দুর্ঘটনার সেই দৃশ্য। — ফাইল চিত্র।
জয়পুরে এলপিজি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের ঘটনার দু’দিনের মধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিল ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি (এনএইচএআই)। প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরণের সম্ভাব্য কারণও। রিপোর্টের দাবি, ক্লোভারলিফ রাস্তা না থাকার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আর এর পরেই জল্পনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।
কী এই ক্লোভারলিফ রাস্তা? দু’টি ব্যস্ত হাইওয়ের সংযোগকারী এলাকায় যানজট বা দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দু’টি হাইওয়ের দু’পাশে লুপের মতো আকৃতির বৃত্তাকার রাস্তা রাখা হয়। সেই সঙ্গে রাখা হয় আন্ডারপাস এবং উড়ালপুল, যাতে দু’টি রাস্তার সংযোগস্থলে বিপরীতমুখী গাড়িগুলির সংঘর্ষ না হয়। একেই ‘ক্লোভারলিফ রাস্তা’ বলে। চারটি পাতার মতো দেখতে বলে এই ধরনের রাস্তাকে ‘ক্লোভারলিফ’ বলা হয়। এনএইচএআই-এর দাবি, জয়পুর-অজমেড় মহাসড়কে এর কোনওটিই ছিল না। সে কারণেই বিপত্তি।
শুক্রবার ভারী যানবাহনগুলির চলাচলের সুবিধার জন্য দুই রাস্তার মাঝে একটি ছোট স্থান উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল, যাতে চালকেরা ওই অংশ দিয়ে গাড়িগুলি ঘুরিয়ে ইউ-টার্ন নিতে পারেন। ক্লোভারলিফ রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়ে পুলিশের অনুমোদন নিয়ে ওই অংশ খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখান দিয়ে গাড়ি ঘোরানোর সময়েই ট্রাকটি এসে এলপিজি ট্যাঙ্কারে ধাক্কা মারে। তবে দুর্ঘটনার পর টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। ভারপ্রাপ্ত সংস্থাকে দ্রুত ক্লোভারলিফ রাস্তা বানানোর জন্য তাগাদা দিয়েছে এনএইচএআই।
শুক্রবার রাজস্থানের জয়পুর-অজমেড় মহাসড়কে একটি ট্রাকের সঙ্গে এলপিজি ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের অভিঘাতে মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটে ট্যাঙ্কারে। কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকা জুড়ে। আগুনে ৩৭টিরও বেশি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মৃত্যু হয় অন্তত ১৪ জনের। এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ৩০ জন। রাজ্য ও কেন্দ্রের তরফে মৃত এবং আহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়া হয়েছে। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, রাজ্য সরকারের কাছে তার বিস্তারিত রিপোর্টও চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০ জানুয়ারির মধ্যে শীর্ষ আদালতে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।