Kolkata Metro

বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলেও আর সুড়ঙ্গে আটকে পড়বে না মেট্রো, নতুন ব্যবস্থা কলকাতার ‘লাইফলাইনে’

দেশের মধ্যে প্রথম কলকাতা মেট্রোয় এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগানো হচ্ছে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলেও সুড়ঙ্গের মধ্যে আর মেট্রোর রেক আটকে পড়বে না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ১৯:০২
Share:

—ফাইল চিত্র।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও এ বার চলবে কলকাতা মেট্রো। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে সুড়ঙ্গে অন্ধকারের মধ্যে প্রাণভয়ে আর অপেক্ষা করতে হবে না মেট্রোর যাত্রীদের। দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ রুটে মেট্রোয় এ বার বসানো হচ্ছে ‘ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম’ (বিইএসএস)। দেশের মধ্যে প্রথম কলকাতা মেট্রোয় এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগানো হচ্ছে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলেও সুড়ঙ্গের মধ্যে আর মেট্রোর রেক আটকে পড়বে না। এই পদ্ধতির সাহায্যে পরের স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে মেট্রোর রেককে। গ্রিড বিপর্যয় হলেও মেট্রো চলাচলে সমস্যা হবে না। আগামী এক বছরের মধ্যেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। রবিবার এই পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, ইনভার্টার এবং অ্যাডভান্স কেমেস্ট্রি সেল ব্যাটারির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে এই ব্যবস্থা। হঠাৎ যদি বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে, তা হলে এই পদ্ধতির সাহায্যে মেট্রোর রেককে পরের স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে। অর্থাৎ সুড়ঙ্গের মধ্যে আর দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না মেট্রোকে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এটা পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা।

নোয়াপাড়া, শ্যামবাজার, সেন্ট্রাল এবং যতীন দাস পার্ক— এই চারটি সাবস্টেশনে বসানো হবে এই প্রযুক্তি। চার মেগাওয়াট চার কোয়াড্রেন্ট ইনভার্টার চালুর জন্য চলতি মাসের ১১ তারিখ একটি দরপত্র প্রকাশ করেছে কলকাতা মেট্রো। ওই ইনভার্টারগুলিতে শক্তি সঞ্চয়ক উপাদান হিসাবে থাকবে লিথিয়াম আয়রন ফসফেট (এলএফপি) অথবা লিথিয়াম টাইটেনিয়াম অক্সাইড (এলটিও)। ওই চারটি মেট্রো স্টেশনে এক মেগা ওয়াটের ইনভার্টার বসানো হবে। এই ব্যবস্থার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে, এমনকি যদি গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তা হলে সুড়ঙ্গে আর আটকে পড়বে না মেট্রোর রেক। ঘণ্টায় ১৫-২০ কিমি গতিতে মেট্রোর রেকটিকে পরের স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে নিরাপদে যাত্রীদের মাঝ-সুড়ঙ্গ থেকে নিয়ে আসা যাবে। রাতে এলএফপি এবং এলটিও ব্যাটারিগুলি চার্জ দেওয়া যাবে।

Advertisement

মেট্রোয় এ বার বসানো হচ্ছে ‘ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম’ (বিইএসএস)। —নিজস্ব চিত্র।

শুধু যাত্রী সুরক্ষাই নয়, মেট্রোর বিদ্যুৎ খরচেও সাশ্রয় হবে এই ব্যবস্থায়। ব্যস্ত সময়ে মেট্রো চালাতে ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। বিইএসএস ব্যবস্থায় চার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা জোগাবে। ফলে ব্যস্ত সময়ে মেট্রো চালানোর জন্য কম পরিমাণে বিদ্যুৎ কিনতে পারবেন কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর খরচ অনেকটাই কমবে। মেট্রো চলাচালের ব্যস্ত সময়ে বছরে ২৫ লক্ষ টাকা সাশ্রয় করতে পারবে এই ব্যবস্থা। অন্য সময়ে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় হতে পারে।

মেট্রোয় আগুন লাগলে এই ব্যবস্থাকে কাজে লাগানো যাবে। সেক্ষেত্রে সুড়ঙ্গের মধ্যে বায়ু চলাচলের জন্য যে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের দরকার, তার ব্যবস্থা করা যাবে এই পদ্ধতিতে। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে সুড়ঙ্গের মধ্যে মেট্রো আটকে পড়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। এর জেরে মেট্রো সফর ঘিরে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। নতুন এই ব্যবস্থার ফলে সেই আতঙ্ক যেমন কাটবে, তেমনই যাত্রীদের সুরক্ষাও আরও জোরদার করা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement