—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তৃতীয় সন্তানের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ‘না’ করেছিল সংস্থা। ১২ বছর আগের সেই মামলায় মহিলাকে মাতৃত্বকালীন সময়ের সবরকম সুযোগসুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিল বম্বে হাই কোর্ট। সন্তানসম্ভবা কর্মীর প্রতি ওই সংস্থার আরও সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছে আদালত।
২০১২ সালে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই)-তে কর্মরত ছিলেন মহিলা। সেপ্টেম্বর মাসে সন্তানসম্ভবা অবস্থায় মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য তিনি আবেদন করেন। ওই মহিলার প্রথম বিবাহে এক সন্তান ছিল। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর সহানুভূতির ভিত্তিতে সেই চাকরি তাঁকে দেওয়া হয়। এর পর দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন মহিলা। দ্বিতীয় বিবাহে তাঁর আরও দুই সন্তান হয়। অভিযোগ, দ্বিতীয় বিবাহের দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের আগে সংস্থার কাছে মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন জানিয়েছিলেন মহিলা। কিন্তু তাঁর আবেদন নাকচ করে দেন কর্তৃপক্ষ। এর পর ২০১৫ সালে সংস্থার কর্মী সংগঠন এবং ওই মহিলা ন্যায্য অধিকারের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন। বম্বে হাই কোর্টে নয় বছর ধরে সেই মামলা চলেছে।
এএআই-এর যুক্তি ছিল, মহিলা তৃতীয় বার মা হতে চলেছেন। তাঁদের সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও মহিলা কর্মীর দুইয়ের অধিক সন্তান হলে সে ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি পাওয়া যাবে না। সেই নিয়ম অনুযায়ী মহিলার আবেদন নাকচ করা হয়েছিল বলে আদালতে জানান সংস্থার আইনজীবী।
বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি এ এস চান্দুরকর এবং বিচারপতি জিতেন্দ্র জৈনের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সম্মান করা উচিত। তাঁদের জীবনে সন্তানধারণ অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া। তাই কোনও মহিলা কর্মীর সন্তানের জন্মের জন্য কর্মক্ষেত্র থেকে যা যা করা উচিত, সংস্থার মালিকের সহানুভূতির সঙ্গে তা করা উচিত। সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে এক জন মহিলা যখন কর্মক্ষেত্রে নিজের কর্তব্য পালন করেন, তাঁর শারীরিক সমস্যাগুলি বিবেচনা করা উচিত কর্তৃপক্ষের।’’
২০১২ সালে মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করার আগে ২০০৯ সালে আরও এক সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মহিলা। সে সময়ে তিনি ওই সংস্থাতেই কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সে সময়ে তিনি সন্তান জন্মের সময়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি নেননি। প্রথম বার ওই ছুটির আবেদন জানিয়েছেন ২০১২ সালেই। আদালত জানিয়েছে, মহিলার ছুটির আবেদন নাকচ করা উচিত হয়নি সংস্থার। তাঁকে বর্তমানে আট সপ্তাহের মধ্যে তাঁর পাওনা মাতৃত্বকালীন ছুটির সবরকম সুযোগসুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।