(বাঁ দিকে) গ্রেফতার অতুলের স্ত্রী নিকিতা, তাঁর মা এবং ভাই। বেঙ্গালুরুর আত্মঘাতী যুবক অতুল সুভাষ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
স্ত্রীর দায়ের করা বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় হয়রানির জেরে অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন বেঙ্গালুরুর যুবক অতুল সুভাষ। অভিযোগ এমনটাই। তা নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মাঝে এ বার অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়াকে গ্রেফতার করল বেঙ্গালুরু পুলিশ! পাশাপাশি, গ্রেফতার হলেন নিকিতার মা নিশা সিংহানিয়া এবং ভাই অনুরাগ সিংহানিয়াও। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
অতুল-মামলাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হতেই নড়েচড়ে বসে বেঙ্গালুরু পুলিশ। প্রথমে তিন দিনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের বাসিন্দা নিকিতা এবং তাঁর পরিবারকে বেঙ্গালুরুর মারাঠাহল্লি থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়। তদন্তের স্বার্থে উত্তরপ্রদেশেও পৌঁছে যায় বেঙ্গালুরু পুলিশের একটি দল। এর পরেই গ্রেফতারি এড়াতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নিকিতারা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার ওই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে পেশ করার পর তাঁদের হেফাজতে নেবে পুলিশ।
অতুল আত্মহত্যা করার পর থেকেই বার বার নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। সোমবার ভোরে নিজের ঘর থেকে বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত যুবক অতুলের দেহ উদ্ধার হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিদায়ী ভিডিয়ো ছাড়াও ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট রেখে যান অতুল, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ! উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের পারিবারিক আদালতে অতুল-নিকিতার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। অতুলের পরিবারের অভিযোগ, মামলা চলাকালীন টাকা আদায় করতে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে পণ চাওয়া, অস্বাভাবিক যৌনতা, বধূ নির্যাতন এবং খুনের চেষ্টার মতো নানা গুরুতর অভিযোগে অতুলকে ফাঁসানো হয়। নিকিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন তাঁরা। মামলা রুজু হয় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৮ এবং ৩(৫) ধারায়। ওই মামলাতেই নিকিতা-সহ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবারই বেঙ্গালুরু পুলিশের কমিশনার বি দয়ানন্দ আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, ঘটনায় তদন্ত চলছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই তাঁদের লক্ষ্য।