যোগী আদিত্যনাথ। — ফাইল চিত্র।
যাঁরাই সত্য বলছেন, বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চাইছেন, তাঁদেরকেই বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে কণ্ঠরোধের চেষ্টা চলছে! ধনখড়-শেখরের জোড়া অপসারণের দাবির আবহে এমনটাই অভিযোগ করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এ বারেও অভিযোগের তির সেই বিরোধীদেরই দিকে!
সম্প্রতি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউনিফর্ম সিভিল কোড) নিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি শেখরকুমার যাদবের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পরেই তাঁকে বরখাস্ত করার নির্দেশ এসেছে। পাশাপাশি, বিগত বেশ কয়েক দিন ধরেই ভারতের উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে অপসারণের দাবি উঠেছে। সে নিয়েও বিস্তর বিতর্ক চলছে। সেই আবহেই জোড়া অপসারণের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। শনিবার বিশ্ব হিন্দু অর্থনৈতিক ফোরামের এক সভায় যোগী বলেন, ‘‘যারাই সত্য কথা বলে, এরা (বিরোধীরা) তাদেরকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। অথচ এরা না কি সংবিধানের কথা বলে! এদের দ্বিচারিতা দেখুন!’’ যোগী আরও বলেন, ‘‘দেশে একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি থাকা উচিত নয়? বিশ্বজুড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় যা বলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা চলে। ভারত বলছে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈষম্যের অবসান হওয়া উচিত! তারা (কংগ্রেস) অন্যদের উপরেও চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কারণ সংবিধানের শ্বাসরোধ করা তাদের পুরানো অভ্যাস।”
গত রবিবার প্রয়াগরাজে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিচারপতি শেখরকুমার বলেছিলেন, ‘‘এ দেশটা হিন্দুস্থান। সংখ্যাগরিষ্ঠদের ইচ্ছা অনুযায়ীই দেশটা চলবে। কাঠমোল্লাদের থেকে সাবধান থাকুন!’’ বিচারপতির ওই মন্তব্যের পরেই প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ খোলেন বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে। এর পরেই ওই ঘটনায় পদক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত। অন্য দিকে, ধনখড়কে অপসারণের জন্য সংসদে একটি প্রস্তাব এনে ভোটাভুটি করতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ। এর আগে বহু বার ধনখড়ের বিরুদ্ধে বিরোধী সাংসদদের বক্তৃতায় বাধা দেওয়া, তাঁদের বক্তব্য পেশের জন্য সময় না দেওয়া এবং শাসক শিবিরের সাংসদদের বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার মতো অভিযোগ এনেছেন বিরোধীরা। মঙ্গলবার এই বিষয়ে নোটিসটি তাঁরা রাজ্যসভার সচিবালয়ে পেশ করেছেন। এ বার দু’জনেরই পাশে দাঁড়ালেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী!