সংগৃহীত চিত্র।
সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি পরিবর্তন হচ্ছে পরীক্ষা পরিচালন কমিটির সদস্য হওয়ার নিয়মেও। ‘ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইজারি কমিটি’ ও ‘জয়েন্ট কনভেনারের’ সদস্য হতে গেলে এ বার থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলশিক্ষক হওয়া বাধ্যতামূলক। ২০২৫ সালে পুরনো পাঠক্রমেই পরীক্ষা হবে। সেখানে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের শিক্ষকরা থাকলেও নিয়ম কাটছাঁট করা হয়েছে বলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর।
সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “২০২৫-এ শেষ বার পুরনো সিলেবাসে পরীক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলের সদস্যদেরই রাখতে। ২০২৬ সাল থেকে ‘ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইসারি কমিটির’ কাঠামোয় কোনও পরিবর্তন না করা হলেও, কমিটি মেম্বার ও জয়েন্ট কনভেনারদের সদস্যদের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলের শিক্ষক হতে হবে। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।”
এত দিন পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষা পরিচালন ব্যবস্থার নীচের দিকের স্তরে যে সমস্ত শিক্ষক কাজ করতেন, তাঁদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও আইন ছিল না। তাই উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকের পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরাও এই কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। এ বছরও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বেশ কিছু জেলায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের নাম রয়েছে তালিকায়।
এ প্রসঙ্গে, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা চালানোর জন্য জেলায় জেলায় যে কমিটিগুলো হয়েছে, তাতে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের রাখা হয়েছে। দেখে অবাক হলাম। মনে হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরীক্ষা পরিচালনা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়। তা না হলে প্রয়োজনে নিয়ম পরিবর্তন করে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের রাখা যেত।”
কনভেনার সব সময়েই হন ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর (সেকেন্ডারি)। জেলার আয়তন অনুযায়ী জয়েন্ট কনভেনার নির্ধারণ করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। যেমন উত্তর ২৪ পরগনায় চার জন জয়েন্ট কনভেনার রয়েছেন। ব্যারাকপুর, বনগাঁ, বসিরহাট এবং বারাসতে এক জন করে রাখা হয়েছে। একই ভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষেত্রেও দু’জন রাখা হচ্ছে। সুন্দরবনের পুরো এলাকাটার জন্য এক জন। দক্ষিণের বাদবাকি জেলার জন্য আরও এক জন।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “নতুন যে বিন্যাস হোক না কেন, সেখানে যদি শাসক দলের শিক্ষক প্রতিনিধিরাই কেবল থাকেন, তা হলে যা হওয়ার তাই হবে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলতে গেলে সমস্ত শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বাছাই করা দরকার।”
পরীক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য ‘ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইজরি কমিটি’ সদস্য হিসেবে এডিআই জেনারেল, ইউপিএসসি চেয়ারম্যান, ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসার থাকেন। তবে এঁরা সকলেই প্রাক্তন অফিসার হিসেবে পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকেন।