চলছে কুয়ো থেকে শিশুকে উদ্ধারের কাজ। ছবি: সংগৃহীত।
৬৫ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও তিন বছরের চেতনাকে রাজস্থানের কোটওয়ালে ৭০০ ফুট গভীর কুয়ো থেকে উদ্ধার করা যায়নি। রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা উদ্ধারের প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত উদ্ধারের সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। তাই শেষ চেষ্টা করতে এ বার মাঠে নামলেন দক্ষ খনি-শ্রমিকেরা। নিষিদ্ধ ‘র্যাট-হোল মাইনিং’ অর্থাৎ ইঁদুর-গর্ত খনন পদ্ধতিতে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করবেন তাঁরা।
কী এই ‘র্যাট-হোল মাইনিং’? কেনই বা খনিতে তা নিষিদ্ধ? নাম শুনে আন্দাজ করা যায়, ইঁদুরের কায়দায় গর্ত খোঁড়ার সঙ্গে ‘র্যাট-হোল মাইনিং’-এর সম্পর্ক রয়েছে। এককালে খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। শাবল-গাঁইতি দিয়ে খুব সঙ্কীর্ণ গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে এগোতে হত শ্রমিকদের। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এই ভাবে খোঁড়া সুড়ঙ্গ অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হয়। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ধস নেমে শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে ২০১৪ সালে ‘র্যাট-হোল মাইনিং’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনকে এই নিষিদ্ধ পদ্ধতিরই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। এ বার রাজস্থানের চেতনাকে উদ্ধারের কাজে নামলেন সেই ইঁদুর-গর্ত খননকারীরাই!
সোমবার দুপুরে খেলতে খেলতে ৭০০ ফুট গভীর একটি খোলামুখ কুয়োতে পড়ে যায় তিন বছরের চেতনা। প্রথমে সে কুয়োর ১৫ ফুট গভীরে আটকে ছিল। পরিবারের লোকেরা তাকে টেনে বার করা চেষ্টা করতে গেলে উল্টে ১৫০ ফুট গভীরে পড়ে যায় সে। এর পর শুরু হয় উদ্ধারকাজ। শিশুর যাতে শ্বাস-প্রশ্বাসের অভাব না হয়, তার জন্য কুয়োর মুখ দিয়ে একটি অক্সিজেন পাইপও প্রবেশ করানো হয়েছে। কুয়োর কাছে জেসিবি মেশিন দিয়ে ১০ ফুট গভীর গর্ত খনন করা হচ্ছে। গর্ত খননের পর ভিতরে ঢুকবেন উদ্ধারকারীরা। পাশাপাশি, একটি পাইলিং মেশিনের সাহায্যেও খননের কাজ চলছে। কিন্তু কুয়োর মুখ অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। এর পরেই আনা হয়েছে দক্ষ খনি-শ্রমিকদের। নিজেদের দড়ির সঙ্গে জুড়ে সুড়ঙ্গে নামছেন তাঁরা।