Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

উধাও সাজ, চর্চা নয়া হিলারিকে নিয়ে

ফল প্রকাশের দিন সমর্থকদের সামনে আসতে চাননি তিনি। তাঁর প্রচার ম্যানেজারকে দিয়ে শুধু বলে পাঠিয়েছিলেন, পরের দিন কথা বলবেন। ৯ তারিখ নিউ ইয়র্কের হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন।

বিধ্বস্ত হিলারি। ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠানে।— এ পি

বিধ্বস্ত হিলারি। ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠানে।— এ পি

ওয়াশিংটন
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪০
Share: Save:

ফল প্রকাশের দিন সমর্থকদের সামনে আসতে চাননি তিনি। তাঁর প্রচার ম্যানেজারকে দিয়ে শুধু বলে পাঠিয়েছিলেন, পরের দিন কথা বলবেন। ৯ তারিখ নিউ ইয়র্কের হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন। পোশাক, চুলের স্টাইল ফিটফাট। কিন্তু চোখ দু’টো কেমন যেন বসা। মুখে হাসি ছিল লাগাতার। কিন্তু তাতেও যেন প্রাণের ছোঁয়া পাননি তাঁর অতি বড় ভক্তও।

এক সপ্তাহ বাদে, আবার প্রকাশ্যে এলেন তিনি। ওয়াশিংটনের এক অনুষ্ঠানে। তাতে স্পষ্টই দেখা গেল, মাত্র কয়েকটা দিনে বয়সটা যেন এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। অনুজ্জ্বল নীল পোশাক। চুল এলোমেলো, সেই অতি পরিচিত স্টাইল গায়েব। গয়না বলতে কানে একটা বড় দুল। চোখের তলা ফোলা ফোলা। অনেক কান্নাকাটি করলে যেমনটা হয়। চারপাশে ফিশফাশ তখনই শুরু হয়েছিল। বলাবলি হচ্ছিল, হলটা কী প্রাক্তন ফার্স্ট লেডির?

হিলারি রডহ্যাম ক্লিন্টন কিন্তু কাল নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিলেন, এই অনুষ্ঠানে আসতে তাঁর এতটুকু ইচ্ছে করছিল না। এক সময় মনে হয়েছিল বাতিল করে দেবেন অনুষ্ঠানটা। কিন্তু শেষমেশ নিজের মনকে বুঝিয়ে রাজি হন তিনি। ‘চিলড্রেনস ডিফেন্স ফান্ডস গালা নাইট’-এ মন খুলে কাল কথা বলেছেন হিলারি। জানিয়েছেন গত একটা সপ্তাহ কতটা অসহায় ভাবে কেটেছে তাঁর। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয়ের পর তাঁর উপর দিয়ে কতটা ঝড় বয়ে গিয়েছে, সে কথা সরাসরি বলেননি প্রাক্তন মার্কিন বিদেশ সচিব। কিন্তু কালকের বক্তৃতায় পরতে পরতে বুঝিয়ে দিয়েছেন এই হারের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। ৬৯ বছরের ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী বলেছেন, ‘‘আমার স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, এটা আমার পক্ষে সহজ ছিল না। গোটা সপ্তাহ ধরে বারবার মনে হয়েছিল বাড়ি থেকে আর বেরোবোই না আমি। হয়তো একটা বই নিয়েই কাটিয়ে দেব। বা বাড়ির কুকুরের সঙ্গে সময় কাটাবো। কিন্তু তার পর মনে জোর এনে বাইরে বেরোনোর সিদ্ধান্ত নিলাম।’’ তাঁর পরাজয়ে দল যে কতটা বিমর্ষ তা-ও ভাল ভাবেই বুঝছেন হিলারি। বলেছেন, ‘‘জানি আপনারা কতটা হতাশ। আমিও। এ ভাবে সব কিছু হয়ে যাবে, ভাবতেও পারিনি। তবে দেশের উপর ভরসা রাখুন। মূল্যবোধের জন্য লড়ুন। আর কখনও, কোনও দিন হেরে যাবেন না।’’

এর পরই সরাসরি নিজের মায়ের প্রসঙ্গে চলে যান তিনি। স্মৃতি মেদুরতা কাটিয়ে অবশ্য মিনিট খানেক পরেই ফিরে আসেন স্বমহিমায়। দু’মাস বাদেই প্রেসিডেন্টের গদিতে রিপাবলিকান মুখ। আর সেই সময় কী ভাবে ডেমোক্র্যাটরা দৃঢ় থেকে দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারবেন সেই প্রসঙ্গে খানিক ক্ষণ কথা বলেন হিলারি। বলেন, ‘‘আমাদের এখন ভাল করে কাজ করতে হবে। আমাদের সন্তান, আমাদের পরিবারের জন্য। প্রতিটি কর্মীকে বলব, কাজে লেগে থাকতে। আমেরিকার আপনাদের সকলকে দরকার। আপনাদের পরিশ্রম, প্রতিভা, শক্তি দিয়েই তো গড়া সম্ভব হবে দেশের নতুন ভবিষ্যৎ।’’

তবে হিলারির কালকের বক্তৃতা নিয়ে যত না আলোচনা হচ্ছে, তার থেকে ঢের বেশি কথা হচ্ছে তাঁর সাজ-পোশাক নিয়ে। নির্বাচনের আগে প্রচার সভার হিলারি আর কাল ওয়াশিংটনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখা হিলারির মধ্যে যে আকাশ-পাতাল তফাত, তা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে গোটা দেশ। সেই ঝলমলে রঙিন স্যুট-প্যান্ট, চোখে-মুখে মেকআপ আর টানটান চুলের স্টাইল—এক ধাক্কায় সব উধাও। প্রাক নির্বাচনী সভাগুলোর সেই ঝকঝকে হাসিটাও নেই। কালচে নীল পোশাক আর এলোমেলো চুলের হিলারিকে তাই কাল চিনতে বেশ অসুবিধেই হয়েছে দেশবাসীর।

অন্য বিষয়গুলি:

Hillary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE