পুড়ে যাওয়া দৈনিকের অংশ। রবিবার হামবুর্গে। ছবি: রয়টার্স।
ফের আক্রান্ত সংবাদপত্র। এবং এ বারও বিতর্কিত ছবি প্রকাশকেই হামলার অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে জার্মানির হামবুর্গে। পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল গভীর রাতে ‘হামবুর্গের মর্গেনপোস্ট’ নামে এক দৈনিকের দফতরের অন্দরে জ্বলন্ত কিছু বস্তু ছুড়ে ফেলা হয়। ছোড়া হয় পাথরও। তবে বড়সড় অগ্নিকাণ্ড হওয়ার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে দমকলবাহিনী। কেউ হতাহত হননি। ঘটনায় জড়িত সন্দেহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হঠাৎ এমন হামলা কেন? পুলিশ জানিয়েছে, ফরাসি পত্রিকা ‘শার্লি এবদো’-য় সম্প্রতি হজরত মহম্মদের যে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়েছিল, সেই ছবিই পুনঃপ্রকাশ করে হামবুর্গের মর্গেনপোস্ট। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করতে যে ভাবে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা, তার প্রতিবাদেই ওই ছবি পুনঃপ্রকাশ করে হামবুর্গের দৈনিকটি। নীচে লেখা ছিল, ‘এই স্বাধীনতাটুকু থাকা উচিত।’ পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, সেই বিতর্কিত ছবি পুনঃপ্রকাশের জেরেই হামলা চলেছে ওই দৈনিকের দফতরে। তবে এখনও কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
হামবুর্গ প্রশাসন জানাচ্ছে, গত কাল রাত আড়াইটে নাগাদ দমকলের কাছে খবর পৌঁছয়, দৈনিকটির দফতরে আগুন লেগেছে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন আয়ত্তে আনেন দমকলকর্মীরা। পরে নিজেদের সাইটেও আগুন নেভানোর ছবি দেয় হামবুর্গের মর্গেনপোস্ট। নীচে প্রশ্ন, শার্লি এবদো-র ব্যঙ্গচিত্র পুনঃপ্রকাশের জেরেই কি এমন হল? তবে আশার কথা, কিছু নথিপত্র নষ্ট হওয়া ছাড়া বড়সড় ক্ষতি হয়নি ওই দৈনিকের দফতরে। পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শীঘ্রই ওই দফতরে কাজ শুরু করতে পারবেন কর্মীরা।
তাতেও অবশ্য স্বস্তিতে নেই দৈনিকটির কর্মকর্তারা। রবিবারের হামলার পর নিজেদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করতে শুরু করেছেন তাঁরা। শার্লি এবদোয় হামলা চলার পর এমনিতেই ইউরোপ জুড়ে সতর্কতা বেড়েছে। এমনকী ওই ঘটনার কিছু পরেই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ-র একটি সূত্র জানিয়েছিল, গোপন কথোপকথনে ইউরোপে পর পর একাধিক হামলা চালানোর কথা আলোচনা করেছে জঙ্গি-নেতারা। তা রুখতে ইউরোপের দেশগুলি যেন নিজেদের মধ্যে আরও বেশি করে গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান করে, সে কথাই সম্প্রতি বলেছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল।
রবিবার অবশ্য দেশে ছিলেন না আঙ্গেলা। এ দিন শার্লি এবদো কাণ্ডের বিরোধিতায় প্যারিসের মিছিলে সামিল হয়েছেন তিনি। কিন্তু তার আগেই আক্রান্ত হল তাঁর নিজের দেশের দৈনিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy