Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
china

নিজে চিনের বাইরে থাকতে চাননি, কিন্তু মেয়েকে ছদ্মপরিচয়ে হার্ভার্ডে পাঠান শি চিনফিং

তাঁকে প্রথম প্রকাশ্যে স্বপরিচয়ে দেখা যায় ২০১৩ সালে। তাঁর বাবার চিনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পরে। বাবা এবং মায়ের সঙ্গে তিনি দেশবাসীকে বসন্তোৎসব এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ১১:১১
Share: Save:
০১ ১৬
ঠাকুরদা নাকি আদর করে নাম রেখেছিলেন জিয়াও মুজি। এ ছাড়াও কূটনৈতিক নিরাপত্তার কারণে ছদ্মনামের আড়ালে মাঝে মাঝে গোপন থেকেছে তাঁর পোশাকি পরিচয়। জীবনযাপনে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বিপরীত মেরুতে থাকা জি মিংজে প্রচারের আলোয় কার্যত আসতেই চান না। বাইরের দুনিয়া প্রায় জানেই না চিনের প্রেসিডেন্টের একমাত্র মেয়ের নাম।

ঠাকুরদা নাকি আদর করে নাম রেখেছিলেন জিয়াও মুজি। এ ছাড়াও কূটনৈতিক নিরাপত্তার কারণে ছদ্মনামের আড়ালে মাঝে মাঝে গোপন থেকেছে তাঁর পোশাকি পরিচয়। জীবনযাপনে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের বিপরীত মেরুতে থাকা জি মিংজে প্রচারের আলোয় কার্যত আসতেই চান না। বাইরের দুনিয়া প্রায় জানেই না চিনের প্রেসিডেন্টের একমাত্র মেয়ের নাম।

০২ ১৬
চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং এবং তাঁর লোকসঙ্গীত শিল্পী স্ত্রী পেং লিউয়ানের মেয়ে জি-এর জন্ম ১৯৯২ সালের ২৭ জুন। ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরের পড়াশোনা শেষ করে জি পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায়, ২০১০-ও। গন্তব্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং এবং তাঁর লোকসঙ্গীত শিল্পী স্ত্রী পেং লিউয়ানের মেয়ে জি-এর জন্ম ১৯৯২ সালের ২৭ জুন। ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরের পড়াশোনা শেষ করে জি পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায়, ২০১০-ও। গন্তব্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

০৩ ১৬
কিন্তু তিনি যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, সে খবর অন্তত দু’বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট স্তরের বাইরে প্রকাশিত হয়নি। চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে ছদ্মনাম ও পরিচয়ে জি সেখানে পড়াশোনা করেন মনস্তত্ব এবং ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে।

কিন্তু তিনি যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, সে খবর অন্তত দু’বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট স্তরের বাইরে প্রকাশিত হয়নি। চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে ছদ্মনাম ও পরিচয়ে জি সেখানে পড়াশোনা করেন মনস্তত্ব এবং ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে।

০৪ ১৬
জি যে সময় হার্ভার্ডে যান, তখনও তাঁর বাবা চিনের প্রেসিডেন্ট হননি। কিন্তু জিয়ের ঠাকুরদা জি ঝোংজুন ছিলেন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা। মাও জে দংয়ের শাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন জি ঝোংজুন। ফলে প্রথম থেকেই হার্ভার্ডে চরম গোপনীয়তা পালন করতে হয়েছে জি-কে।

জি যে সময় হার্ভার্ডে যান, তখনও তাঁর বাবা চিনের প্রেসিডেন্ট হননি। কিন্তু জিয়ের ঠাকুরদা জি ঝোংজুন ছিলেন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা। মাও জে দংয়ের শাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন জি ঝোংজুন। ফলে প্রথম থেকেই হার্ভার্ডে চরম গোপনীয়তা পালন করতে হয়েছে জি-কে।

০৫ ১৬
সব সময়ই তাঁকে ছায়ার মতো অনুসরণ করত বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীর বাহিনী। বাইরে সাধারণ ছাত্রীর পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করলেও নির্দেশ মতো বেশি পড়ুয়ার সঙ্গে তিনি বন্ধুত্ব করতে পারেননি। অবসর সময়ে জি ভালবাসেন বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই পড়তে। ফ্যাশনেও আগ্রহ আছে তাঁর।

সব সময়ই তাঁকে ছায়ার মতো অনুসরণ করত বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীর বাহিনী। বাইরে সাধারণ ছাত্রীর পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করলেও নির্দেশ মতো বেশি পড়ুয়ার সঙ্গে তিনি বন্ধুত্ব করতে পারেননি। অবসর সময়ে জি ভালবাসেন বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই পড়তে। ফ্যাশনেও আগ্রহ আছে তাঁর।

০৬ ১৬
নব্বইয়ের দশকে জি-এর শৈশবের কিছু ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। তার পর তিনি চলে যান গোপনীয়তার অন্তরালে। সংবাদমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া, কোথাও ছিলেন না তিনি। এখনও যে তাঁকে বিশেষ প্রকাশ্যে দেখা যায়, সে রকমও নয়। তাঁর সম্বন্ধে তথ্য বা তাঁর ছবি, দুই-ই বিরল।

নব্বইয়ের দশকে জি-এর শৈশবের কিছু ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। তার পর তিনি চলে যান গোপনীয়তার অন্তরালে। সংবাদমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া, কোথাও ছিলেন না তিনি। এখনও যে তাঁকে বিশেষ প্রকাশ্যে দেখা যায়, সে রকমও নয়। তাঁর সম্বন্ধে তথ্য বা তাঁর ছবি, দুই-ই বিরল।

০৭ ১৬
তাঁকে প্রথম প্রকাশ্যে স্বপরিচয়ে দেখা যায় ২০১৩ সালে। তাঁর বাবার চিনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পরে। বাবা এবং মায়ের সঙ্গে তিনি দেশবাসীকে বসন্তোৎসব এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।

তাঁকে প্রথম প্রকাশ্যে স্বপরিচয়ে দেখা যায় ২০১৩ সালে। তাঁর বাবার চিনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পরে। বাবা এবং মায়ের সঙ্গে তিনি দেশবাসীকে বসন্তোৎসব এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।

০৮ ১৬
চিনের ইয়ানান প্রদেশের লিয়াংজিয়াহে গ্রামেও গিয়েছিলেন জি। এই গ্রামেই তাঁর বাবা শি চিংফিং ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫, ছ’বছর কাটিয়েছিলেন। সে সময় দল থেকে দূরে সরে তাঁকে সমাজসেবামূলক কাজ করতে হয়েছিল।

চিনের ইয়ানান প্রদেশের লিয়াংজিয়াহে গ্রামেও গিয়েছিলেন জি। এই গ্রামেই তাঁর বাবা শি চিংফিং ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫, ছ’বছর কাটিয়েছিলেন। সে সময় দল থেকে দূরে সরে তাঁকে সমাজসেবামূলক কাজ করতে হয়েছিল।

০৯ ১৬
চিনের সংবাদমাধ্যমে জি সম্বন্ধে যেটুকু বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে তাঁকে সরল এবং মার্জিত তরুণী বলে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

চিনের সংবাদমাধ্যমে জি সম্বন্ধে যেটুকু বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে তাঁকে সরল এবং মার্জিত তরুণী বলে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

১০ ১৬
ছোট থেকেই সামাজিক কাজে আগ্রহ দেখিয়েছেন জি। সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তাঁর মা পেং। ২০০৮ সালে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল চিনের সিচুয়ান প্রদেশে। সে সময় ষোড়শী জি স্কুলে আবেদন করেছিলেন ছুটির জন্য। যাতে তিনি সিচুয়ানে গিয়ে উদ্ধারকাজে সামিল হতে পারেন।

ছোট থেকেই সামাজিক কাজে আগ্রহ দেখিয়েছেন জি। সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তাঁর মা পেং। ২০০৮ সালে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল চিনের সিচুয়ান প্রদেশে। সে সময় ষোড়শী জি স্কুলে আবেদন করেছিলেন ছুটির জন্য। যাতে তিনি সিচুয়ানে গিয়ে উদ্ধারকাজে সামিল হতে পারেন।

১১ ১৬
জি-য়ের এই উদ্যোগে পূর্ণ সম্মতি ছিল তাঁর বাবা মায়ের। পেং পরে জানিয়েছিলেন, সিচুয়ানের অভিজ্ঞতা তাঁর মেয়েকে জীবনসংগ্রামের পথে তৈরি হতে সাহায্য করেছিল।

জি-য়ের এই উদ্যোগে পূর্ণ সম্মতি ছিল তাঁর বাবা মায়ের। পেং পরে জানিয়েছিলেন, সিচুয়ানের অভিজ্ঞতা তাঁর মেয়েকে জীবনসংগ্রামের পথে তৈরি হতে সাহায্য করেছিল।

১২ ১৬
ইতিমধ্যেই জি-কে তাঁর বাবার উত্তরসূরি বলা হচ্ছে। শোনা যায়, পারিবারিক ধারা মেনে তিনিও রাজনীতিতে পা রাখবেন। কিন্তু বেশ কিছু মার্কিন ও তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যমে আবার উল্টো সুরও শোনা যায়।

ইতিমধ্যেই জি-কে তাঁর বাবার উত্তরসূরি বলা হচ্ছে। শোনা যায়, পারিবারিক ধারা মেনে তিনিও রাজনীতিতে পা রাখবেন। কিন্তু বেশ কিছু মার্কিন ও তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যমে আবার উল্টো সুরও শোনা যায়।

১৩ ১৬
সেখানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, জি নাকি চিনের জীবন থেকে বেশি পছন্দ করেন মার্কিন শহর ম্যাসাচুসেটসে কাটানো দিনগুলি। মেয়ের ইচ্ছের কাছে হার মেনে চিনের প্রেসিডেন্ট নাকি তাঁকে আবার আমেরিকায় ফিরে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছেন।

সেখানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, জি নাকি চিনের জীবন থেকে বেশি পছন্দ করেন মার্কিন শহর ম্যাসাচুসেটসে কাটানো দিনগুলি। মেয়ের ইচ্ছের কাছে হার মেনে চিনের প্রেসিডেন্ট নাকি তাঁকে আবার আমেরিকায় ফিরে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছেন।

১৪ ১৬
প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং নিজে কোনও দিন চিনের বাইরে গিয়ে থাকেননি। তাঁর পড়াশোনার পর্বও সম্পূর্ণ কেটেছে নিজের জন্মভূমিতেই। অথচ তাঁর দুই পূর্বসূরি নেতা জিয়াং জেমিন (চিনের প্রেসিডেন্ট পদে ১৯৯৩-২০০৩) এবং ডেং জিয়াওপিং দু’জনেই সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ায় গিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। জিয়াওপিং তো কয়েক বছর কাটিয়েছেন ফ্রান্সেও।

প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং নিজে কোনও দিন চিনের বাইরে গিয়ে থাকেননি। তাঁর পড়াশোনার পর্বও সম্পূর্ণ কেটেছে নিজের জন্মভূমিতেই। অথচ তাঁর দুই পূর্বসূরি নেতা জিয়াং জেমিন (চিনের প্রেসিডেন্ট পদে ১৯৯৩-২০০৩) এবং ডেং জিয়াওপিং দু’জনেই সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ায় গিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। জিয়াওপিং তো কয়েক বছর কাটিয়েছেন ফ্রান্সেও।

১৫ ১৬
কিন্তু শি চিনফিং কোনও দিন চিনের বাইরে থাকতে আগ্রহী ছিলেন না। শোনা যায়, এই কারণে নাকি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ অবধি হয়ে গিয়েছিল। কারণ তাঁর প্রথম স্ত্রী কে লিংলিং চিন ছেড়ে ব্রিটেনে গিয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। লিংলিংয়ের সঙ্গে তিন বছরের দাম্পত্য শেষ হয়ে যায় ১৯৮২ সালে। তার পাঁচ বছর পরে পেং লিউয়ানকে বিয়ে করেন শি চিনফিং।

কিন্তু শি চিনফিং কোনও দিন চিনের বাইরে থাকতে আগ্রহী ছিলেন না। শোনা যায়, এই কারণে নাকি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ অবধি হয়ে গিয়েছিল। কারণ তাঁর প্রথম স্ত্রী কে লিংলিং চিন ছেড়ে ব্রিটেনে গিয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। লিংলিংয়ের সঙ্গে তিন বছরের দাম্পত্য শেষ হয়ে যায় ১৯৮২ সালে। তার পাঁচ বছর পরে পেং লিউয়ানকে বিয়ে করেন শি চিনফিং।

১৬ ১৬
তবে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী এই রাষ্ট্রনেতা তাঁর মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনকে পর্দার আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন। ফলে, তাঁর একমাত্র মেয়ে এখন কোথায় আছেন এবং কী করছেন, তা অধরাই বাইরের বিশ্বের কাছে। হয়তো প্রকাশ্যে তখনই আসবে, যখন তাঁরা চাইবেন।

তবে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী এই রাষ্ট্রনেতা তাঁর মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনকে পর্দার আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন। ফলে, তাঁর একমাত্র মেয়ে এখন কোথায় আছেন এবং কী করছেন, তা অধরাই বাইরের বিশ্বের কাছে। হয়তো প্রকাশ্যে তখনই আসবে, যখন তাঁরা চাইবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy