Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Bhaswar Chatterjee

আমি কোনদিনই রাস্তাঘাটে ঘুরে প্রেম করিনি

‘এখনও যখন পার্কস্ট্রিট এলাকায় যাই, মনে হয়, পায়ে হেঁটে ঘুরি।’

‘আমাদের সিভিক সেন্স নষ্ট হয়ে গেছে’

‘আমাদের সিভিক সেন্স নষ্ট হয়ে গেছে’

ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৫৯
Share: Save:

কলকাতা নিয়ে ভাল লাগা আছেই। আমার শহর, আমি জন্মেছি এখানে। আমার সবকিছু পাওয়া এই শহরেই। কলকাতার কিছু জিনিস খুব ভাল লাগে। যেমন, ফ্লাইওভার।তার কারণ, তাড়াতাড়ি এয়ারপোর্ট পৌঁছনো যায়। এত ফ্লাইওভার আগে ছিল না। কিছু জায়গার আলোকসজ্জা খুব ভাল লাগে। রাস্তা ঝলমল করছে।

আমি টুইটারে অনেককে ফলো করি। সেখানে ঋষি কপূর খুব ভাল একটা কথা বলেছিলেন। বছর দেড়েক আগে উনি কলকাতা এসেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘আমি অনেক বছর পর কলকাতা এলাম। দেখলাম কলকাতা এখন অনেক বেশি পজিটিভ। আগে এখানে এলে মনে হত যে অন্ধকারে ডুবে আছে শহরটা।’’ একজন বাইরের লোক, যিনি রোজ শহরটা দেখেন না, তিনি যখন বলছেন তখন নিশ্চয়ই শহরটার চেঞ্জ হয়েছে।

খারাপ যেটা লাগে, খুব নোংরা হয়ে গেছে শহরটা। গড়িয়াহাটের উপর দিয়ে গেলে মনে হয়, এত বড় অগ্নিকাণ্ড হয়ে গেল ওখানে, এখনও সেই প্লাস্টিক বিছানো, এখনও সেই প্লাস্টিকের ঢাকা দেওয়া, কোনও কেয়ার নেই। কথা হচ্ছে যে, ‘ফুটপাত’ শব্দটার মানে কী? মানুষ যেখানে পায়ে হাঁটতে পারে। তাই না? কিন্তুফুটপাত বলে তো কোনও বস্তুই নেই। ফুটপাতের অস্তিত্বই নেই কলকাতার প্রায় কোথাও। যেখানেই ফুটপাত, সেখানেই চারটে দোকান আর হকার। এ জন্য আমরাই দায়ী। তবে, হকারদের রাতারাতি উচ্ছেদ করে দিলে তো চলবে না। তাদেরও কাজ করতে হবে। যদি তাদের নিয়ে হকার-মল বানানো হয়,যেখানে এখনকার মতোই কম দামে তাঁরা জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারবেন, তো খুব ভাল হয়।আর শুধু তো হকাররা নন, অনেকে বড় বড় দোকান, বুটিক খুলে ফুটপাতে নিজেদের জিনিস রেখে দেন, ফুটপাত দখল করে রাখেন। খাবারের দোকান করে রাস্তায় টুল পেতে দিচ্ছেন। রাস্তার ধারে খেয়ে মানুষ ওখানেই নোংরা করে চলে যাচ্ছে। আমরাই সবকিছুর জন্য দায়ী। আমাদের সিভিক সেন্স নষ্ট হয়ে গেছে।

‘অনেক সময় নাইট শুটে সিনের মাঝে গ্যাপ থাকলে আমি একা ফুটপাতে হেঁটে বেড়াতাম।’

কলকাতা একটা মেট্রো সিটি। কতটুকু পরিষ্কার? এক শতাংশও নয়। গোটা শহরটা যদি পাটুলির মতো হত, তাহলে অবাক কাণ্ড হত। মনে হত, এত পরিষ্কার একটা শহর হতে পারে! আমি নিউ আলিপুরে থাকি। যত দিন যাচ্ছে, তত নোংরা হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। তারপর পার্কিং। কেউ কিচ্ছু মানে না। যেখানে সেখানে পার্কিং। একটা রাস্তার দু’দিকে পার্কিং। এটা হতে পারে কখনও? পার্কিং একটা সাইডে হয় যদি পারমিশন থাকে তো। সব মিলিয়ে শহরটাতে ডিসিপ্লিনের অভাব। এটা আমার প্রতিদিন মনে হয়।

অন্য দিকে, কলকাতার সবুজ প্রায় নেই বললেই চলে। যদিও অন্য মেট্রো সিটির তুলনায় এই শহরেএকটু বেশি সবুজ আছে বলে মনে হয়। ময়দান এলাকায় কিছুটা আছে। অন্য কিছু কিছু জায়গায় সবুজায়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবুও খুব কম। ওপেন স্পেস তো প্রায় নেই। যেদিকেই দেখছি বড় বড় বাড়ি উঠে যাচ্ছে, মাল্টিপ্লেক্স বিল্ডিং হচ্ছে।

তবে এই শহরেই আছে আমার প্রিয় কিছু জায়গা। ময়দান, ধর্মতলা মেট্রোর জায়গাটা... ছোটবেলা থেকেই। এখনও যখন পার্কস্ট্রিট এলাকায় যাই, মনে হয়, পায়ে হেঁটে ঘুরি। আমি অনেকদিন আগে একটা সিরিয়াল করতাম ‘অসম্ভব’ বলে। ওটার ফ্লোর ছিল অপেরা সিনেমা হল। ধর্মতলায়। অনেক সময় নাইট শুটে সিনের মাঝে গ্যাপ থাকলে আমি একা ফুটপাতে হেঁটে বেড়াতাম। মেট্রো সিনেমা অবধি গিয়ে আবার ওদিকে লোটাস সিনেমা পর্যন্ত যেতাম। আমার খুব ভাল লাগে রাতের কলকাতা দেখতে। ভীষণ ভাল লাগার জায়গা শীতকালে ময়দানে গিয়ে বসা, ব্যাডমিন্টন খেলা, কমলালেবু খাওয়া, ভিক্টোরিয়া যাওয়া... এগুলো কোনও দিন ভোলা যাবে না।

আমি কোনদিনই রাস্তাঘাটে ঘুরে প্রেম করিনি। নবমিতার সঙ্গে ম্যাক্সিমাম খাবারের জায়গাগুলোতেই যাই। দু’জনেই আমরা খুব ফুডি। দু’জন সারাক্ষণ খুঁজে বেড়াতাম নতুন কোথায় খাব। পার্ক স্ট্রিট বা যে কোনও মলে খাবারের দোকান সম্পর্কে আমরা খুব ওয়াকিবহাল ছিলাম।

অন্য বিষয়গুলি:

Bhaswar Chatterjee Actor Tollywood Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy