অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তপ্ত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পরিস্থিতি। শনিবার সন্ধ্যায় আরও এক জুনিয়র ডাক্তারকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়। এর পরেই রাত ১০টা নাগাদ অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের দাবি, যত ক্ষণ না পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি)-দের বিরুদ্ধে সাসপেনশন এবং এফআইআর প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁরা এই অনশন চালিয়ে যাবেন।
স্যালাইন-কাণ্ডের জেরে আগেই হাসপাতালের জুনিয়র-সিনিয়র নির্বিশেষে মোট ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এর পর শনিবার সন্ধ্যায় আরও এক জুনিয়র ডাক্তারকে সাসপেন্ড করা হয়। তালিকায় মোট ১৩ জনের মধ্যে রয়েছেন সাত জন জুনিয়র ডাক্তার। এ সব নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আংশিক কর্মবিরতির পর শনিবার তাঁরা ঘেরাও করেন হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষ এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ)-কে। এর পরেই তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভে বসার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পাঁচ প্রসূতি। অভিযোগ, স্যালাইন নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। পরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অসুস্থ হয়ে পড়া প্রসূতিদের এক জনের সন্তানও প্রাণ হারায়। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের দিকে আঙুল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির পরেও ওই প্রসূতি এবং শিশুকে বাঁচানো যায়নি। কারণ, চিকিৎসকেরা তাঁদের কর্তব্য পালন করেননি। এর পর কর্মবিরতির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই স্ত্রী রোগ এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের ২২ জন জুনিয়র ডাক্তার কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে। শুক্রবার প্রায় ন’ঘণ্টা জিবি (জোনারেল বডি) বৈঠক হয়। বৈঠকের শেষে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, মানবিকতার কারণে কর্মবিরতি ঘোষণা থেকে সরেছেন। তবে আংশিক কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তাঁরা। ভবিষ্যতে পূর্ণ কর্মবিরতিতেও যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।