প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাষ্ট্রপতি ভবনে রবিবার (৯ জুন) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে চরম ব্যস্ততা দিল্লি জুড়ে। মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিতদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কড়া ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে দেশের রাজধানীকে। যা দেখে দিল্লিবাসীর একাংশ তুলনা টানছেন গত বছরের জি২০ শীর্ষবৈঠকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার।
রাষ্ট্রপতি ভবন জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা সওয়া ৭টায় ভবনের উঠোনে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর সদস্যদের শপথ শুরু হবে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, শপথস্থল এবং আশপাশের অঞ্চলকে শনিবার থেকেই ঘিরে ফেলা হচ্ছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে। তার সব থেকে বাইরের স্তরে থাকবে দিল্লি পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী, দ্বিতীয় স্তরে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডোরা। সবচেয়ে ভিতরের বলয়ে থাকবেন গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিক এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসপিজি বাহিনী।
প্রধানমন্ত্রী পদে মোদী তৃতীয় বার শপথ নিতে চলেছেন রবিবার। রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির তরফে কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকেও শপথ নিতে দেখা যাবে বলে সরকারি সূত্রের খবর। শপথে যোগ দিতে আসা বিশেষ অতিথিরা তাজ, ওবেরয়, লীলা, মৌর্য-সহ যে হোটেলগুলিতে থাকবেন, সেখানেও ইতিমধ্যেই নিরাপত্তাবিধি বলবৎ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবন এবং আশপাশের অঞ্চলকে ‘নো ফ্লাই জ়োন’ ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার থেকেই দিল্লির উপর নজর রাখতে আকাশে ক্রমাগত চক্কর দেবে বায়ুসেনা এবং স্থলসেনার ‘আর্মি অ্যাভিয়েশন কোর’-এর হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টারগুলিতে সেনা এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর কমান্ডোরা থাকবেন। দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ বহুতল ভবনগুলিতে এনএসজি এবং সেনার স্নাইপারদের মোতায়েন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর বিপুল জয়ের পরে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনের উঠোনে বিপুল সংখ্যক আমন্ত্রিতের সামনে শপথ নিয়েছিলেন মোদী। ২৬ মে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের ৩০ মে দ্বিতীয় বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ওই স্থানেই তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে মোদী শপথবাক্য পাঠ করেছিলেন। এ বারও সেখানেই হবে শপথ।
প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর পূর্বসূরি মনমোহন সিংহ রাষ্ট্রপতি ভবনের অশোক হলে শপথ নিয়েছিলেন। বস্তুত, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে অনেক প্রধানমন্ত্রীরই শপথ অনুষ্ঠানের সাক্ষী রাষ্ট্রপতি ভবনের মূল গম্বুজের নীচের অশোক হল। সেই প্রথা ভেঙে চন্দ্রশেখর ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রপতি ভবনের উঠোনে শপথ নিয়েছিলেন। অটলবিহারী বাজপেয়ীও শপথ নেন ওই স্থানে। এ বার মোদী নয়াদিল্লির ‘কর্তব্যপথ’-এ শপথ নিতে পারেন বলে জল্পনা ছিল।