কলরাজ মিশ্র এবং বসুন্ধরা রাজে। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
ভোটগণনার আগে জল্পনা উস্কে রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। শুক্রবার রাতের এই বৈঠক নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ২০১৭ সালে গোয়া এবং মণিপুরের ‘ছক’ মেনেই জয়পুরের কুর্সি দখলের ছক কষছে বিজেপি? যদিও বসুন্ধরা বা বিজেপির তরফে বৈঠকের আলোচ্যসূচি সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
রাজস্থান-সহ পাঁচ রাজ্যের এই বিধানসভা নির্বাচন ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে সবচেয়ে বড় ‘যুদ্ধ’। ‘দিল্লি দখলের সেমিফাইনাল’ হিসেবেই এই লড়াইকে ব্যাখ্যা করছে রাজনৈতিক শিবির। বৃহস্পতিবার সেই সেমিফাইনালের বুথফেরত সমীক্ষাগুলিতে ইঙ্গিত মিলেছে, পড়শি রাজ্য মধ্যপ্রদেশের মতোই কংগ্রেস-বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে রাজস্থানেও। সে ক্ষেত্রে ‘নির্ণায়ক’ হতে পারে নির্দল এবং ছোট দলগুলি।
২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা ১০১। সেখানে এ বার ভোট হয়েছিল ১৯৯টি আসনে (কংগ্রেস প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনে ভোট স্থগিত রয়েছে)। একাধিক বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত ২০১৮-র মতোই এ বার সেখানে ‘নির্ণায়ক’ হতে পারেন নির্দল এবং ছোট দলগুলির বিধায়কেরা। আশির দশক থেকে ধারাবাহিক ভাবে পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের প্রথা মেনে চলা রাজস্থানে সত্যিই যদি দ্বিতীয় দফায় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফেরাতে পারেন, তা হলে লোকসভা ভোটের আগে তা বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এর আগে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে ২০১৩-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে মাত্র ২১টি আসনে জেতাতে পেরেছিলেন গহলৌত।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে রাজস্থানের ২০০টি আসনের মধ্যে ১০০টিতে জিতেছিল কংগ্রেস। সহযোগী আরএলডি একটিতে। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল ৭৩টি আসন। বিএসপি ৬, আরএলপি ৩, বিটিপি ২, সিপিএম ২ এবং নির্দল প্রার্থীরা ১৩টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন। ভোটের পরে নির্দল এবং বিএসপি বিধায়কদের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন গহলৌত। এ বার অনেকগুলি বুথফেরত সমীক্ষাই পূর্বাভাস দিয়েছে, গত বারের মতো ত্রিশঙ্কু হতে পারে রাজস্থান। আর সেখানেই আলোচনায় চলে আসছে মণিপুর-গোয়ার প্রসঙ্গ।
২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে ওই দুই রাজ্যে কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কিন্তু একক বৃহত্তম দল হয়েছিল কংগ্রেস। যদিও নজিরবিহীন ভাবে সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্যের রাজ্যপাল সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপিকে। পরে বিধায়ক ভাঙিয়ে গরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল বিজেপি। সে সময় রাজ্যপালদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর অভিযোগ উঠেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে, রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ উত্তরপ্রদেশ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। আর তাই শঙ্কা রয়েছে বিরোধীদের।