Firhad Hakim

উদয়ন পাগলের মতো কী সব বলছে! সতীর্থ মন্ত্রী উদয়নকে লক্ষ্য করে তোপ ফিরহাদের

শনিবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে উদয়নের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল ফিরহাদকে। সেখানেই উদয়নের অভিযোগ অস্বীকার করেন ফিরহাদ। জানান, চিরকুটের মাধ্যমে কখনওই কাউকে নিয়োগ করা যায় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ১৭:০৪
Share:

সতীর্থ উদয়ন গুহ (বাঁ দিকে) ‘পাগলের মতো’ কথা বলছেন বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।

বাম আমলের মন্ত্রী তথা বাবাকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তৃণমূল আমলে মন্ত্রীর পুত্র। এ বার সেই মন্তব্যের জন্য উদয়ন গুহকে একহাত নিলেন তাঁর সহকর্মী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি দাবি করলেন, চিরকুটে কখনওই কাউকে নিয়োগ করা যায় না। সতীর্থ উদয়ন ‘পাগলের মতো’ কথা বলছেন বলেও জানিয়েছেন ফিরহাদ।

Advertisement

শনিবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে উদয়নের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল ফিরহাদকে। সেখানেই তিনি রীতিমতো ঝাঁজিয়ে উঠে বলেন, ‘‘ও কী পাগলের মতো বকছে, আমার জানা নেই। এটা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্যই নেই। কারণ চিরকুটে কোনও দিন লোক ঢোকানো যায় না। একটা আবেদনপত্র লাগে।’’ উদয়ন দাবি করেছে, ৭০-এর দশকে তাঁর বাবার আমলে চিরকুটের মাধ্যমে নিয়োগ হত। ফিরহাদ তা-ও মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আগে যখন সার্ভিস কমিশন বা রিক্রুটমেন্ট রুলস ছিল না, তখনও আমাদের স্কুলগুলিতে দেখেছি, গভর্নিং বডি বসে নিয়োগ করত। একটি প্যানেল তৈরি করত। সেটা ৭০-এর দশকে আমরা দেখেছি।’’

ফিরহাদ এ-ও জানালেন, তাঁকেও অনেকেই চাকরি করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তবে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ ভাবে নিয়োগ হয় না। তাঁর কথায়, ‘‘আমি যখন কাউন্সিলর, তখন অনেকে বলতেন, আরে এক জনকে কর্পোরেশনে ঢুকিয়ে দাও না। ছেলেটা বসে রয়েছে। আমি বলতাম, ‘দিদি, কর্পোরেশনে ও ভাবে লোক ঢোকানো যায় না।’ যখন থেকে ‘রিক্রুটমেন্ট রুলস’ তৈরি হল, তখন থেকে এ ভাবে আর লোক ঢোকানো যায় না।’’

Advertisement

উদয়নের অভিযোগ, যাঁরা আজকে রাস্তায় নেমে ‘যোগ্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে’ বলছেন, তাঁদের পূর্বসূরিরা ‘যোগ্যদের বঞ্চিত করে’ই চাকরি দিয়েছেন। বাম আমলে সর্বক্ষণের কর্মীদের ভাতা না দিতে পেরে তাঁদের স্ত্রীদের জন্য চাকরির ‘বন্দোবস্ত’ করে দেওয়া হত বলেও অভিযোগ করেছেন উদয়ন। বাবার কথা তুলে ধরে উদয়ন বিঁধেছেন বাম আমলকেই।

সম্প্রতি তৃণমূলের তরফে একটি টুইট করা হয়। সেখানে একটি চিঠির প্রতিলিপি পোস্ট করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর ১৯৮৭ সালে চাকরি পাওয়ার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তৃণমূলের সেই অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেন সুজন। ওই চিঠিকে মিলির কাজে যোগদানপত্র বলে দাবি করে সুজন দাবি করেন, বামফ্রন্ট আমলে নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি। সেই আবহে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন কমল-পুত্র উদয়ন। বাবার কথা বলতে গিয়ে উদয়ন বলেন, ‘‘দলের স্বার্থে তিনিও দুর্নীতি করেছেন। এটাকে দুর্নীতি বলব আমি। ৫ টাকা নিলে দুর্নীতি, ৫০ হাজার টাকা বা ৫ লাখ টাকা নিলেও দুর্নীতি। এটা হতে পারে না। আমি এখন আমার বাবাকে বাঁচানোর জন্য বলব যে, বাবা যেটা করেছেন সেটা সঠিক করেছেন, আর এখন অমুক যেটা করছেন, সেটা ভুল করছেন বা সিপিএমের বিধায়ক যেটা করেছিলেন সেটা ভুল? বাবাও তো অনেককে চাকরি করে দিয়েছিলেন।’’

এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন উদয়ন। তিনি বলেন, ‘‘বাবার সামনে বসে তালিকা তৈরি হয়েছিল। বাবা সেই তালিকাকে ‘এনডোর্স’ করে দিয়েছিলেন।’’ এই সূত্রেই উদয়নের ব্যাখ্যা, ‘‘সেখানে তো যোগ্য ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সেটা দুর্নীতির একটা অঙ্গ। এটা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। যারা আজকে রাস্তায় বসে যোগ্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলছে, তাদের পূর্বসূরিরা যোগ্যদের বঞ্চিত করেই চাকরি দিয়েছে।’’

উদয়নের এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছে সিপিএম। এ নিয়ে সুজন বলেন, ‘‘ওঁর কণ্ঠস্বরে হতাশা ফুটে উঠছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা যা করেছেন, তাকে বৈধ প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন উনি। সেটা কোনও ভাবেই মেলে না। এই কথা বলে উনি বাবাকে ছোট করলেন না কি নিজেকে ছোট করলেন, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে এটা নজর ঘোরানোর চেষ্টা।’’ এ বার উদয়নকে কটাক্ষ করলেন তাঁর সতীর্থ মন্ত্রী ফিরহাদও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement