জেনে নিন কী ভাবে আরইআইটিতে বিনিয়োগ করে আয় করা যায়? ছবি: সংগৃহীত।
যত দিন যাচ্ছে বাজারদরও যেন পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই কম সময় বেশি টাকা উপার্জনের পথে হাঁটতে চাইছেন। আর সেই কারণেই বেছে নিচ্ছেন বিনিয়োগের পথ। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও এখন যে খুব একটা ভাল সময় যাচ্ছে, তা বলা যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই শেয়ার বাজার রিটার্ন দেওয়ার বদলে টাকা ডুবিয়ে দিচ্ছে। ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজ়িট রেটও মূল্যস্ফীতি হারের নীচে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, মূল্যস্ফীতিকে হারাতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? অনেকেই এখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেটকে বেছে নিচ্ছেন। তবে মুশকিল হল সকলের কাছে বিশাল অঙ্কের টাকা সব সময় থাকে না। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন যে, মাত্র ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দিয়ে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। আর এখানে ব্যাঙ্কের এফডি-র হারের তুলনায় বেশি রিটার্ন পেতে পারেন আপনি।
রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ ট্রাস্ট কী?
আরইআইটি হল সেই সংস্থাগুলি, যাদের কাছে এমন সম্পত্তি রয়েছে যা ভাল আয় দিতে পারে। এই সম্পত্তিগুলির মধ্যে রয়েছে শপিং মল, হাসপাতাল, অফিস স্পেস, হোটেল ইত্যাদি। সহজ কথায় আরইআইটি হল এক প্রকার মিউচুয়াল ফান্ড। শুধু পার্থক্য এই যে, স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ না করে এখানে সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করা হয়।
কী ভাবে আরইআইটিতে বিনিয়োগ করে আয় করা যায়?
আগেই বলা হয়েছে যে আরইআইটি মিউচুয়াল ফান্ডের মতো কাজ করে। আরইআইটি মূলত বিনিয়োগকারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আগে থেকেই তৈরি থাকা তহবিলের একটি বৃহৎ অংশ থেকে এই জাতীয় সম্পত্তি ক্রয় করে। এই দেশে প্রধানত আরইআইটি অফিস স্পেসের উপর বেশি গুরুত্ব প্রদান করে। তবে মার্কিন বাজারে আরইআইটি গুরুত্ব দেয় গুদাম, মল এই সব দিকে। সম্পত্তি থেকে আরইআইটি যা আয় করে, তা লভ্যাংশ হিসাবে বিনিয়োগকারীদের কাছে ফেরত দেওয়া হয়।
আয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করাই আরইআইটি-র নিয়ম। তবে স্টক মার্কেটে অন্যান্য কোম্পানির মতো আরইআইটির শেয়ারও বেচাকেনা হয়। শেয়ারের দাম যত বৃদ্ধি পাবে বিনিয়োগকাকরীরা তত লাভবান হবেন।
বর্তমানে বাজারে ৩টি আরইআইটি আছে। প্রথমেই যে নামগুলি আসে, সেগুলি হল:
১. ব্রুকফিল্ড ইন্ডিয়া রিয়েল এস্টেট ট্রাস্টের এক ইউনিটের ৫২ সপ্তাহের সর্বোচ্চ মূল্য ৩৩৭.২৮ টাকা। শেষ বিক্রয়মূল্য (এলটিপি)২৭৪.০৪ টাকা।
২. এমব্যাসি অফিস পার্কস আরইআইটির ৫২ সপ্তাহের সর্বোচ্চ মূল্য ৩৯৪.৯৫ টাকা এবং শেষ বিক্রয়মূল্য (এলটিপি) ৩১৫.১৬ টাকা।
৩. মাইন্ডস্পেস বিজনেস পার্কস-এর ৫২ সপ্তাহে সর্বোচ্চ মূল্য ৩৬৫ টাকা এবং শেষ বিক্রয়মূল্য (এলটিপি) ৩২৪.৫৫ টাকা। এর অর্থ হল যে, ৪০০ টাকার কম পরিমাণ হলেও কেউ আরইআইটিতে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্টে কী ভাবে বিনিয়োগ করবেন?
আরইইটিতে বিনিয়োগ করার জন্য প্রয়োজন একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট এবং একটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট। সাধারণ সংস্থার শেয়ার যে ভাবে কেনাবেচা হয়, আরইআইটির ক্ষেত্রেও তাই হয়। আপনি যে কোনও তালিকাভুক্ত রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ ট্রাস্টের ইউনিট কিনতে পারেন। আরইআইটির বার্ষিক গড় ১০-১২ শতাংশ রিটার্ন দেয়, যা অনেক ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজ়িটের সুদের দ্বিগুণ।
সবচেয়ে নিশ্চিন্তের বিষয় হল, এখানে অর্থ হারানোর আশঙ্কা অনেকটাই কম। তা ছাড়াও এখানে বিনিয়োগ প্রায় লিক্যুইড। অর্থাৎ কোনও প্রয়োজন হলে খুব সহজেই এখান থেকে টাকা তোলা যায়। আরইআইটি খুবই যত্ন সহকারে সম্পত্তি ক্রয় করে। আরইআইটি ইউনিটের দাম না বৃদ্ধি পেলে লভ্যাংশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় অর্জিত হয়।