ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিশ সাল শেষের আগেই করোনাভাইরাসের ‘বিষ দাঁত’ ভাঙা হবে, কিছুটা এই সুরেই ফের হুঙ্কার ছাড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত কাল রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মনোনীত হওয়ার পরে মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘‘আমেরিকার জিনিয়াস বিজ্ঞানীরা রেকর্ড সময়ে প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলবে। এ বছর শেষ হওয়ার আগেই নিরাপদ ও কার্যকরী ভ্যাকসিন হাতে পাব আমরা। আর তার পর ধ্বংস হবে ভাইরাস।’’
বিশ্বে আড়াই কোটির কাছাকাছি সংক্রমণ। মৃতের সংখ্যা ৮ লক্ষ ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। ৬০ লাখের উপরে করোনা-সংক্রমণ শুধু আমেরিকাতেই। মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে টলমল ট্রাম্পের আসন। সামনেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। পরিস্থিতি সামলাতে শাসক দলের ‘ব্যর্থতাই’ বিরোধীদের অন্যতম এজেন্ডা। এ অবস্থায় ভোট-মঞ্চ থেকে ট্রাম্পের ভ্যাকসিন নিয়ে বার্তা কতটা সত্যি, আর কতটা রাজনৈতিক, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তা ছাড়া, ট্রাম্প যতই বিজ্ঞানীদের মহান বলুন না কেন, তাঁদের কোনও পরামর্শই মানছেন না। গত কাল রিপাবলিকান ভোট-মঞ্চে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প যখন বলছেন, ‘‘বিজ্ঞান, বাস্তব ও তথ্য, এই তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখে আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়ছি,’’ তখনও তাঁর মুখে মাস্ক নেই। মঞ্চের সামনে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্পের অন্তত দেড় হাজার সমর্থক। দলনেতার মতো তাঁদেরও বেশির ভাগের মুখে মাস্ক নেই। তাঁরা গায়ে-গা ঘেঁষে বসেছেন। ট্রাম্পের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছেন, হুইসল দিয়েছেন। কোথায় তখন ‘সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং’! এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ, হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষস্থানীয় কর্তা বললেন, ‘‘ও নিয়ে আর কী করা যাবে। সবাই এক-এক করে সংক্রমিত হবেন!’’
সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষা অনুযায়ী, অতিমারি পরিস্থিতি সামলাতে সরকারি ভূমিকায় সব চেয়ে অখুশি আমেরিকা ও ব্রিটেনের বাসিন্দারা। এক সময়ে ট্রাম্পের মতোই বেপরোয়া মনোভাব দেখিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে নিজে আক্রান্ত হওয়ার পরে অনেকটাই সচেতন হয়েছেন তিনি। ব্রিটেনে সংক্রমিতের সংখ্যার তুলনায় মৃত্যু বেশি। অর্থাৎ মৃত্যুহার বেশি। মৃত্যু-তালিকায় পাঁচে রয়েছে তারা, ভারতের ঠিক পরেই। এ পর্যন্ত ৪১,৪৭৭ জন মারা গিয়েছেন ব্রিটেনে।
ইউরোপে সব চেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানি। কিন্তু তাতেও নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। তাঁর সাবধানবাণী— ‘‘আরও কঠিন সময় আসছে। ভ্যাকসিন না এলে, কোনও কিছুই আর আগের মতো হবে না। এ ভাবেই আরও অনেকগুলো দিন কাটাতে হবে। এর মধ্যেই বাঁচিয়ে রাখতে হবে অর্থনীতিকে।’’ ভ্যাকসিন নিয়ে ট্রাম্প আশ্বাস দিলেও, মার্কিন প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম ‘মডার্না’ মুখ খোলেনি। রাশিয়া ও চিনের প্রতিষেধক নিয়ে সন্দিহান গোটা বিশ্ব। অক্সফোর্ড নীরবেই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। আপাতত আশার বাণী শোনাচ্ছে না বিজ্ঞানীমহলের কেউই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy