লালু-মুলায়ম-অখিলেশ একসঙ্গে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
ভোট যত এগিয়ে আসছে, উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে কাটাছেঁড়া ততই বাড়ছে। লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) নেতৃত্বের সাক্ষাতে এ বার তাঁদের জোটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা জোর পেল। সোমবার দিল্লিতে মুলায়ম সিংহ যাদব এবং অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন লালু।
তাঁরা যদিও এই সাক্ষাৎকে নেহাত ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলে উল্লেখ করছেন। কিন্তু গেরুয়া শিবিরে ভোটের তৎপরতা যখন চরমে, এই সাক্ষাতকে কাকতালীয় বলে মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। তাঁদের যুক্তি, এখনও পর্যন্ত পাঁচ বার যাদব মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যের ভোটারদের ৯ শতাংশই যাদব। ২০২৪-এ বিজেপি-র বিরুদ্ধে এই যাদব ভোটকে একত্রিত করার লক্ষ্যে এসপি যদি রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি)-র হাত ধরে, সে ক্ষেত্রে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে হারাতে বদ্ধপরিকর হলেও, কংগ্রেস বা মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), দুই দলের কারও হাত ধরতে চান না বলে একাধিক বার জানিয়েছেন অখিলেশ। দলীয় সূত্রে খবর, বড় রাজনৈতিক দলগুলির পরিবর্তে ছোট দলগুলিকে নিয়েই রণকৌশল সাজাতে আগ্রহী অখিলেশ, বিশেষ করে ২০১৭-র ভরাডুবির কথা স্মরণ করে এবং সম্প্রতি বিহারে কংগ্রেসের কারণ আরজেডি-র বিজয়রথ থমকে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে। সেই পরিস্থিতিতে লালু, মুলায়ম ও অখিলেশের সাক্ষাৎকে একেবারে অরাজনৈতিক আখ্যা দিতে নারাজ অনেকেই।
পাশাপাশি অবস্থান করলেও, উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে সেই অর্থে কোনও ভূমিকা নেই আরজেডি-র। যদিও মুলায়মের পরিবারের সঙ্গে বৈবাহিক আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে লালুর। তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য বিবাহসূত্রে মুলায়ম পরিবারে গিয়ে উঠেছেন। তবে ফোনে আড়ি পাতা-কাণ্ডে যখন উত্তাল রাজধানী, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোট নিয়েও জোর আলোচনা চলছে, সেই সময় দু’জনের আলোচনায় রাজনীতি উঠে আসেনি, তা মানতে পারছেন না কেউই।
এসপি নেতা রামগোপাল যাদব নিজেই বলেন, ‘‘মুলায়মজি অসুস্থ ছিলেন। তাঁর শরীরের খোঁজ নিতে এসেছিলেন লালুজি। তবে দেশের দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিক মুখোমুখি হলে, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক।’’ মুলায়মের সঙ্গে সাক্ষাতের পর লাল নিজেও টুইটারে লেখেন, ‘দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ সমাজবাদী বন্ধু শ্রী মুলায়ম সিংহজির স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলাম। কৃষকদের অধিকার, অসাম্য, ধনী-দরিদ্র বৈষম্য নিয়ে আমরা দু’জনেই সমান ভাবে উদ্বিগ্ন।’