জেলাস্তরের সাংগঠনিক রদবদলে তৃণমূলে একঝাঁক নতুন মুখকে দায়িত্ব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
তৃতীয়বারের জন্য নীলবাড়ির দখল নেওয়ার পর দলে এক ব্যক্তি, এক পদ চালুর কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সোমবার তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের তালিকা প্রকাশ হলে দেখা যায় সেই নীতিতেই সিলমোহর পড়েছে। মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে থাকা সমস্ত জেলা সভাপতিদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে নতুন মুখ।এমনকি,সংসদে বাড়তি দায়িত্ব থাকায় বেশকিছু সাংসদকেও সরানো হয়েছে জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে। প্রসঙ্গত,৫ মে তৃণমূল ভবনের সাংগঠনিক বৈঠকে দলের নেতাদের নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা।
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে সরানো হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে। বদলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাকে চারটি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে চারজন নতুন সভাপতি দায়িত্ব পেয়েছেন। একই ভাবে হাওড়া জেলা (গ্রামীণ)-এর সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়কে। সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আরও এক মন্ত্রীকে। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে প্রাণীসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে। সেচমন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে ছিলেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সংগঠনকে কাঁথি ও তমলুকের মধ্যে ভাগ করে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাঁকেও।
মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান। তাঁকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলে চেয়ারম্যান পদে ছিলেন মন্ত্রী গোলাম রাব্বানি ও বিপ্লব মিত্র। দু’জনকেই এবারের মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছে। তাই ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ মেনে এবার তাঁদেরও সাংগঠনিক পদে রাখা হয়নি।পশ্চিম বর্ধমান জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক। তাঁকে আর জেলার সংগঠনে রাখা হয়নি। সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ও হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। তাঁকেও সংগঠনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। তাঁকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে সভাপতি করা হয়েছে বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়কে। নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। আবার প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব ভোটে হেরে যাওয়ার পরেই পরেই তাঁকে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে জেলা সংগঠনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে করা হয়েছে রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তীর আবার দায়িত্ব কমিয়ে দিয়েছে দল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে সাংগঠনিকভাবে দু‘ভাগ করা হয়েছে। ডায়মন্ডহারবার ও যাদবপুর লোকসভার মিলে গঠিত জেলার দায়িত্ব রয়েছেন শুভাশিস। আর সুন্দরবন নামে পৃথক জেলা গড়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদারকে।