সংগৃহীত চিত্র।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে স্কুল স্তরেও। নাগরিক সমাজের সঙ্গে স্কুলপড়ুয়ারাও তাতে অংশগ্রহণ করছে। স্কুল স্তরে এই আন্দোলনকে আটকাতে এ বার তৎপর রাজ্য। হাওড়া জেলায় তিনটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শো-কজ করল জেলা পরিদর্শক দফতর। চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব না দিলে শিক্ষা দফতরের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “আর জি করের নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী ও ছাত্র ছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করছেন এবং প্রতিবাদ করছেন। এই প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করার জন্য সরকার দমনপীড়নের পথ বেছে নিচ্ছে। তা সঠিক নয় বলেই আমরা মনে করি। এতে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জেদ আরও বেড়ে যাবে এবং তাতে হিতে বিপরীত হবে।”
হাওড়া জেলার তিনটি স্কুলকে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে--বলুহাটি হাইস্কুল বয়েজ ও গার্লস এবং ব্যাঁটরা রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যালয়। চিঠিতে লেখা হয়েছে, গত শুক্রবার স্কুলের সময়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী ও পড়ুয়াদের নিয়ে মিছিল ও আন্দোলন করা হয়েছে। যদিও চিঠিতে কোথাও আর জি কর-কাণ্ডের কথা বলা নেই। তবে পড়ুয়াদের নিয়ে এই ধরনের মিছিল বা আন্দোলন শিক্ষা দফতরের আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “হাওড়া জেলার তিনটি স্কুলের বিদ্যালয় প্রধানকে যে ভাবে শোকজ করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করছি। আমরা বিনা শর্তে এই শোকজ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। এ ভাবে জোর করে প্রতিবাদ দমন করলে তা কমবে না। বরং আরও তীব্রতর হবে।”
পাশাপাশি, পূর্ব মেদিনীপুর ডিপিএসসির তরফ থেকেও ওই জেলার সমস্ত স্কুলগুলিকে কড়া নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের সময়ের মধ্যে কোনও প্রতিবাদ বা রাজনৈতিক মিটিং-মিছিলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। উল্লেখ করা হয়েছে, শান্তিপুর দক্ষিণ প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছিল স্কুলের পোশাকেই। যা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোনও মিছিলে ছাত্রছাত্রীরা এ ভাবে অংশগ্রহণ করলে শিক্ষা দফতরের আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে শুধু এই দুই জেলা নয়। ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, মালদহ-সহ প্রায় সমস্ত জেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের এই ধরনের মিটিং-মিছিলে অংশগ্রহণ রুখতে কড়া পদক্ষেপের কথাও জানিয়েছেন জেলা পরিদর্শক।