সিপিএম, বিজেপিকে পাশে নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান হলেন তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’ প্রার্থী। — নিজস্ব চিত্র।
প্রধান তৃণমূলের, উপ-প্রধান বিজেপির, প্রস্তাবক সিপিএমের। বোর্ড গঠনে এই রাজনৈতিক সমীকরণ দেখা গেল নদিয়ার কৃষ্ণনগর ১ নম্বর ব্লকের রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। ভোটের ফলের নিরিখে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল তৃণমূল। বাদ সাধে দলীয় কোন্দল। বিজেপি এবং সিপিএমের সঙ্গে ‘জোট’ বেঁধে তৃণমূলের প্রস্তাবিত প্রধান পদপ্রার্থীকে হারিয়ে প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এক প্রার্থী। যদিও একে ‘জোট’ বলতে নারাজ কোনও দলই। বিজেপির দাবি, সবটাই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। সিপিএম জেলা নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা কিছুই জানেন না। বিক্ষুব্ধ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর ১ নম্বর ব্লকের রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২২। ভোটে জিতে তৃণমূলের দখলে যায় ১৩টি। বিজেপি সাতটি, সিপিএম দু’টি আসনে জয়ী হয়। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তৃণমূল। এর মধ্যে তৃণমূলের এক জয়ী সদস্যের মৃত্যু হয়। ফলে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১২। বোর্ড গঠনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের জয়ী করা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা ছিল শাসকদলের কাছে।
পঞ্চায়েত প্রধান পদে ইনার আলি শেখের নাম প্রস্তাব করে তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হন তৃণমূলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অনুপ বিশ্বাস। গোপন ব্যালটে ভোটাভুটির সময় বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের অনুপের পক্ষে বিজেপির সাত, সিপিএমের দুই এবং তৃণমূলের তিন জন সদস্য ভোট দেন। রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়ে যান অনুপ বিশ্বাস। উপ-প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির সুপ্রিয়া মণ্ডল।
বোর্ড গঠন প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘তাৎক্ষণিক কোনও সিদ্ধান্ত হয়ে থাকতে পারে। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত বিশ্বাস জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।