সংগৃহীত চিত্র।
স্বাস্থ্য দফতরের মতো এ বার শিক্ষা দফতরেও গড়া হচ্ছে গ্রিভ্যান্স সেল। শিক্ষা দফতরের কাজে গতি আনতে এবং গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের দ্রুত সমাধান করতে এই সেল গঠন। নয়া সচিবের উদ্যোগে এই সেল তৈরি হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
শিক্ষা দফতরের নানা কাজকর্ম নিয়ে একাধিক অভিযোগ বিভিন্ন স্তরে জমা পড়ে। কিন্তু বহু সময়ে তার কোনও সমাধান হয় না- এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছে শিক্ষক মহলের একটি বড় অংশ। শিক্ষক মহলের একাংশ গ্রিভ্যান্স সেলের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও তাঁদের বক্তব্য, রাজনীতি বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যের ঊর্ধ্বে গিয়ে অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে দ্রুত তার সমাধান করতে হবে। তবে এই কমিটির যৌতিকতা থাকবে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলেও একটা গ্রিভ্যান্স সেল খোলা হয়েছিল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু কেউ উপকৃত হয়েছেন বলে শুনিনি। মূল কথা হল, সরকারের আন্তরিকতা যেমন প্রয়োজন, তেমন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। তা না করে এটা বিরোধীদের শায়েস্তা করার হাতিয়ার যেন না হয়ে যায়।”
ডিরেক্টর, জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং বিভাগের সাত জন আধিকারিককে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, অভিযোগ আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাতে এই সেগুলির নিষ্পত্তি হয়, সে জন্যই এই সেল গঠন।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স এণ্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “যে কোনও সত্যিকারের অভিযোগ থাকলে তবেই তা জমা পড়া উচিত। ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর জন্য নয়। তেমনি অভিযোগের নিষ্পত্তিও হওয়া উচিত নিরপেক্ষ ভাবে। এ সব ক্ষেত্রে আমরা বেশির ভাগ সময়েই দেখি নিরপেক্ষতার অভাব যেমন থাকে, তেমনই জব্দ করার প্রবণতা থেকে অনেক কেসের বিচার করা হয়। ফলে এ ধরনের সেল তার গুরুত্ব হারায়।”
শিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিজ্ঞপ্তিতে সমস্যা সমাধানের কোনও সময়সীমা ধার্য না করা থাকলেও সচিবের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে হবে। কোনও অভিযোগ যেন দীর্ঘদিন ধরে পড়ে না থাকে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, গ্রিভ্যান্স সেলের পাশাপাশি খোলা হয়েছে আইটি সেলও। যাতে কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দফতরের কাজ থমকে না থাকে।
প্রধান শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “আমরা বহু দিন ধরেই এই ধরনের উদ্যোগের কথা শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি। অবশেষে নয়া সচিব আসার পরে তা কার্যকরী করা হচ্ছে। অভিযোগ জমা পড়ার পরে সেই অভিযোগগুলির নিরপেক্ষ বিচার করা হোক-- এটাই আমাদের মূল দাবি।”