বাঁ দিক থেকে, নরেন্দ্র মোদী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খোঁচার আবার ‘জবাব’ দিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। শাহজাদা-শাহেনশাহ বিতর্কের পরে এ বার লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ‘সম্ভাব্য ফলাফল’ বিতর্কে।
মঙ্গলবার বারাণসীতে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন মোদী। সেখানে ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমরা লোকসভা ভোটে ৪০০ আসনে জেতার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। এ বারের ভোটে উত্তরপ্রদেশের মানুষ পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করবে। কংগ্রেস শূন্য হয়ে যাবে।’’
মোদীর ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই অমেঠীতে কংগ্রেস প্রার্থী কিশোরীলাল শর্মার প্রচারসভায় প্রিয়ঙ্কার কাছে মোদীর ওই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদক। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি গণৎকার নই। যদি উনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) হন, তা হলে আমাকে বলুন।’’ এর পরেই কংগ্রেস নেত্রীর মন্তব্য, ‘‘অমেঠী, রায়বরেলীর মানুষের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রাজনীতির ঊর্ধ্বে।’’
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছিল কংগ্রেস। রায়বরেলীতে সনিয়া গান্ধী। অমেঠীতে রাহুল হেরে গিয়েছিলেন বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে। এ বার রাহুল প্রার্থী হয়েছেন রায়বরেলীতে। বিজেপি নেতারা প্রচার চালাচ্ছেন, সেখানেও প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি হারতে চলেছেন। প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে একটি আসনেও জিততে পারেনি সীতারাম কেশরীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস।
এ বার লোকসভা ভোটের প্রচারের গোড়া থেকেই রাহুল গান্ধীকে ধারাবাহিক ভাবে ‘শাহজাদা’ বলে কটাক্ষ করছেন মোদী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রতিটি জনসভায় তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ওই বিশেষণ ব্যবহারের পরেই চলে প্রধানমন্ত্রী চলে যাচ্ছেন ‘কংগ্রেসের সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি’ প্রসঙ্গে! কখনও তিনি বলছেন, ‘‘বাদশা, সুলতান, নিজ়াম, নবাবরা ভারতবাসীর উপরে যে অত্যাচার করেছেন তা নিয়ে শাহজাদার মুখে তালা, কথা বন্ধ।’’ কখনও তাঁর মন্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেস মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে তোষণের রাজনীতি করেছে।’’ কখনও আবার ‘সাবধানবাণী’ শোনাচ্ছেন, ‘‘কংগ্রেসের শাহজাদার পরিকল্পনা হল দেশবাসীর সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া।’’
এই পরিস্থিতিতে গত ৪ মে মোদীকে পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ‘শাহেনশা’ শব্দ ব্যবহার করেন তিনি। মোদীর রাজ্য গুজরাতের বনাসকাঁটায় কংগ্রেসের ‘ন্যায় সঙ্কল্প সভা’য় প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘এই রাজ্যের এক শাহেনশাহ আছেন। তিনি প্রাসাদে থাকেন। মানুষের দুঃখ, দুর্দশা তাঁর নজরে আসে না। আমার দাদা রাহুল কিন্তু মানুষের সমস্যা বুঝতে ৪,০০০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন।’’