এনা সাহার ভৌতিক অভিজ্ঞতা
আত্মা বলে কি সত্যিই কিছু হয়? যাঁরা উত্তরে ‘না’ বলবেন, তাঁদের কাছে এই গল্পের শেষে আবারও একই প্রশ্ন থাকল। ছোট থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে হোক বা কর্মসূত্রে, একাধিক ভূতুড়ে ঘটনার সাক্ষী হয়েছি আমি। তবে যে ঘটনাটা আজকে লিখতে চলেছি তা মনে করলে এত বছর পরও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। কর্মসূত্রে মুম্বইতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার এত বন্ধু থাকার দরুণ আজ এর বাড়ি, তো কাল ওর বাড়ি! এভাবেই থাকছিলাম সেই শহরে।
এক বন্ধুর বাড়িতে প্রথমবার থাকতে গিয়েছি। ওর বাড়িটা ছিল মুম্বই শহর থেকে সামান্য দূরে, থানেতে। রাতের বেলা শুতে গিয়ে বুঝতে পারি কোথাও একটা অস্বস্তি জাঁকিয়ে ধরেছে আমাকে। কিছুতেই দু’চোখের পাতা এক করতে পারছি না। মনে মনে ভাবছি, নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে আছি, তাই হয়তো ঘুম আসছে না। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হল আমি যত বারই চোখ বন্ধ করছি, আমার সামনে ভেসে উঠছে একটা ছায়ামূর্তি। দীর্ঘ চেহারা, মাথায় নেই একটা চুলও। তখনও পর্যন্ত তার মুখশ্রী দেখতে পাইনি আমি।
অস্বস্তি বাড়তেই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ঘরের আলো জ্বালিয়েই ঘুমনোর চেষ্টা করি। চোখ বুঝতেই যেন স্পষ্ট দেখতে পেলাম চেহারাটিকে। না, কোনও মনের ভুল ছিল না আমার। কেবলই মনে হচ্ছিল ওই দীর্ঘাকার মূর্তিটি আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। অথচ চোখ খুললে কাউকে দেখতে পারছিলাম না সামনে। শেষমেশ নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে যাই। একটু ভোর হতেই ভাবি এবার অন্তত ঘুমটা আসবে। কিন্তু চোখ বন্ধ করে পাশ ফিরে শুতেই মনে হল সেই একই চেহারার মানুষটা আমার পাশে যেন শুয়ে আছে।
ব্যস! সকাল হতেই আর ওই বাড়িতে বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় না করে আমার জিনিসপত্র গুছিয়ে আমার অন্য এক বন্ধু বাড়িতে চলে যাই। স্বাভাবিক ভাবেই আমার এমন তড়িঘড়ি বেরিয়ে যাওয়া কিছুটা অবাক করেছিল বন্ধুটিকে। কিন্তু আমি নিরুপায়। সে জিজ্ঞেস করতেই আমি পুরো বিষয়টা খুলে বলি। যদিও তাতে বিশেষ লাভ হয় না। আমার কথাকে প্রায় তুড়ি মেরে বন্ধুটি বলে, “ধুর! আমি রোজপুজো করি বাড়িতে। কোনও ছায়ামূর্তি নেই এখানে। সবটাই মনের ভুল।”
না, আমার ‘মনের ভুল’ যে ছিল না, তার প্রমাণ কিছু দিন পর নিজেই পায় সে। ওই ঘটনাটি ঘটার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আমার কাছে ফোন আসে বন্ধুটির। আমি তত দিনে কলকাতা ফিরে এসেছি। এক দিন রাতে আমাকে ওই বন্ধুটি ফোন করে জানায়, সে ওই বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছে। কেন জানেন? আমার বিবরণ শুনে সে তাঁর পরিচারিকাকেও ঘটনাটি জানায় এবং জানতে পারে তিন মাস আগে এক জন ভদ্রলোক ওই ঘরেই আত্মহত্যা করেছিলেন। খুব একটা অবাক হইনি এটা জেনে যে সেই ভদ্রলোকের চেহারা আর আমার দেওয়া বিবরণ হবহু মিলে গিয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy