিরে আসছে, বড্ড মন কেমন করছে! কলকাতা আমার জীবনে বিচ্ছিন্ন কিছু তো নয় আর। ঢাকা যদি হয় শেকড়, কলকাতায় আমি আমার ডালপালা মেলেছি। ওই যে আমার বাড়ির জানলা, তা তো যে কোনও বাড়ির চোখ। কলকাতার বাড়ির এই দীঘল চোখের জানলাটাই ছিল আমার মুক্তির পথ। এর মধ্যে দিয়ে বয়ে আসা হাওয়ার ঝাপটা কোথায় উড়িয়ে নিয়ে যেত আমার ক্লান্তি, আমার অবসন্নতা। আহা, আমার মন–ভালর জানলা! জানলার ওপারের দেবদারু গাছটার কথা মনে পড়ছে বার বার। একটা বড় বাজপাখি এসে বসত গাছটার উপরে। রোজ, একদম একা একা। অন্য কোনও পাখির সঙ্গে ওকে কখনও দেখিনি। আমার জন্যই ও আসে, এটা ভাবতেই আমার ভাল লাগত। যেন আমার টোটেম হয়ে উঠেছিল পাখিটা। দেবদারুর শিখরে বাজপাখি, এই প্রখর সৌন্দর্যের কোনও তুলনা হয়!

পুজো আসবে আর আমি শাড়ির কথা ভাবব না?

এ বার পুজো স্মৃতি নিয়ে চলবে। একটা বইও পড়তে পারিনি। পুজোয় হয়তো পড়ব। আগে তো মনই বসছিল না! একটা মাছকে যদি জল থেকে বাইরে রাখা হয়? সে কেমন রাখা? এত দিন শুটিং ফ্লোরের বাইরে আমি! জুন থেকে শুট শুরু করার কথা ছিল। ইতিহাস দেখেছে যুদ্ধ দিয়ে মানবজাতির সংশোধন হয়েছে। এ বার বোধ হয় অতিমারি দিয়ে হল।

আরও পড়ুন: অবাক কাণ্ড, এই দুর্দিনেও পুজোর সব জোগাড় হয়ে গেল ঠিক ঠিক!

সংযমের কথা মনে আছেই। কিন্তু পুজো আসবে আর আমি শাড়ির কথা ভাবব না? মন থেকে কি সব মুছে ফেলা যায়? সে দিন আমি ইন্টারনেটে দেখছিলাম কী কী ভাল শাড়ি এসেছে এ বার। পুজোতে আমি বাংলাদেশের শাড়িই পরি। আমার মসলিন খুব প্রিয়, সুতিও পছন্দের। প্রত্যেক বছর ৪-৫টা জায়গা থেকে শাড়ি উপহার পাই। এ বার কী হবে কে জানে! শুধু তো শাড়ি হলেই হবে না। সব দিক থেকেই প্রস্তুত হতে হবে।

Durga Puja 2020 Celebrity Durga Puja Celebration Durga Puja Celebration 2020 Durga Puja Special Durga Puja Nostalgia Kolkata Durga Puja Tollywood Puja Celebration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}