মেয়াদ ফুরোতে এখনও বছর দু’য়েক। তবু এর মধ্যেই বড়সড় ধাক্কা খেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। দেশের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের হারিয়ে মার্কিন সেনেটের দখল নিল বিরোধী দল রিপাবলিকান। একই সঙ্গে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাড়াল হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভেও। কার্যত মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষই এখন রিপাবলিকানদের হাতের মুঠোয়। গত আট বছরে এই প্রথম।
এ বারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের দুর্গ হিসেবে পরিচিত আরকান্স, কলোরাডো, আইওয়া, মন্টানা, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ডাকোটা এমনকী ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার সেনেট আসনেও জয় ছিনিয়ে নিয়েছে রিপাবলিকানরা। একই রকম ভরাডুবি ইলিনয়, স্বয়ং ওবামা যেখানকার প্রাক্তন সেনেটর। ওবামাদের পক্ষে গত বারের আসন ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে শুধু ডেলাওয়ের, ম্যাসাচুসেটস, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউ জার্সি এবং রোড আইল্যান্ডের মতো কিছু কেন্দ্রে। সব মিলিয়ে রিপাবলিকানদের দখলে এখন সেনেটের ৫২টি আসন, যেখানে ডেমোক্র্যাটদের সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে মাত্র ৪৫টি-তেই।
স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচনের এই ফলাফলে উচ্ছ্বসিত কেনটাকির দুঁদে সেনেটর মিচ ম্যাককনেল। দলীয় সেনেট নেতা থেকে মার্কিন সেনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠের নেতাও হতে চলেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে বললেন, “ভোটের এই ফল থেকেই স্পষ্ট যে, দেশের সাধারণ মানুষের আর এই সরকারের উপর আস্থা নেই।” দেশের বেহাল অর্থনৈতিক দশার জন্য এত দিন প্রেসিডেন্ট ওবামাকেই দায়ী করে আসছিলেন রিপাবলিকানরা। নির্বাচনের এই ফল তাদের বিরোধিতার সুর আরও চড়াবে। মঙ্গলবার ফলপ্রকাশের পর এই জয়ের জন্য দেশের নাগরিকদেরই অভিননন্দন জানিয়েছেন রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান-সহ শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ। মধ্যবর্তী এই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভাবে নিজের গত বারের জেতা আসন ধরে রেখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাউথ ক্যারোলাইনের রিপাবলিকান গভর্নর নিকি হ্যালি।
এ বারের নির্বাচন ছিল মার্কিন সেনেটের মোট ১০০টি আসনের এক-তৃতীয়াংশে, হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভের ৪৩৫টি আসনের সবক’টিতে এবং ৩৬টি রাজ্যের গভর্নর পদে। আর দু’কক্ষ মিলিয়ে নির্বাচনের পর ডেমোক্র্যাটদের আসন যেখানে ১৯৯, রিপাবলিকানদের ২৩৩। অর্থাত্ মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষই রিপাবলিকানদের কাছে চলে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ওবামাকে এখন কংগ্রেসে প্রস্তাব পাস করানোর ক্ষেত্রে বিরোধীদের বাধার মুখে পড়তে হতে পারে বলে মার্কিন কূটনৈতিক মহলের একাংশের মত। তাই আগামী দু’বছর কঠিন পরীক্ষা ডেমোক্র্যাট নীতি নির্ধারক কমিটিরও।
রিপাবলিকানদের পথও সম্পূর্ণ মসৃণ নয়। তাদের চ্যালেঞ্জ মানুষের আস্থা অর্জন। রিপাবলিকানদের পাখির চোখ আপাতত ২০১৬-য় হোয়াইট হাউস দখল। সেনেটে বিরোধী দল হিসেবে তারা কতখানি সফল হয়, তার উপই নির্ভর করছে সেটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy