নাগার্জুন সাগর বাঁধ। — ফাইল চিত্র।
এ যেন সীমান্তে শত্রুসেনার হামলা! গভীর রাতে কার্যত সেই কায়দাতেই সীমানা টপকে পড়শি রাজ্য তেলঙ্গনায় ঢুকে পড়ল অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের একটি দল। দ্রুত কৃষ্ণা নদীর নাগার্জুন সাগর বাঁধের দখল নিল তারা। এর পর বাঁধের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের আপত্তি উড়িয়ে খুলে দিল বাঁধের গেট। ‘দখল’ করল কয়েক হাজার কিউসেক জল।
বুধবার রাত ২টো নাগাদ অন্ধ্র পুলিশের এই ঝটিতি অভিযান ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তেলঙ্গানায়। বৃহস্পতিবার সে রাজ্যে ছিল বিধানসভা ভোট। রবিবার গণনা। তার আগেই প্রশাসনিক ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে অন্ধ্র পুলিশ ‘অপারেশন’ চালিয়েছে বলে অভিযোগ। অন্ধ্র পুলিশের ৫০০-রও বেশি অফিসার এবং কনস্টেবল ‘বাঁধ দখল অভিযানে’ নেমেছিলেন।
তেলঙ্গানার মুখ্যসচিব শান্তি কুমারী বলেন, ‘‘বাঁধের সিসিটিভি ভেঙে, জোর করে ৫ এবং ৭ নম্বর লকগেট খুলে খালে জল ঢুকিয়েছে অন্ধ্র পুলিশ। বেআইনি ভাবে প্রায় ৫,০০০ কিউসেক জল দখল করা হয়েছে। ঘটনার জেরে নলগোন্ডা, মেহবুবনগর, নগরকুর্নুলের মতো দক্ষিণ তেলঙ্গানার জেলাগুলিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।”
কৃষ্ণা নদী পরিচালন পর্ষদের অভিযোগের জেরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবিলম্বে ২৮ নভেম্বরের আগেকার ‘স্থিতাবস্থা’য় ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে অন্ধ্র সরকারকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা দু’রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে বৃহস্পতি এবং শুক্রবারের বৈঠকে প্রস্তাব দেন, ভবিষ্যতে অশান্তির সম্ভাবনা এড়াতে নাগার্জুন সাগর বাঁধের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের হাতে তুলে দেওয়া হোক। দু’রাজ্যই তা মেনে নিয়েছে।
যদিও ওয়াইএসআর কংগ্রেস পরিচালিত অন্ধ্র সরকারের সেচমন্ত্রী অম্বাতি রামবাবুর দাবি, দ্বিপাক্ষিক জলবণ্টন চুক্তি মেনেই জল নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনও চুক্তি লঙ্ঘন করিনি। কৃষ্ণার জলের ৬৬ শতাংশ অন্ধ্রপ্রদেশের এবং ৩৪ শতাংশ তেলঙ্গানার প্রাপ্য। আমরা এক ফোঁটা জলও ব্যবহার করিনি যা আমাদের প্রাপ্য নয়।’’