William James Sidis, the Man whose IQ is more than Albert Einstein and Isaac Newton dgtl
Albert Einstein
আইনস্টাইন-নিউটনের চেয়েও আইকিউ বেশি, ‘বিখ্যাত’ না হতে কেরানির চাকরি করে জীবন কাটান ইনি
এ হেন বুদ্ধিমত্তা দেখে তাঁর বাবা মাত্র ১১ বছর বয়সে তাঁকে ভর্তি করে দেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি হলেন হার্ভার্ডের ইতিহাসে সব থেকে কম বয়সে ভর্তি হওয়া ছাত্র।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ১১:৪৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
ইন্টিলিজেন্স কোশেন্ট বা আইকিউ। মানুষের বুদ্ধির পরিমাপ করা হয় এই আইকিউ-এর মাধ্যমে। সব মানুষের আইকিউ সমান হয় না। কারও কম, কারও বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, আইজাক নিউটনের মতো বিজ্ঞানীদের সাধারণ মানুষের তুলনায় আইকিউ অনেকটা বেশি।
০২১৮
আজ আমরা এমন এক জনের সম্পর্কে জানব, যিনি বড় কোনও বিজ্ঞানী নন। কেরিয়ারও তাঁর খুব সফল না। অনেকেই তাঁর নাম অবধি শোনেননি। কিন্তু তাঁর আইকিউ আইনস্টাইন, নিউটনের মতো বিজ্ঞানীদের থেকেও বেশি।
০৩১৮
আইকিউ পরিমপের ভিত্তিতে পৃথিবীর সবথেকে বুদ্ধিমান এই ব্যক্তি জন্মেছিলেন আমেরিকার বস্টনে, ১৮৮৯ সালে। তাঁর নাম উইলিয়াম জেমস সাইডিস। ছোট থেকেই তিনি ছিলেন বিস্ময় বালক।
০৪১৮
আইনস্টাইনের আইকিউ ছিল ১৬০, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ১৮০, নিউটনের ১৯০। এঁরা সবাই বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তি। কিন্তু জেমসের আইকিউ এঁদের থেকেও বেশি, ২৬০! যদিও তাঁর ব্যাপারে জানেন এমন লোক হাতে গোনা।
০৫১৮
ইউক্রেন থেকে শরণার্থী হিসাবে আমেরিকায় এসেছিলেন তাঁর বাবা-মা। তাঁর বাবা বরিস ছিলেন এক জন মনোবিদ, মা সারা ছিলেন চিকিৎসক। তাই বুদ্ধিমত্তা ছিল তাঁর রক্তে।
০৬১৮
জেমসের বয়স যখন ১৮ মাস তখন থেকেই তিনি ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইস’ সংবাদপত্র গড় গড় করে পড়ে ফেলতেন।
০৭১৮
শুধু তাই নয়। ছোট বয়সেই একাধিক ভাষা নিজে থেকেই শিখে ফেলেছিলেন তিনি। তাঁর বয়স যখন ছিল আট বছর, তখন তিনি ইংরাজি, ল্যাটিন, ফরাসি, জার্মান, রাশিয়ান, হিব্রু, তুর্কিশ ও আর্মেনিয়ান ভাষা আয়ত্ত করে ফেলেছিলেন।
০৮১৮
ছোট থেকেই তাঁর এ হেন বুদ্ধিমত্তা দেখে তাঁর বাবা মাত্র ১১ বছর বয়সে তাঁকে ভর্তি করে দেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি হলেন হার্ভার্ডের ইতিহাসে সব থেকে কম বয়সে ভর্তি হওয়া ছাত্র।
০৯১৮
হার্ভার্ডে ভর্তি হয়েই চমক দেখাতে শুরু করেন জেমস। অল্প দিনের মধ্যেই অঙ্কে তাঁর মুন্সিয়ানা বুঝতে পারেন সেখানকার শিক্ষকরা। ওই বয়সেই বিভিন্ন বিষয়ে লেকচার দিতেন তিনি। তার পরই তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সবাই তাঁকে বিস্ময় বালক হিসাবে চিহ্নিত করেন।
১০১৮
১৬ বছর বয়সেই আর্টসে স্নাতক কোর্স সম্পূর্ণ করেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই কলেজে সমস্যা শুরু হয়। এক দল ছাত্র নিয়মিত ভাবে তাঁকে নির্যাতন করতে থাকে। সে জন্য কলেজ ছেড়ে তিনি টেক্সাসের রাইস ইনস্টিটিউটে অঙ্কের শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন।
১১১৮
সেখানকার অধিকাংশ ছাত্র তাঁর থেকে বড় হওয়ায় তাঁকে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। এই সময়কালের মধ্যেই ছদ্মনামে একাধিক বই লিখেছিলেন তিনি।
১২১৮
একটু বড় হতেই তাঁর জীবনে পরিবর্তন আসে। লোকজন ছেড়ে তিনি একাকী জীবনযাপন করতেই বেশি ভালবাসতেন। সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়ে না করার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়ে দেন তিনি।
১৩১৮
১৯১৯-এ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় বস্টনে যুদ্ধ বিরোধী প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সে জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দেশদ্রোহী আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করে পুলিশ। এ জন্য ১৮ মাস জেলে থাকতে হয়েছিল তাঁকে।
১৪১৮
বড় হতেই লোকের নজর ও খ্যাতি-যশ থেকে দূরে থাকতে চাইতেন তিনি। কিন্তু তাঁর বাবা তা চাইতেন না। তিনি চাইতেন ছেলে অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ ঘটাক দিনে দিনে। কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না জেমস।
১৫১৮
বড় হতেই লোকের নজর ও খ্যাতি-যশ থেকে দূরে থাকতে চাইতেন তিনি। কিন্তু তাঁর বাবা তা চাইতেন না। তিনি চাইতেন ছেলে অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ ঘটাক দিনে দিনে। কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না জেমস।
১৬১৮
এই পরিমাণ আইকিউ নিয়েও গবেষণার পথে হাঁটেননি তিনি। সামান্য ক্লার্কের কাজ করে জীবন যাপন করতেন তিনি। তাঁর এই জীবনযাত্রাকে ব্যঙ্গ করে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
১৭১৮
এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ করে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু আদালত তাঁর আবেদন মানেনি। আদালত বলেছিল, যে ব্যাক্তি এক বার পাবলিক ফিগার, সে সারাজীবন পাবলিক ফিগার।
১৮১৮
আবেদনে হেরে হতাশ হয়ে যান তিনি। তার পর আর বেশি দিন বাঁচেননি তিনি। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে, ১৯৪৪-এ মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর বুদ্ধিমত্তার এই কাহিনি চলে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে।