কোন পদ্ধতিতে বিনিয়োগে সবচেয়ে বেশি লাভ? প্রতীকী ছবি।
নিফটি বিজ় কী?
নিফটি বিজ় হল ভারতে চালু করা প্রথম এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড। এটি নিফটি ফিফটির ইন্ডেক্সের গতিবিধি অনুসরণ করে। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে বেঞ্চমার্ক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মাধমে ভারতে চালু হয় নিফটি বিজ়। তবে বর্তমানে এটি নিপ্পন ইন্ডিয়া মিউচুয়াল ফান্ডের অন্তর্গত।
নিফটি ফিফটি ইনডেক্স কী?
ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অফ ইন্ডিয়া (এনএসই)-এর অধীনস্থ এনএসই ইন্ডিসেস লিমিটেড এর মালিকানাধীন হল নিফটি ফিফটি। এই কোম্পানি নিফটি ফিফটি ছাড়া একশোটিরও বেশি ইকুইটি ইনডেক্স পরিচালনা করে। নিফটি ফিফটি হল পঞ্চাশটা লার্জ ক্যাপ স্টকের একটি সমষ্টি। এটি ফ্রি ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন এর ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ১৯৯৬ সালের ১ এপ্রিল এটি ভারতীয় স্টক এক্সচেঞ্জের অন্তর্ভুক্ত হয়। এটি সেনসেক্স এর মতো একটি জেনারেল ইনডেক্স যার মাধ্যমে ভারতীয় অর্থনীতি ব্যবস্থার ১৩টি ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত ৫০টি সক্রিয় কোম্পানির মার্কেট পারফরম্যান্স একসঙ্গে লক্ষ্য করা সম্ভব। নিফটি প্রতি বছর মার্চ এবং সেপ্টেম্বর মাসে পুনর্গঠিত হয়। প্রতি ছ’মাস অন্তর এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানিগুলির স্টকের গুণমান যাচাই করে নতুন কোনও কোম্পানিকে যুক্ত করা বা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নিফটি ফিফটির সুবিধা এবং অসুবিধা দুই-ই রয়েছে। নিফটি ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনি প্রতি মাসে আপনার বাজেট অনুযায়ী একটি পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে পঞ্চাশটা নামীদামি কোম্পানির শেয়ারের অংশীদার হতে পারবেন, যেখানে হয়ত এই সব কোম্পানিগুলির আলাদা আলাদা শেয়ারের দাম এত বেশি যে আপনার সাধ্যের মধ্যে তা নাও থাকতে পারে। তবে এখানে ফান্ড ম্যানেজারের সরাসরি হস্তক্ষেপ না থাকায় আপনাকে ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বহন করতে হয়। এখানে আপনি যখন ইচ্ছে আপনার টাকা বৃদ্ধি বা হ্রাস করাতে পারেন যে সুবিধা বেশির ভাগ ফান্ডে উপলব্ধ নয়। এখানে বিনিয়োগের একটি অসুবিধা হল দুই তিন বছরের জন্য বিনিয়োগ করলে তেমন কাঙ্খিত ফল পাওয়া যায় না। দীর্ঘ সময়ের জন্য নিফটি ফিফটিতে বিনিয়োগ থাকলে রিটার্ন অনেক ভাল পাওয়া যায়। নিফটি ফিফটিতে বিনিয়োগ করতে হলে আপনাকে একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং একটি স্টকব্রোকারের সঙ্গে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
নিফটি বিইএসগুলি একটি ট্রেডিং এবং ব্রোকারেজ ফি-এর জন্য ডিম্যাট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে একটি স্টকের মতো কেনাবেচা করা যেতে পারে। নিজস্ব প্রতীক এবং কোড এবং লেনদেনগুলি চাহিদা এবং সরবরাহ দ্বারা নির্ধারিত বাজারের মূল্যে যে কোনও সময় ট্রেডিং ডে-তে করা যায়। এখানে মিউচুয়াল ফান্ডের মতো শুধুই দিনের শেষে লেনদেন করা যায়।
নিফটি বিজ়ের সুবিধা কী?
নিফটি বিজ়ের অনেকগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
প্রথমটি হল, ফান্ডের সারল্য। এই ফান্ডটিতে যে কোনও সাধারণ ইটিএফ ফান্ডের মতো বিনিয়োগকারীরা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা যায়।
দ্বিতীয়টি হল, সহজেই ট্রেডিং বা কেনাবেচা করা যায়। বিনিয়োগকারীরা সময় অনুযায়ী ফান্ডটি কেনাবেচা করতে পারেন। বিনিয়োগকারীরা সরাসরি ব্রোকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেনদেনের বিবরণ আদানপ্রদান করতে পারেন। তা ছাড়াও ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি অর্ডার দিয়ে কেনাবেচা করা যায়।
তৃতীয়ত, ইটিএফ-এর অন্যান্য বিনিয়োগ পণ্যগুলির তুলনায় সাধারণত কম খরচে এখানে কেনাবেচা করা যায়। এ ছাড়াও এই ফান্ডটি বিনিয়োগকারীদের উচ্চ ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা প্রদান করে। অন্যান্য ধরনের বিনিয়োগের তুলনায় নিফটি বিজ় খুবই স্বচ্ছ। যে কোনও সময়ে ফান্ডের প্রতিটি নিরাপত্তায় সঠিক অবস্থান বা সঠিক বিনিয়োগ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এই ক্ষেত্রে খুবই সহজলভ্য।
এক নজরে নিফটি বিজ়ে বিনিয়োগ করার কয়েকটি লাভ
১. বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি সুদের হার প্রায় ১২ শতাংশ। উদাহরণস্বরূপ ৪.৫.২০১৮ তারিখে নিফটি বিজ়ের শেয়ার প্রতি দাম ছিল ১১০.৭০ টাকা এবং বর্তমানে ৫.৫.২০২৩ তারিখে নিফটি বিজ়ের শেয়ার প্রতি দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৯.৪৪ টাকা।
২. দ্রুত ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা।
৩. অন্য ধরনের বিনিয়োগের তুলনায় নিফটি বিজ় খুবই স্বচ্ছ।
৪. এসআইপি পদ্ধতিতে নিফটি বিজ়ে বিনিয়োগ সবচেয়ে লাভজনক।