গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তিন কারণে বৃহস্পতিবার রাতে স্বস্তি পেতে পারেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস দেখে। লোকসভা ভোটের সেমিফাইনালে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের কড়া টক্করের পাশাপাশি সমীক্ষাগুলির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনার কথা। অবশ্য ভারতে ভোটের ইতিহাস বলছে, আসল ফলের সঙ্গে বুথফেরত সমীক্ষা অনেক সময়েই মেলে না। তবে ফলাফল মিলে যাওয়ার উদাহরণও কম নয়। আসল ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী রবিবার (৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।
এই বিধানসভা নির্বাচন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সবচেয়ে বড় ভোটযুদ্ধ। ‘দিল্লি দখলের সেমিফাইনাল’ হিসেবেই এই লড়াইকে ব্যাখ্যা করছে রাজনৈতিক শিবির। বৃহস্পতিবার তেলঙ্গানায় ভোটগ্রহণ পর্ব শেষের পরে সেই সেমিফাইনালের সামগ্রিক ফলের বুথফেরত ইঙ্গিত মিলেছে। তার ইঙ্গিত, কংগ্রেসের দখলে থাকা ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানের পাশাপাশি তেলঙ্গানাতেও এ বার ধাক্কা খেতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল। পাশাপাশি, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে এ বার শাসক দলের ক্ষমতায় ফেরার পূর্বাভাস মেলায় ‘প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার’ পরিবর্তে ‘প্রতিষ্ঠানমুখী’ প্রবণতা স্পষ্ট। ১২ বছর বাংলায় ক্ষমতায় থাকা তৃণমূলনেত্রীর কাছে যা লোকসভা ভোটের আগে স্বস্তির বিষয়। তা ছাড়া, হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে মহিলা ভোটারদের ‘নির্ণায়ক’ ভূমিকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি বুথফেরত সমীক্ষায়। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের সুফল পেয়ে বাংলায় নীলবাড়ির লড়াইয়ে জেতা মমতার কাছে যা স্বস্তি আনতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস একতরফা জয় পেলেও এ বার সেখানে বিজেপি অনেকটাই লড়াইয়ে ফিরতে পারে বলে ইঙ্গিত বুথফেরত সমীক্ষায়। এমনকি, এবিপি নিউজ-সি ভোটার এবং ইন্ডিয়া টু়ডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার মতো কয়েকটি সমীক্ষার ইঙ্গিত, ফল ভাল হলে সে রাজ্যের ৯০টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদু সংখ্যা ৪৬ ছুঁয়ে ফেলতে পারে বিজেপি। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে দেড় দশকের বিজেপি শাসনের ইতি ঘটিয়ে প্রথম বার বিধানসভা ভোটে জিতে ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। রাজ্যের ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬৮টি জিতেছিল তারা। বিজেপি মাত্র ১৫টি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত জোগীর দল ‘জনতা কংগ্রেস ছত্তীসগঢ়’ (জেসিসি) পাঁচটি এবং তার সহযোগী বিএসপি দু’টি বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছিল।
এ বার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রভাবশালী আদিবাসী নেতা অরবিন্দ নেতম কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল ‘হামার রাজ পার্টি’ গড়ে জনজাতি প্রভাবিত অধিকাংশ আসনে প্রার্থী দেওয়ায় সুবিধা পেতে পারে বিজেপি। তা ছাড়া, মূলত আদিবাসী খ্রিস্টানদের সংগঠন সর্ব আদি দল এই প্রথম বার ভোটে লড়তে নামায় বস্তার অঞ্চলে বিড়ম্বনা বাড়তে পারে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের দলের। এ ছাড়া জেসিসি-বিএসপির জোট অনগ্রসর (ওবিসি) ও দলিত ভোট কেটে কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বাড়াতে পারে বলে বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত। ২০১৮ সালে ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস ৪৩ এবং বিজেপি ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এ বার সেই ১০ শতাংশের ব্যবধান অর্ধেকের নীচে নেমে আসতে পারে বলে প্রায় সবক’টি বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। টুডেজ চাণক্যের হিসাবে কংগ্রেস ৪৫, বিজেপি ৪০ এবং অন্যেরা ১৫ শতাংশ ভোট পেতে পারে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেস-বিজেপির কড়া টক্করের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষায়। সেখানে এ বার ভোট হয়েছিল ১৯৯টি আসনে (কংগ্রেস প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনে ভোট স্থগিত রয়েছে)। একাধিক বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত ২০১৮-র মতোই এ বার সেখানে ‘নির্ণায়ক’ হতে পারেন নির্দল এবং ছোট দলগুলির বিধায়কেরা। আশির দশক থেকে ধারাবাহিক ভাবে পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের প্রথা মেনে চলা রাজস্থানে সত্যিই যদি দ্বিতীয় দফায় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফেরাতে পারেন, তা হলে লোকসভা ভোটের আগে তা বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এর আগে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে ২০১৩-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে মাত্র ২১টি আসনে জেতাতে পেরেছিলেন গহলৌত।
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে রাজস্থানের ২০০টি আসনের মধ্যে ১০০টিতে জিতেছিল কংগ্রেস। সহযোগী আরএলডি একটিতে। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল ৭৩টি আসন। বিএসপি ৬, আরএলপি ৩, বিটিপি ২, সিপিএম ২ এবং নির্দল প্রার্থীরা ১৩টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন। আসনের ফারাক ২৭ হলেও কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল ১ শতাংশের সামান্য বেশি — ৩৯.৩ এবং ৩৮.১ শতাংশ। ইন্ডিয়া টু়ডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার বুথফেরত সমীক্ষা বলছে এ বার কংগ্রেস ৪২, বিজেপি ৪১ এবং নির্দল ও অন্যেরা ১৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের জোধপুরের চেয়ে সচিন পাইলটের পূর্ব রাজস্থানের টঙ্ক-সওয়াই মাধোপুর এলাকায় কংগ্রেসের ফল অপেক্ষাকৃত ভাল হতে পারে বলে ইঙ্গিত সমীক্ষায়।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে মধ্যপ্রদেশ বিজেপি এ বার কংগ্রেসকে টেক্কা দিতে পারে বলে কয়েকটি বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত। ইন্ডিয়া টু়ডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার পূর্বাভাস বিজেপি সেখানে কংগ্রেসের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি ভোট পেতে পারে। ২৩০ আসনের বিধানসভায় ১১৬টিতে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদু সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলতে পারে বিজেপি। মূলত মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে সমীক্ষার ইঙ্গিত। ‘পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী’ হিসাবে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী কমল নাথের চেয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির মামা।
তা ছাড়া, ‘লাডলি বহেন যোজনা’র সুফল সেখানে পেতে পারে বিজেপি। পুরুষ ভোটারদের ক্ষেত্রে সমানে সমানে টেক্কা দিলেও মহিলা ভোটারদের সমর্থনের অঙ্কে বিজেপি অনেকটা এগিয়ে রয়েছে বলে বুথফেরত সমীক্ষাগুলির একাংশের ইঙ্গিত। তা ছাড়া, মায়াবতীর বিএসপি এবং ‘ইন্ডিয়া’র শরিক অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি দলিত ও অনগ্রসর ভোট কেটে বেশ কিছু আসনে বিজেপির সুবিধা করে দিতে পারে বলে পূর্বাভাস। ঘটনাচক্রে, রাজস্থানেও মহিলা ভোটারেরা এ বার ‘নির্ণায়ক’ হতে পারেন। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২০২১ সালে বাংলায়। নীলবাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের ক্ষেত্রে। পূর্বাভাস মিলে গেলে আগামী লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলনেত্রীর কাছে তা ‘ইতিবাচক বার্তা’ বলেই মনে করছেন ভোট পণ্ডিতদের একাংশ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজের মতোই মধ্যপ্রদেশে শিবরাজও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সুনজরে নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ১৬৫টি, কংগ্রেস ৫৮টি। দু’দলের ভোট শতাংশের ফারাক ছিল প্রায় ৯ শতাংশ (বিজেপি প্রায় ৪৫ শতাংশ। কংগ্রেস ৩৬ শতাংশের সামান্য বেশি)। কিন্তু ২০১৮-র বিধানসভা ভোটে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে টেক্কা দেয় কংগ্রেস। বিজেপির ঝুলিতে যায় ৪০.৮ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস ১১৪, বিজেপি ১০৯, বিএসপি ২ এবং নির্দল ও অন্যেরা ৫টি আসনে জেতে। শেষ পর্যন্ত বিএসপি এবং নির্দলদের সমর্থনে সরকার গড়ে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন কমল নাথ। কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের নেতৃত্বে ২০২০-র মার্চে ২২ জন কংগ্রেস বিধায়কের বিদ্রোহের জেরে গদি হারান কমল। চতুর্থ বারের জন্য ভোপালের কুর্সি গিয়েছিল শিবরাজের হাতে। এ বার জ্যোতিরাদিত্যের ‘গড়’ চম্বল-গোয়ালিয়রে বিজেপি কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারে বলে একাধিক বুথসমীক্ষার পূর্বাভাস।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দক্ষিণ ভারতের রাজ্যে তেলঙ্গানায় কংগ্রেস এ বার ক্ষমতাসীন ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র সঙ্গে সমানে সমানে টেক্কা দিতে পারে বলে কয়েকটি বুথ ফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত। গত এক দশকের মুখ্যমন্ত্রী কলভাকুন্তলা চন্দ্রশেখর রাওয়ের (কেসিআর নামেই যিনি সমধিক পরিচিত) দল হায়দরাবাদের কুর্সি দখলের হ্যাটট্রিক করতে পারবে না বলে টুডেজ চাণক্যের দাবি। তাদের পূর্বাভাস, দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা পেতে পারে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের দল। অন্য দিকে, গত লোকসভা ভোটে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা বিজেপি আবার নেমে যেতে পারে তিন নম্বরে।
টিভি৯ ভারতবর্ষ-জন কি বাত অবশ্য পূর্বাভাস দিয়েছে, ৪৯-৫৯, বিআরএস ৪৮-৫৮, বিজেপি ৫-১০ এবং নির্দল ও অন্যেরা ৬-৮টি আসনে জিততে পারে। ভোট পণ্ডিতদের একাংশ মনে করছেন, কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ‘নির্ণায়ক’ হয়ে উঠতে পারে বিজেপি এবং ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘ভূমিকা’। সে ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন কেসিআর। মিম প্রধান আসাদউদ্দিন আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, যেখানে তাঁদের প্রার্থী নেই সেখানে বিআরএস প্রার্থীদের সমর্থন করা হবে। তাঁর দল পুরনো হায়দরাবাদ এলাকায় ৬-৭টি আসনে জিততে পারে বলে পূর্বাভাস।
২০১৮-র বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি বা টিআরএস ৮৮টি আসনে জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছিল। এ বার সেই দলের নাম বদলে হয়েছে ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)। এ ছাড়া কংগ্রেস ১৯ এবং তার সহযোগী টিডিপি দু’টি আসনে জিতেছিল। ওয়েইসির মিম ৭, বিজেপি ১ এবং অন্যেরা জিতেছিল ৪টিতে। টিআরএস প্রায় ৪৭, কংগ্রেস ২৮, টিডিপি সাড়ে ৩ এবং বিজেপি প্রায় ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। দক্ষিণ তেলঙ্গানার মেহবুবনগর, নলগোন্ডা এবং নগরকুর্নুলের মতো জেলাগুলিতে টিআরএসের সঙ্গে কিছুটা টক্কর দিলেও রাজধানী হায়দরাবাদ এবং মধ্য ও উত্তর তেলঙ্গানায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল কংগ্রেস-টিডিপি-সিপিআই-তেলঙ্গানা জন সমিতির জোট ‘মহাকুটুমি’। এ বার তেলঙ্গানার ভোটে টিডিপি লড়ছে না। চন্দ্রবাবু জাতীয় স্তরেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন।
ওই বিধানসভা ভোটের ছ’মাসের মধ্যেই অবশ্য তেলঙ্গানার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটা বদলে গিয়েছিল। কংগ্রেসকে পিছনে ঠেলে দু’নম্বরে উঠে এসেছিল বিজেপি। সে রাজ্যের ১৭টি লোকসভা আসনের মধ্যে তারা জিতেছিল চারটিতে। কংগ্রেস তিনটি। মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের দল ন’টি এবং মিম একটিতে জয়ী হয়েছিল। তার পরের বছর হায়দরাবাদ পুরসভা ভোটেও বজায় ছিল বিজেপির অগ্রগতি। চার থেকে বেড়ে তাদের কাউন্সিলর সংখ্যা হয় ৪৮! দেড়শো আসনের পুরসভায় ৫৫টিতে জিতে কোনওমতে মিমের সমর্থনে বোর্ড দখল করে কেসিআরের দল। কিন্তু এ বারের ভোটে গোড়া থেকেই প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে ছিল বিজেপি। বুথফেরত সমীক্ষার ফলেও তার ছাপ স্পষ্ট।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মিজ়োরামের ৪০ আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদু সংখ্যা ২১। নির্বাচনী ইতিহাস বলছে, প্রতি দশকে মিজ়োরামে সরকার পাল্টায়। সেই ধারা মেনেই ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সরকার পাল্টে দিয়েছিলেন মিজ়োরা। ক্ষমতায় এসেছিল এমএনএফ। অর্থাৎ, ভোটের ধারা মেনে এ বারও তাদের ক্ষমতায় থাকার কথা। ২০১৮-র ওই ভোটে এমএনএফ মিজ়োরামের ৪০টি আসনের মধ্যে জিতেছিল ২৭টিতে। ২০০৮ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস মাত্র ৪টি আসনে জিতে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছিল। একদা ইন্দিরা গান্ধীর দেহরক্ষী দলের নেতা, প্রাক্তন আইপিএস লালডুহোমার সদ্যগঠিত জেডপিএম জিতেছিল আটটি আসনে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, এ বারও সেখানে কংগ্রেসের ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা নেই। বরং আরও ভাল ফল করতে পারে জেডপিএম। টিভি৯ ভারতবর্ষ-জন কি বাত সমীক্ষা অনুযায়ী তারা পেতে পারে ৩৮ থেকে ৪২ শতাংশ ভোট। শাসক এমএনএফ ২০-২৪ শতাংশ এবং কংগ্রেস ৩০ থেকে ৩১ শতাংশ ভোট পেতে পারে। অন্য দিকে এবিপি নিউ-জি ভোটার সমীক্ষা অনুযায়ীও সেখানে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার সম্ভাবনা। একই ইঙ্গিত নিউজ১৮ ইন্ডিয়ার সমীক্ষাতেও।