কেন্দ্রের তরফে কৃষক নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
আগামী মাসেই আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইল কেন্দ্র। শনিবার খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করেছে কেন্দ্রের একটি প্রতিনিধি দল। এর পরেই কেন্দ্রের তরফে কৃষক নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কৃষকেরা রাজি হলে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই বৈঠক হতে পারে।
শনিবার খানাউড়ি সীমানায় ভারতের বন পরিষেবা আধিকারিক তথা কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দফতরের যুগ্মসচিব প্রিয় রঞ্জনের নেতৃত্বে কেন্দ্রের একটি দল কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। সীমানার পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর অনশনরত কৃষকনেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়ালের সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা। প্রিয় রঞ্জন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ডাল্লেওয়ালের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর পরেই আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও বৈঠকে যাবেন কি না, গেলে কৃষকদের প্রতিনিধি হিসাবে কারা যাবেন, সে সব নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু স্পষ্ট করে জানাননি কৃষক নেতারা। শনিবার এ নিয়ে দু’ঘণ্টার বৈঠকও করেছেন তাঁরা। বৈঠকের পর কৃষক নেতা কাকা সিংহ কোটালা জানিয়েছেন, প্রস্তাবটি নিয়ে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (অরাজনৈতিক) এবং কিষাণ মজদুর মোর্চার মধ্যে আলোচনা চলছে। আলোচনার পর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষিঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসেছেন কৃষকেরা। নভেম্বরের শেষ থেকেই কৃষকেরা শম্ভু সীমানা থেকে দফায় দফায় দিল্লির উদ্দেশে মিছিল করে এগোনোর চেষ্টা করেছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি ছিল প্রশাসনও। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভোর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।
এলাকায় জারি হয়েছিল ১৬৩ ধারা। কৃষকেরা ব্যারিকেড টপকে এগোতে গেলে তাঁদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে পুলিশের। ছোড়া হয় জলকামান, কাঁদানে গ্যাস। তাই বার বারই কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর পর পঞ্জাবে ‘রেল রোকো’ কর্মসূচিও পালন করেছেন কৃষকেরা। মাঝে শম্ভু সীমান্তেই আত্মহত্যা করেছেন দুই কৃষকনেতা। তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। দাবি আদায়ে খানাউড়ি সীমান্তে গত ২৬ নভেম্বর আমরণ অনশন শুরু করেন কৃষক নেতা ডাল্লেওয়াল। এর পরেই আন্দোলন নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। সেই অনশনের ৫৪ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। ডাল্লেওয়ালের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। কিন্তু এখনও অনশন ভাঙেননি তিনি। সেই আবহেই এ বার কৃষকদের প্রতি সুর নরম করল কেন্দ্র।