সেলফি নিতে গিয়ে সিনেমায় সুযোগ! —নিজস্ব চিত্র।
তিনি দেবের ‘ফ্যান’। ‘গুরু’র নতুন ছবি এলেই বন্ধুদের নিয়ে কাছের সিনেমা হলে যান। দেব নায়িকার সঙ্গে নাচলে দর্শকের আসন ছেড়ে নেচে উঠতেন তিনি। গুন্ডাকে দেব শায়েস্তা করলে ‘সিটি’ দিতেন। কিন্ত একটা সেলফি যে এ ভাবে জীবন বদলে দেবে ভাবতে পারেননি দেবের সঙ্গে ‘খাদান’-এ ‘স্ক্রিন’ শেয়ার করে নেওয়া কোলিয়ারি-কন্যা রাইমা পাল। তাঁকে দেখার জন্যও যে এলাকার মানুষ আলাদা করে আগ্রহ করে ‘খাদান’ দেখতে যাবেন, এ সব স্বপ্নেও কল্পনা করেননি রাইমা। কী ভাবে সুযোগ এল প্রিয় নায়কের সঙ্গে সিনেমায় কাজ করার?
চার বছর বয়স থেকে দেবে মজে আসানসোলের বার্নপুরের পুরানহাটের বাসিন্দা রাইমা। এখন তিনি কলেজছাত্রী। আসানসোল গার্লস্ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। দেবে মুগ্ধতা এখনও একই রকম আছে। সেই স্বপ্নের নায়ক বাস্তবের মাটিতে (আসানসোলের কোলিয়ারি) নেমে এসেছেন, আর তিনি যাবেন না, এটা ভাবতেই পারেননি কলেজপড়ুয়া। দেবের আগামী ছবির শুটিং দেখতে হাজির হয়েছিলেন জামুড়িয়ায়। তখন আর কে ভেবেছিল যে ওই সিনেমাতেই অভিনয়ের সুযোগ পাবেন রাইমা! বস্তুত, ‘খাদান’ মুক্তি পাওয়ার পরে পশ্চিম বর্ধমানের কোলিয়ারি এলাকায় প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির মেয়ে’কে দেখার টানেও অনেকে টিকিট কাটছেন। দেবের সঙ্গে তাঁর দৃশ্য পর্দায় ভাসলেই পড়ছে অনর্গল ‘সিটি’। এ কি স্বপ্ন?
দেবের ছবির অভিনেত্রী রাইমার কথায়, ‘‘বিশ্বাস হচ্ছে না, দেবদার সঙ্গে আমি কি না অভিনয় করেছি! এত বড় এক জন স্টারের সঙ্গে জীবনে প্রথম বার পর্দায় আসার সুযোগ এ ভাবে আসবে ভাবিনি।’’ রাইমা জানান, বছর খানেক আগে তিনি ‘খাদান’ ছবির শুটিং দেখতে গিয়েছিলেন জামুড়িয়ায়। দেবের সঙ্গে একটা ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সেলফি তুলতে গিয়েই সুযোগ পেয়ে যান অভিনয়ের। কলেজছাত্রীর কথায়, ‘‘ছোট থেকে অনেকে ঠিক করে নেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবেন। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, কাছ থেকে দেবদাকে দেখব।’’ লাজুক হাসি হেসে রাইমা বলেন, ‘‘মার্চ মাসে শুটিং দেখতে গিয়েছিলাম। তার পর সেপ্টেম্বরে সুযোগ এল। এক জনের মাধ্যমে খবর এল, একটা রোল আছে। করব কি না। এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।’’
প্রথম দিন শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন? রাইমা জানান প্রথম ৪০টা ‘টেক’-এর পর প্রথম শট ‘ওকে’ হয়েছে। কিন্তু তাঁর স্বপ্নের নায়ক সাহস জুগিয়েছেন। রাইমার কথায়, ‘‘ভুল করছি। দেবদা অন্যদের বলছেন, ‘দাঁড়াও। ও পারবে।’ যত বার ক্যামেরা রোল হচ্ছে দেবদা অভিনয় বুঝিয়ে দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘বাবু, তোমার পার্ট এ রকম ভাবে হবে।’ শুটিং শেষ হওয়ার পর দেবদা ওঁর ক্যামেরাম্যানকে ডাকেন। তার পর আমায় হাঁক দিয়ে বলেন, ‘বাবু আয়, ছবি তুলব।’ এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আমি দেবদার সঙ্গে অভিনয় করে ফেলেছি।’’
দেবের সঙ্গে রাইমাকে দেখতে আসানসোলের সিনেমা হলগুলোয় আলাদা করে ভিড় হচ্ছে। ২০ ডিসেম্বর ‘খাদান’ মুক্তির দিনেই ছবি দেখে ফেলেছেন রাইমা। তাঁর জন্য এলাকার মানুষ হলে গিয়ে উচ্ছ্বাসপ্রকাশ করেছেন। সেই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে রাইমা ঠিক করেছেন, এর পর অভিনয়ই করবেন। আবার দেবের সঙ্গে কাজের সুযোগ এলে তো কথাই নেই।