(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন (উপরে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার সভায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এই হামলার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। সেই সঙ্গে ‘বন্ধু’ ট্রাম্পের দ্রুত সুস্থতাও কামনা করেছেন তিনি।
শুধু মোদী নন, ট্রাম্পের উপর হামলার ঘটনায় হিংসার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে আমেরিকা। শাসকদল থেকে শুরু করে বিরোধী, সকল নেতারাই এই ধরনের হামলার বিরোধিতা করেছেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তাঁর দেশে এই হিংসার কোনও জায়গা নেই। সরব হয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ বুশেরাও।
রবিবার সকালে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মোদী লিখেছেন, ‘‘আমার বন্ধু আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর হামলার ঘটনায় আমি গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করছি। গণতন্ত্র এবং রাজনীতিতে হিংসার কোনও জায়গা নেই। ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের জন্য, যাঁরা জখম হয়েছেন তাঁদের জন্য এবং সর্বোপরি আমেরিকার মানুষের জন্য আমার সমবেদনা রইল।’’ ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই পোস্ট শেয়ার করেছেন।
সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর হত্যার চেষ্টায় আমি গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। এই ধরনের আচরণের কড়া দমন প্রয়োজন। ওঁর দ্রুত এবং সম্পূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি।’’
I am deeply concerned by the assassination attempt on former US President Donald Trump.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) July 14, 2024
Such acts must be condemned in the strongest possible terms.
Wishing him a swift and complete recovery.
ট্রাম্পের উপর হামলার নিন্দা করে পোস্ট করেছেন বাইডেনও। তিনি লিখেছেন, ‘‘পেনসিলভেনিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সভায় হামলার বিষয়ে আমি শুনেছি। উনি সুস্থ এবং নিরাপদ আছেন শুনে আমি কৃতজ্ঞ। আমি ওঁর জন্য, ওঁর পরিবারের জন্য এবং সভায় উপস্থিত সকলের জন্য প্রার্থনা করছি। ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্য জানার জন্য অপেক্ষা করছি। ট্রাম্পকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য সিক্রেট সার্ভিসের উপর আমি এবং জিল (জিল বাইডেন, আমেরিকার ফার্স্ট লেডি) কৃতজ্ঞ। আমেরিকায় এই ধরনের হিংসার কোনও জায়গা নেই। আমাদের একজোট হয়ে এর বিরোধিতা করা উচিত।’’ বাইডেনের এই পোস্ট শেয়ার করেছেন ফার্স্ট লেডিও।
আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এক্সে লিখেছেন, ‘‘ট্রাম্পের উপর হামলার খবর শুনলাম। উনি গুরুতর জখম হননি শুনে আমি আশ্বস্ত হয়েছি। আমরা ওঁর জন্য, ওঁর পরিবারের জন্য এবং সভাস্থলে উপস্থিত যাঁরা এই অর্থহীন হামলার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করছি। আমেরিকার সিক্রেট সার্ভিস, সমস্ত নিরাপত্তারক্ষী এবং স্থানীয় উদ্ধারকারীদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশে এই ধরনের হিংসার কোনও জায়গা নেই। আমাদের একজোট হয়ে এই হিংসার বিরোধিতা করতে হবে এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর কোনও নতুন হিংসা যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লিখেছেন, ‘‘আমাদের গণতন্ত্রে রাজনৈতিক হিংসার কোনও জায়গা নেই। ঠিক কী ঘটেছে, আমরা এখনও স্পষ্ট করে জানি না। তবে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে গুরুতর ভাবে জখম হননি, তা জেনে আমাদের আশ্বস্ত হওয়া উচিত। নাগরিক হিসাবে আমাদের রাজনীতিকে আরও সম্মান জানানো উচিত। মিশেল (ওবামার স্ত্রী) এবং আমি ট্রাম্পের দ্রুত সুস্থ কামনা করছি।’’
প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ লিখেছেন, ‘‘ট্রাম্পের উপর এই কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা করছি। তিনি সুস্থ আছেন শুনে আমরা আশ্বস্ত। তৎপরতার জন্য সিক্রেট সার্ভিসের সকল আধিকারিকের প্রশংসা প্রাপ্য।’’
ট্রাম্পের উপর হামলা নিয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্পও। তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘‘আমার বাবা এবং পেনসিলভেনিয়ার ঘটনায় আহত অন্যদের জন্য আপনাদের এই ভালবাসা এবং প্রার্থনার জন্য ধন্যবাদ। সিক্রেট সার্ভিস এবং প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকের তৎপরতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের জন্য আমার প্রার্থনা রইল।’’ এই পোস্টের সঙ্গেই বাবার উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন ইভাঙ্কা। এক লাইনে লিখেছেন, ‘‘তোমাকে ভালবাসি, বাবা।’’
উল্লেখ্য, শনিবার পেনসিলভেনিয়ায় ট্রাম্পের সভা চলাকালীন এক বন্দুকবাজ গুলি চালান। গুলি ট্রাম্পের কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে। ভাষণ দিতে দিতে আচমকা কানে হাত দিয়ে মঞ্চে বসে পড়েন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। পর পর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। মুহূর্তে শুরু হয় হুড়োহুড়ি। ট্রাম্পকে উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁর কান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। পরে ট্রাম্প নিজে জানিয়েছেন, তাঁর ডান কানের উপরের চামড়া চিরে বেরিয়ে গিয়েছে গুলি। তবে তিনি সুস্থ আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy