দীর্ঘ সাত বছর পর রবিবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হতে পারে শিখার।
শেষ মুহূর্তে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন না হলে, রবিবার তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন শিখা মিত্র। প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর স্ত্রী এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছেন। গত ১৭ অগস্ট প্রয়াত সোমেনের বাৎসরিক কাজ ছিল। সে দিনই ফোন করে শিখার সঙ্গে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরদিনই তাঁর বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দিয়ে আসেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। সূত্রের খবর, ওই দিনই তৃণমূলে যোগদানের ব্যাপারে নিজের সম্মতি জানিয়ে দিয়েছিলেন শিখা। তৃণমূলের শাখা সংগঠন বঙ্গজননীর সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন সোমেন-জায়া। আর তৃণমূল শিবিরের এমন প্রস্তাব পেয়ে শিখা জানিয়েছিলেন, তিনি তৃণমূল ছাড়ার পর আর কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেননি। তাই তৃণমূলে ফের যোগ দিতেও তাঁর অসুবিধা নেই। সূত্রের খবর, রবিবার দক্ষিণ কলকাতার এক হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলে যোগদান করানো হতে পারে শিখাকে।
গত বছর সোমেন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে, ফোন করে তাঁর খোঁজ নিয়েছিলেন মমতা। সেই থেকেই সম্পর্কের বরফ গলা শুরু। পরে সোমেনের প্রয়াণের পর সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাছাড়া, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র টিকিটে শিখা চৌরঙ্গি কেন্দ্রে দাঁড়াতে অস্বীকার করায় খুশি হয়েছিল তৃণমূল শিবির। তাই ক্ষমতায় এসে শিখাকে ফোন করে তাঁর সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।
তবে অতীতে সোমেন-তৃণমূল বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে শিখা অনুঘটকের কাজ করেছিলেন বলে জানা যায়। ২০০৮ সালে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গড়ে সোমেন কংগ্রেস ছাড়লে স্বামীর সঙ্গেই ছিলেন স্ত্রী। এর পর ২০০৯ সালে তৃণমূলের প্রতীকে ডায়মন্ড হারবার থেকে সাংসদ হন সোমেন। আর স্বামীর ছেড়ে যাওয়া কেন্দ্রে শিখাকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেন মমতা। ২০০৯ সালে অধুনা বিলুপ্ত শিয়ালদহ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন শিখা। ২০১১ সালে চৌরঙ্গি কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক হন তিনি।
কিন্তু শীঘ্রই সোমেন-তৃণমূলের সম্পর্কে তিক্ততা শুরু হয়। ২০১৩ সালের পয়লা জুলাই রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বিধান ভবনে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শিখা। প্রকাশ্যেই সমালোচনা করে বসেন মমতার। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে কংগ্রেসে যোগদান করেন সোমেন। শিখাও চৌরঙ্গির বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন।
এই ঘটনার দীর্ঘ সাত বছর পর রবিবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হতে পারে শিখার। সূত্রের খবর, তাঁকে সরকারি কোনও কমিটির দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে।