Gold Prices

নজির গড়ে ৬২,০০০ পার সোনা, কমেছে গয়না বিক্রি

সব দামই জিএসটি যোগ করে আরও অনেক চড়া। খুচরো পাকা সোনা ৬৪ হাজারেরও বেশি (৬৪,১৬৯ টাকা)। সোনার বাট ৬৩,৮৬০। রুপোর বাট ৮০ হাজারের কাছে (৭৯,৫১৬ টাকা)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৩ ০৫:৪৮
Share:

বিয়ের জন্য একান্ত বাধ্য না হলে সাধারণ রোজগেরেরা গয়না কিনছেন না। প্রতীকী ছবি।

সোনার নজিরবিহীন দৌড়ে দাঁড়ি পড়ার নাম নেই। শুক্রবার কলকাতার বাজারে উচ্চতার নতুন শিখরে পা রাখল তার দাম। এই প্রথম ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) উঠল ৬২,৩০০ টাকায়। সোনার বাট প্রথম বার ছুঁয়েছে ৬২,০০০ টাকা। নজির গড়ে প্রতি কেজি রুপোর বাট এবং খুচরো রুপোও পৌঁছেছে যথাক্রমে ৭৭,২০০ এবং ৭৭,৩০০ টাকায়। সব দামই জিএসটি যোগ করে আরও অনেক চড়া। যেমন, খুচরো পাকা সোনা ৬৪ হাজারেরও বেশি (৬৪,১৬৯ টাকা)। সোনার বাট ৬৩,৮৬০। রুপোর বাট ৮০ হাজারের কাছে (৭৯,৫১৬ টাকা)।

Advertisement

ব্যবসায়ী মহলের দাবি, বিয়ের জন্য একান্ত বাধ্য না হলে সাধারণ রোজগেরেরা গয়না কিনছেন না। অনেকে দোকানে এসে দাম দেখে আতান্তরে। কম সোনা বা বাড়ির গয়না দিয়ে কাজ সারার চেষ্টা করছেন একাংশ। ফলে মার খাচ্ছেন বিক্রেতারা। একাংশের মতে, রুপোর দাম হুড়মুড়িয়ে বাড়লেও তা সোনার থেকে সস্তা। ফলে বিকল্প হিসেবে এর চাহিদা রয়েছে। যদিও কিছু মানুষের নাগালে সোনা-রুপো, কোনওটাই নেই।

চড়া দামের কারণে ইতিমধ্যেই দেশে সোনা এবং তার তৈরি গয়নার চাহিদা কমেছে বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)। এ দিন তাদের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গত জানুয়ারি-মার্চে চাহিদা তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭% কমে হয়েছে ১১২.৫ টন। গত ১০টি ত্রৈমাসিকের মধ্যে সব থেকে কম। ওই সময়ে গয়নার চাহিদাও ৯৪.২ টন থেকে নেমেছে ৭৮ টনে। ভারতে সংস্থার আঞ্চলিক সিইও সোমসুন্দরমের দাবি, অতিমারির সময়টুকু বাদ দিলে ২০১০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত জানুয়ারি-মার্চে সোনার গয়নার চাহিদা এই নিয়ে চতুর্থ বার ১০০ টনের নীচে নামল। আগামী দিনে দাম কমার আশায় অনেকেই কেনার পরিকল্পনা পিছোচ্ছেন।

Advertisement

চাহিদা ঝিমিয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন কলকাতার মূলত ছোট-মাঝারি দোকানগুলি। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে বলেন, “পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়ার মতো গয়না কেনার উৎসবেও এ বার দামের জেরে বাজার জমেনি। এখন বিক্রি তলানিতে। বিয়ের মরসুম চলছে বলে আশা কিছু ক্রেতা মিলবে।’’ বিডন স্ট্রিটের পাইকারি গয়না ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন পাঁজার আক্ষেপ, “দাম কমার অপেক্ষায় ছিলেন ক্রেতারা। কিন্তু উল্টোটা হল সম্প্রতি ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার খবর আসতেই। অনিশ্চিত সময়ের সুরক্ষিত লগ্নি হিসেবে বিশ্ব বাজারে সোনা চড়ল বিদ্যুৎ গতিতে। তাই ভারতেও দাম বেড়েছে। চড়া মূল্যবৃদ্ধির জমানায় এত দামে কে গয়না কিনবেন? বিয়ের মরসুম বলে একটু বিক্রিবাটা হচ্ছে। তবে ব্যবসার হাল খুব খারাপ।’’

গয়না রফতানিও কমেছে, দাবি জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখের। তিনি বলেন, “ভারি গয়নার চাহিদা প্রায় নেই। সকলে কম সোনার হাল্কাগুলি চাইছেন।’’

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা আরও জটিল হলে সোনা ফের নজির গড়বে। চিত্তরঞ্জনবাবুর মতো অনেকের দাবি, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ কমলে দাম স্বাভাবিক হবে। ইতিমধ্যেই তা কমেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ খুচরো পাকা সোনা ৬৩,৮০০ টাকায় উঠেছিল। এখন তার থেকে অনেক কম। তবে দাম কখনওই আর ৫৫-৫৬ হাজার টাকায় নামবে বলে মনে করে না স্বর্ণ শিল্প। ডব্লিউজিসি-র ধারণা, চলতি এপ্রিল-জুন এবং আগামী জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকেও দামের ধাক্কায় দেশে সোনার বাজার ঝিমিয়ে থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement